প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩, ০৫:৪৩ পিএম
আফগানদের দাপটের সঙ্গে গুঁড়িয়ে ভারতে চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। যেখানে মেহেদী হাসান মিরাজ দেখিয়েছেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান পালন করেছেন দারুণ অধিনায়কত্ব পাশাপাশি বল হাতে সামনে থেকে আফগানদের উইকেটে হামলা চালিয়েছেন। সেসব নিয়ে তো ম্যাচের পর থেকেই আলাপ-আলোচনা চলছে।
তবে এই ম্যাচে যে আরো এক ক্রিকেটার বড় ভূমিকা রেখেছে জয় পেতে। তা অনেকেরই নজর এড়িয়ে গিয়েছে। আর তিনি হচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বর্তমানে তাকে টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপের খুঁটি বললেও ভুল হবে না। গতকাল আফগানদের বিপক্ষে দলীয় ২৭ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর মিরাজের সঙ্গে ৯৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। মিরাজ ৫৭ করে ফিরলে ভাঙে এ জুটি তবে এ ম্যাচের শেষ অবদি উইকেটে টিকে ছিলেন শান্ত। এসময় ৮৩ বলে ৭১.০৮ স্ট্রাইক রেটে খেলেন ৫৯ রানের এক হার না মানা ইনিংস।
চলতি বছরটা যেন শান্তরই। এ বছরই যেন টাইগার ভক্তরা নতুন করে চিনেছেন এই ব্যাটারকে। তাই তো প্রথম বারের মতো ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে নেমে তরুণসাজে ব্যাট করতে দেখা গেছে তাকে। এর আগে বছরের শুরুতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) থেকে শুরু। ব্যাট যেন আর থামছেই না তার। এখন পর্যন্ত এই বছর তিনি খেলেছেন ১৬টি ওয়ানডে ম্যাচ যার মধ্যে ব্যাট করতে নেমেছেন ১৫টিতে। এর মধ্যে খেলেছেন ছয়টি অর্ধশত ও দুইটি শত রানের ইনিংস।
শুধু তাই নয়, যখন ব্যাটাররা উইকেটে এসে প্রতিপক্ষ বোলারদের দাপটে উইকেটে থিতু হতে পারে না সেইরকম ইনিংসেও তিনি ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে গেছেন। এমন যদি একটি ইনিংসের কথা বলতেই হয় তাহলে সবশেষ এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা ম্যাচটিকেই উদাহরণ স্বরূপ সামনে আনা যায়। আর ভরসার ব্যাপার হচ্ছে তার খেলা সবশেষ চার ম্যাচের চারটিতেই তিনি ব্যাট হাতে ছিলেন ধারাবাহিক।
তবে ঠিক এক বছর আগে এমনটি ছিলেন না এই বাহাতি ব্যাটার। শুধু তাই নয় ২০১৮ সালে লাল-সবুজদের জার্সি জড়িয়ে মাঠে নামার পর চলতি শুরুর আগ অবদিও এমন ব্যাটিং ছন্দে ছিলেন না তিনি। সেসময় তাকে দলে দেখলে ভক্তরা খোঁচা মেরে বেশ কটু কথাও লিখতেন। তার নামের আগে তো ‘লর্ড’ শব্দটিও জুড়ে দিয়েছিলেন সেসময় কিছু সমর্থক। আর তাকে স্কোয়াডে রাখার কারণে টাইগার নির্বাচকদের তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধুয়েই দেওয়া হত। বেশি আগে নয় গেল বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হুট করে যখন টাইগার স্কোয়াডে যুক্ত করা হয় শান্তকে সেময়ই তো কত আলোচনা হয় এই প্রসঙ্গটি নিয়ে। যদিও শেষ অবদি সেই আসরে দলের সর্বোচ্চ সংগ্রাহক ছিলেন তিনি।
পুরোনো কথা বাদ দেওয়া যাক। এখন শান্তকে ছাড়া বাংলাদেশ দল কল্পনাও করতে পারে না কেউ। আর তার একটাই কারণ ব্যাট হাতে ধারাবাহী ছন্দে রয়েছেন তিনি। সব থেকে মজার বিষয় হলো দলের তরুণ কিংবা অভিজ্ঞ সব ক্রিকেটারের সঙ্গেই তার দারুণ বোঝাপড়া রয়েছে।
তবে এসব কিছুকে ছাড়িয়ে নজরে এসেছে অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে শান্তর বন্ধুত্বের বিষয়টি। সেই অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে সঙ্গে খেলছেন তারা। বয়ভিত্তিক দল পেরিয়ে এখন জাতীয় দলেও সতীর্থ। আর সবশেষ আফগানদের বিপক্ষে খেলা দুই ম্যাচে (এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ) টাইগারদের জয়ের নায়কও এই দুই বন্ধু। বর্তমানে তারা দুই জন যে রকম ছন্দে রয়েছেন তা যদি গোটা বিশ্বকাপে ধারাবাহিক রাখতে পারেন তাহলে যে বাংলাদেশ অসাধ্য সাধন করেই ভারত হতে ফিরতে পারে সে রকম স্বপ্ন বুনলেও দোষের কিছু হবে না।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/