প্রকাশিত: মে ১, ২০২৪, ০২:৪৩ পিএম
আজ বুধবার (১ মে) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রাথমিক দল আইসিসির কাছে পাঠানোর শেষ দিন। বেশ কয়েকটি দল ইতিমধ্যে বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক দল বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। তবে তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। দলে কারা থাকছেন তা মোটামুটি অনুমিত হলেও বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের দলে থাকা-না থাকা নিয়ে কৌতূহল আছে সমর্থকদের।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ শুরুর আগে যে প্রস্তুতি ক্যাম্প করা হয়েছে তার জন্য ১৭ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। সে সময় জানানো হয়েছিল, এই দল থেকেই তি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল তৈরি করা হবে। সেই ক্যাম্পের দলে সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান না থাকলেও জানানো হয়েছিল, জিম্বাবুয়ে সিরিজেই তারা দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। অর্থ্যাৎ জিম্বাবুয়ে সিরিজের দল থেকেই মূলত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বাছাই করা হবে।
১ মের মধ্যে আইসিসির কাছে ১৫ সদস্যের দল জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এই দলে পরিবর্তন আনা যাবে ২৫ মে পর্যন্ত। সেই পরিবর্তন আনতেও বোর্ডগুলোকে আইসিসির অনুমতির দরকার পড়বে না। সুতরাং পারফরম্যান্স বা অন্য কারণে প্রয়োজন পড়লে এই সময়সীমার মধ্যে দলে পরিবর্তনের সুযোগ থাকছে।
সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় বিসিবি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে তাই রাখা হয়েছে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন তিনি। এবারের বিপিএলে ফরচুন বরিশালকে চ্যাম্পিয়ন বানাতে ভালো ভূমিকা রেখেছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলেও তার নাম থাকছে বলে শোনা যাচ্ছে। জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করলে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত ১৫ জনের দলেও তার স্থান থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাইফউদ্দিনের মতো তানজিদ তামিমকেও ১৫ জনের প্রাথমিক দলে দেখছেন প্রায় সকলেই। জাতীয় দলের হয়ে এখনও টি-টোয়েন্টি অভিষেক না হলেও বিপিএলে দারুণ ব্যাটিং করেছেন এই বাঁহাতি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের স্কোয়াডে সৌম্য সরকার না থাকায় একাদশে তানজিদ তামিমের স্থান নিশ্চিত বলা চলে। ভালো কিছু করলে বিশ্বকাপের বহরে তার নামটাও থাকবে বলে আশা করা যায়। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো করলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন পারভেজ হোসেন ইমন। তবে ইমনের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার চেয়ে রিজার্ভ দলে থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের প্রাথমিক তো বটেই চূড়ান্ত স্কোয়াডেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামটা যে থাকছে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। দল থেকে বাদ পড়ার পর যেভাবে ফিরে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে পারফর্ম করেছেন, তাতে তাকে বাদ দেয়ার দুঃসাহস করবেন না নির্বাচকরা। সবশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজেও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩১ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রিয়াদ।
পেস বিপ্লবের পর বাংলাদেশ দলে এখন মানসম্মত বেশ কয়েকজন পেসার। তাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান যে স্কোয়াডে থাকছেন তা বলাই যায়। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে থাকছেন সাইফউদ্দিনও। স্কোয়াডে তাই খুব বেশি হলে আরেকজন পেসার জায়গা পেতে পারেন। চতুর্থ পেসার হতে লড়াইটা মূলত হাসান মাসুদ ও তানজিম হাসান সাকিবের মধ্যে। প্রস্তুতি ক্যাম্পের ১৭ জনের তালিকায় দুজনই থাকলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম তিন টি-টোয়েন্টির দলে নেই হাসান মাহমুদ। সুযোগটা তাই তানজিম সাকিবেরই বেশি। তবে সাইফউদ্দিন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকায় হয়ত তিনজন জেনুইন পেসার নেবে বাংলাদেশ। সে হিসেবে তানজিম সাকিব থাকতে পারেন রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশন অপেক্ষাকৃত স্পিনবান্ধব হওয়ায় স্কোয়াডে তিন স্পিনার থাকার সম্ভাবনাই বেশি। মেহেদী হাসান মিরাজ বিবেচনার বাইরে চলে যাওয়ায় শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন ও তানভীর ইসলামই থাকার কথা স্কোয়াডে। তবে সাকিব আল হাসান যেহেতু বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকছেন, সে বিবেচনায় একজন স্পিনার কম নিতেও পারেন নির্বাচকরা। সে ক্ষেত্রে তানভীরের কপাল পোড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
শ্রীলঙ্কা সিরিজে কাঁধে আঘাত পেয়ে ছিটকে যান সৌম্য সরকার। এখন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ফলে বিশ্বকাপের প্রাথমিক স্কোয়াডে তার থাকাটা প্রায় নিশ্চিত হলেও চূড়ান্ত স্কোয়াডে তাকে নিয়ে শঙ্কা থাকছেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের দলে নেই তিনি। ফিট হয়ে পরের দুই ম্যাচে ফিরতে পারেন দলে। সেই দুই ম্যাচে তার পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য বিশ্বকাপ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, সাইফউদ্দিন, শেখ মাহেদী, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও তানভীর ইসলাম ।
রিজার্ভ: পারভেজ ইমন, তানজিম সাকিব, আফিফ হোসেন।