প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০২৪, ০৯:১৩ এএম
বাংলাদেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের একটা মনস্তাত্ত্বিক লড়াই চলছে অনেক দিন ধরে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কে সেরা, এই লড়াই। দুই বছর আগে হলে এ ক্ষেত্রে ভালোভাবেই এগিয়ে রাখা যেত বাংলাদেশকে। এখন বোধহয় সে জায়গা নেই। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলা হলে অনেকাংশে আফগানিস্তান এগিয়ে থাকবে। আরব আমিরাতে খেলা হলে তো কথাই নেই। হাশমতউল্লাহ শাহিদিদের দ্বিতীয় বাড়ি মরুর এ দেশ। শারজাহতে ভালো ক্রিকেট খেলেছে তারা। বিশেষ করে, সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে। সেদিক থেকে দেখলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক আফগানরাই ফেভারিট। তবে ওয়ানডে খেলা হওয়ায় পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ।
এই সিরিজে আফগানিস্তানকে স্বাগতিক বলা হচ্ছে এ কারণে, বাংলাদেশকে আতিথেয়তা দিচ্ছে তারা। স্বাভাবিকভাবেই উভয় দল চাইবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে। একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে– দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে দুমড়েমুচড়ে ঘুরে দাঁড়াতে জানে বাংলাদেশ। ক্রিকেট পরাশক্তিদের যেখানে হারানোর রেকর্ড আছে, সেখানে আফগানদের হারাতে কঠিন হওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশ আমিরাতে গেছেই মরূদ্যানে জয়ের ফুল ফোটাতে। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ধর্মশালায় আফগানিস্তানকে হারিয়েই মিশন শুরু করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। যদিও বিশ্বকাপ ভালো যায়নি টাইগারদের। বরং আফগানরা হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও বড় বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশ্বকাপ-পরবর্তীকালে আয়ারল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। আমিরাতের এ ভেন্যুতে বাংলাদেশ শেষ ওয়ানডে খেলেছিল ১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপে। তবে তিনটি টি২০ খেলেছে ২০২১ সালের বিশ্বকাপ ও ২০২২ সালের এশিয়া কাপে। শেষটিতে আবার আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে সাত উইকেটে।
আফগানিস্তানের হোম ভেন্যু নেই। তারা নিরপেক্ষ ভেন্যু ভারত ও আমিরাতে হোম সিরিজ খেলে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশকে তারা প্রথম আতিথেয়তা দেয় টি২০ সিরিজে ভারতের দেরাদুনে। ওয়ানডেতে এবারই প্রথম। এই সংস্করণ আবার বাংলাদেশের খুব প্রিয়। বিশ্বের যে কোনো কন্ডিশনে ভালোও করে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে খারাপ খেলার দিক থেকে অতীত রেকর্ড ছাপিয়ে গেলেও নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো খেলার স্মৃতি রয়েছে। গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার বড় রান করেছেন। এ বছর মার্চে দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও সিরিজ জয়ের আশায় ঘরবসতি করতেই পারে শান্ত বাহিনী। বাংলাদেশ পুরোনো দল নিয়ে খেললেও আফগানিস্তান দলে বেশ কিছু পরিবর্তন আছে। ইব্রাহিম জাদরানের জায়গায় সাদিকুল্লাহ সুযোগ পেয়েছেন। ইমার্জিং এশিয়া কাপে ঝোড়ো তিন ফিফটিতে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। চোটাক্রান্ত মুজিবুর রহমানের জায়গায় যাঁকে নেওয়া হয়েছে, সেই বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বা চায়না ম্যান নূর আহমেদ সিপিএলে ২২ উইকেট নিয়ে আলোচনায়। অফ স্পিনার গজলফার নিজ দেশে পরিচিতি পেয়ে গেছেন জুনিয়র মুজিব হিসেবে। সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা সিরিজ দেখা যেতে পারে মরূদ্যানে।