প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৪, ১১:৫৯ এএম
লাতিন আমেরিকার ফুটবল মানে ছন্দের সৌন্দর্য্য। তবে সেটা ভুল প্রমাণিত করলো উরুগুয়ে ও ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচজুড়ে চললো শরীরী ভাষার লড়াই, রেফারিকে তটস্থ থাকতে হলো সর্বক্ষণ, হলুদ কার্ড-লাল কার্ডের মহড়া চললো। সব ছাপিয়ে জয় হলো উরুগুয়ের। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে সেমি-ফাইনালে পৌছে গেল মার্সেলো বিয়েলসার দল।
পেনাল্টিতে উরুগুয়ের হয়ে প্রথম শটেই লক্ষ্যভেদ করেন ফেদে ভালভার্দে। ব্রাজিলের হয়ে মিস করেন এডার মিলিতাও। দ্বিতীয় শটে উরুগুয়ে ও ব্রাজিল দুই দলই জাল খুঁজে নেয়। তৃতীয় শটে উরুগুয়ে গোল করলেও মিস করে ব্রাজিল। চতুর্থ শটে গোল পেলেই উরুগুয়ের জয় নিশ্চিত, এমন সমীকরণে মিস করে বসেন জোসে গিমেনেজ। তবে পরের শটে গোল করেই উল্লাসে মেতে ওঠে কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ চ্যাম্পিয়নরা।
আজ রোববার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। উরুগুয়ের ৪০ শতাংশের বিপরীতে ব্রাজিল বল পেয়েছে ৬০ শতাংশ। উরুগুয়ে ১২টি শট নিয়ে ১টি লক্ষ্যে রাখতে পারে, ব্রাজিল ৭ শটের ৩টি লক্ষ্যে রাখলেও গোলের দেখা পায়নি।
প্রথমার্ধের শুরু থেকেই দুই দল বল দখলের লড়াইয়ের চেয়ে শারিরীক শক্তির লড়াই দেখাতেই যেন মনোযোগী ছিল। তাতে ১৩ মিনিটেই ৫টি ফাউল দেখতে হয়েছে দর্শকদের। এর মধ্যে ম্যাচের প্রথম আক্রমণটা করে ব্রাজিল। তবে রাফিনিয়ার বাম পায়ের শট বক্সের বাইরে বাধা পায়। এরপর অষ্টাদশ মিনিটে পরপর দুটি আক্রমণ শাণায় উরুগুয়ে।
ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে মোক্ষম একটু সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল, তবে কাজে লাগাতে পারেননি রাফিনিয়া। লুকাস পাকোতা হেড দিয়ে পাস বাড়িয়েছিলেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের দিকে। বল পেয়েই চিতার গতিতে ছুট দেন রাফিনিয়া। বক্সে গিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে চিপ শট নিয়েছিলেন। তবে এক হাতে তাকে হতাশ করেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরও একটি মিস করেন রাফিনিয়া। ফলে ব্রাজিলের সুযোগ থাকলেও এগিয়ে যাওয়া হয়নি। তাতে প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পরই দলে একটা পরিবর্তন আনেন উরুগুয়ে কোচ বিয়েলসা। মাতিয়াস ভিনার জায়গায় সেবাস্তিয়ান কেকারেসকে নামান তিনি। এর খানিক বাদেই হলুদ কার্ড দেখেন ম্যানুয়েল উগার্তে। হাতে বল স্পর্শ করায় তাকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
৫৩তম মিনিটে গোল পেতে পারতো উরুগুয়ে। ফেদে ভালভার্দের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল ঘুরিয়ে দেন কেকারেস। তবে তার শট রুখে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকার। ৪৭তম মিনিটে আরেকটি মিস করেন আরাউহো। ৬০তম মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন উরুগুয়ের নিকোলাস দে লা ক্রুজ।
দুই দলই দ্বিতীয়ার্ধে বল দখলের চেয়ে শরীরী ভাষা প্রয়োগেই যেন বেশি মনোযোগী হয়। তাতে উরুগুয়ের দুই হলুদ কার্ডের বিপরীতে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাজিলের জোয়াও গোমেজও। ৬৮তম মিনিটে লুকাস পাকোতার শট ঠেকিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক।
উরুগুয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় ৭৪তম মিনিটে। বল নিয়ে রাফিনিয়া এগোচ্ছিলেন দ্রুতগতিতে। তাকে ঠেকাতে গিয়ে কড়া ট্যাকল করে বসেন নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে সংশয়ে থাকা রেফারি সহায়তা চান ভিএআর-এর। তাতে ধরা পড়ে নান্দেজের কড়া ট্যাকল। দেরি না করে লাল কার্ড দেখিয়ে তাকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন রেফারি।
৮৪ মিনিটে এনড্রিকের শট রুখে দলকে আরেকবার রক্ষা করেন উরুগুয়ের প্রহরী। ৮৭ মিনিটে আক্রমণ করেছিলেন ভালভার্দে। তবে বাধা পায় সেটাও। বাকি সময়েও একই ধারায় খেলে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্যই থাকে দুই দল। যোগ করা সময়েও একই অবস্থা থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।