প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
কানপুর টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানান সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশি অলরাউন্ডার জানিয়েছিলেন, খেলতে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লাল বলের ক্রিকেটে শেষবার দেখা যাবে তাঁকে। দেশের মাটিতে অবসরের ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন সাকিব।
সেই থেকে আলোচনায়, সাকিবের ইচ্ছে পূরণ হবে কিনা। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সাকিবকে নিয়ে শঙ্কাটা তৈরি হয়েছিল। তবে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে সাকিবের দেশে আসতে কোনো বাধা দেখছেন না তিনি।
আজ রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, ‘একজন ক্রিকেটার খেলবেন, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁর আসার ক্ষেত্রে আমি কোনো বাধা দেখি না।’
সম্প্রতি সাকিবের বিরুদ্ধে মিরপুর স্টেডিয়ামের দেয়ালে বেশ কিছু লেখা দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছেন। তাঁদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে আসিফ বলেছেন, ‘তবে যেটা দেয়াল লিখনে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি দেখেছি, এটা আসলে ইমোশনের বিষয়। তাঁদের ওই অধিকারটা আছে। গণতান্ত্রিক দেশ, সাংবিধানিক অধিকার, যে কোনো ধরনের মুভমেন্ট বা যে কোনো কিছু করার। তবে এক্ষেত্রে আমার বক্তব্য থাকবে, কারো নিরাপত্তা যাতে হুমকির মুখে না পড়ে।’
ক্রীড়া উপদেষ্টা যোগ করেন, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো থাকার কথা না। আমি যতটুকু জানি। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না। ’
এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদেরও কথা হয়েছে। আসিফ নজরুল (আইন উপদেষ্টা) স্যার ইতোমধ্যে বলেছেন, সংশ্লিষ্টতা না পেলে প্রাথমিক তদন্তে যে মামলা হয়েছে, ওখান থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে।’
আগামী সপ্তাহে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। মিরপুরে ২১ অক্টোবর শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। সাকিবের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘যেহেতু এখানে দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে। সেক্ষেত্রে আমাদের পরিবেশ ভালো রাখতে হবে। না হয়ে বাইরের দেশগুলো দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগবে।’
সাকিবের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’
সাকিবকে নিয়ে অনেকের মনে জমে থাকা ক্ষোভ প্রসঙ্গে ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি যে ইমোশনের জায়গাটা অবশ্যই আছে। যেহেতু বড় একটা আন্দোলন হয়েছে এবং সাকিবের আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যেটা উনি ক্লিয়ারেন্স দিয়েছেন উনার (ফেসবুক) পোস্টে। তারপরও কিছু ইমোশন রয়ে গেছে। যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক ওই প্রশ্নে যাব না। সেটা অন্য বিতর্ক। ’
আসিফ মাহমুদ যোগ করেন, ‘বাংলাদেশে এত বড় একটা অভ্যুত্থান হয়েছে। এরপর আসলে যেটা হয়, বিভিন্ন দেশে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে মানুষ আইনের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল জায়গাটা ধরে রেখেছে। আমরা ওই ধরনের পরিস্থিতির দিকে আসলে এত বেশি যাই নাই। সবাই প্রত্যাশাও করছিল খুব বাজে অবস্থা হবে।’