প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৩, ০৩:২৪ এএম
অবশেষে বিশ্বকাপে ক্রিকেটে হারের সীমানা থেকে বের হতে পারলো পাকিস্তান। টানা চার ম্যাচ হারের পর বাংলাদেশকে হারিয়ে আবার জয়ের ট্রাকে ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ইডেন গার্ডেনসে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দিবারাত্রির ম্যাচে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ৭ উইকেটে হারিয়েছে। সব উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের করা ২০৪ রানের জবাবে পাকিস্তান ৩২.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয়।
এ জয়ের ফলে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা টিকে থাকলো। যদিও সে পথ খুবই বন্ধুর, তবে সঠিক ট্রাকে থাকলো তারা। সাত ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ছয়। পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান পাঁচে। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ নবম স্থানে।
পাকিস্তানের এ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ ওয়াসিম, ফখর জামান ও আব্দুল্লাহ শফিক। দুই বোলার আফ্রিদি ও ওয়াসিম তিনটি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা নষ্ট করে দেন। শুরুতেই আফ্রিদির জোড়া আঘাতে বাংলাদেশ ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল।
অন্যদিকে ব্যর্থতার কারণে বাদ পড়া ফখর জামান আজ সুদে আসলে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। আব্দুল্লাহ শফিকের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ১২৮ রান করেন। মূলত এই জুটিই বাংলাদেশের সামনে থাকা সব সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দেন। শফিক ৬৯ বলে ৬৮ রান করেন। ৯টি বাউন্ডারির পাশাপাশি দুটো ওভার বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে।
অন্যদিকে ফখর জামান তার স্বভাবসিদ্ধ ব্যাটিং করেছেন। একের পর এক বল সীমানার বাইরে পাঠিয়েছেন। বেশির ভাগ অবশ্য বাতাসে ভাসিয়ে। ৮১ রান করেছেন তিনি ৭৪ বলে। মাত্র তিনটি বাউন্ডারি তার ইনিংসে। আর ওভার বাউন্ডারির সংখ্যা সাতটি।
এদিকে বাবর আজম আবার সেই ব্যর্থতায়। টানা দুই হাফ সেঞ্চুরির পর আজ মাত্র ৯ রানে আউট হয়েছেন। তবে ২১ বলে ২৬ রান করে মোহাম্মর রিজওয়ান দলকে জয় এনে দেন।
পাকিস্তানের হারানো তিনটি উইকেটই দখল করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ব্যাট হাতে আজ তার সংগ্রহ ৩০ বলে ২৫ রান।
এর আগে বিশ্বকাপের নিজেদের সপ্তম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। শাহিন শাহ আফ্রিদির জোড়া আঘাতে শুরুতে দুই উইকেট হারায় টাইগাররা। ওপেনার তানজীদ হাসান রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন। পাঁচ বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। শাহিন আফ্রিদির বলে এলবিডব্লিউ হন এ ওপেনার।
শাহিন আফ্রিদি পরের ওভারে আবার আঘাত হানেন। ওসামা মীরের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন নাজমুল হাসান শান্তকে। মাত্র ৪ রান সংগ্রহ তার। আগের ওভারে ইফতিখারকে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন তিনি।
তৃতীয় জুটিতে উইকেটে আসা মুশফিকুর রহিমও দাঁড়াতে পারেননি। ফলে মাত্র ২৩ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অবশেষে ব্যাটিং পজেশন পরিবর্তন করে মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে আসেন। তার দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয় এড়ায়। লিটন দাসের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তারা বাংলাদেশকে ৭৯ রান এনে দেন। ৪৫ রানে আউট হন লিটন।
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি বেধে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৭০ বলে ৫৬ রান করে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হন তিনি। ছয় বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে মাহমুদউল্লাহ এ ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
এদিকে অবশেষে রানের দেখা পেয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৪৩ রান করেছেন। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অধিনায়কের এটাই সর্বোচ্চ রান। শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ঝড়ো ব্যাটিং (৩০ বলে ২৫ রান) বাংলাদেশের সংগ্রহকে দুইশ রান পার করতে সহায়তা করে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন