প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩, ০৫:৫০ পিএম
ভবিষ্যতে পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে একটি গ্রহাণু, যার ফলে ঘটতে পারে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মহাকাশে এমন একটি গ্রহাণুর সন্ধান পেয়েছে। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘বেন্নু’।
‘বেন্নু’ ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে নাসা। বেন্নু খুবই অন্ধকার গ্রহাণু। কার্বনসমৃদ্ধ গ্রহাণুটির খোঁজ মিলেছিল ১৯৯৯ সালে। এর নামকরণ করা হয় মিশরীয় পুরাণের এক কাল্পনিক পাখির নাম অনুযায়ী। পুরাণ অনুসারে, সূর্য, সৃষ্টি এবং পুনর্জন্মের সঙ্গে ‘বেন্নু’ পাখির সংযোগ রয়েছে।
নাসার বরাতে বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেন্নুর উচ্চতা নিউ ইয়র্কের ৩৮১ মিটার উঁচু এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের চেয়েও বেশি, এবং প্রশস্ত ৫১০ মিটার। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় সাত মাইল বেগে এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে। তেমনটি ঘটলে ১ হাজার ৪০০ মেগাটন শক্তি নিঃসৃত হবে। যা পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত মানুষের দ্বারা তৈরি সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমা ‘জার বোম্বার’ চেয়েও ২৪ গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম।
বিজ্ঞানীদের ভবিষ্যদ্বাণী মতে, ২১৮২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে এটি আঘাত করতে পারে। সৌভাগ্যক্রমে, বেন্নুর পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা খুবই কম। ২০২১ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, পৃথিবীর সঙ্গে এর সংঘর্ষ না হবার সম্ভাবনা ৯৯.৯৬ শতাংশ।
তবুও নাসা বেন্নু নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহী। এটি সম্পর্কে জানার জন্য দীর্ঘ মিশন চালু করে। উৎক্ষেপণের সাত বছর পর রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নাসার মহাকাশ ক্যাপসুল ‘ওসিরিস-রেক্স’ নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। এতে ছিল গ্রহাণু থেকে সংগ্রহ করা ২৫০ গ্রাম নমুনা।
অবতরণের পর নাসার জনসন মহাকাশ কেন্দ্রে পাঠানো হয় বেন্নু গ্রহাণু থেকে সংগৃহীত নমুনাটি। যেখানে দুই বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে এটি। গবেষণায় জানা যেতে পারে সৌরজগৎ সৃষ্টির রহস্য। গবেষণায় অংশগ্রহণ করবেন দুই শতাধিক বিজ্ঞানী ও ৩৫টির বেশি প্রতিষ্ঠান।
ধ্বংসাত্মক আশঙ্কার বাইরেও বেন্নুতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েই নাসা বেশি আগ্রহী। নাসার অনুমান, প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে বেন্নু এবং আমাদের গ্রহ পৃথিবী সম্ভবত একই সময়ে তৈরি হয়েছিলো।
সেই সময়ে যা ঘটেছিল তার চিহ্নগুলি লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ক্ষয়ের ফলে পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। কিন্তু বেন্নু হয়তো সেই উপাদানগুলো আজও বহন করে চলেছে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/