প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩, ০৫:৩৭ এএম
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় সংগ্রহ পায়নি ভারত। অল্প পুঁজি নিয়েও বোলিং নৈপুণ্যে থামিয়েছে লঙ্কানদের। ৪১ রানের জয় নিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। দুনিথ ওয়েল্লাগে ও চারিথ আশালঙ্কার দাপুটে বোলিংয়ে রীতিমত বিধ্বস্ত হয় ভারত। বৃষ্টির হানায় ম্যাচ কিছু সময় বন্ধ থাকলেও শেষ অবধি ৪৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান করে রোহিত শর্মার দল। জবাবে নেমে ৪১.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭২ রানে থামে শ্রীলঙ্কা।
২১৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটে নেমে ২৫ রানেই তিন ব্যাটারকে হারায় শ্রীলঙ্কা। দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ না করেই ফেরেন পাথুম নিশাঙ্কা (৭ বলে ৬) ও দিমুথ করুণারত্নে (১৮ বলে ২)। কুশল মেন্ডিস ফেরেন ১৬ বলে ১৫ রান করে।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আশালঙ্কা। ৪৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৭.৩ ওভারে দলীয় ৬৮ রানে কূলদ্বীপ যাদবের শিকার হন সাদিরা। ৩১ বলে ১৭ রান করে ফেরেন তিনি।
১৯.২ ওভারে দলীয় ৭৩ রানে ফেরেন আশালঙ্কা। ৩৫ বলে ২২ রান করে কূলদ্বীপের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ২৫.১ ওভারে দলীয় ৯৯ রানে দাসুন শানাকাকে ফেরান রবীন্দ্র জাদেজা। ১৩ বলে ৯ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক।
৯৯ রানে ৬ ব্যাটারকে হারানোর পর ৭ম উইকেট জুটিতে হাল ধরেন ধনাঞ্জয়া ডে সিলভা ও দুনিথ ওয়েল্লাগে। জয়ের আশাও দেখান লঙ্কানদের। ৩৭.৩ ওভারে সে আশায় আঘাত হানেন জাদেজা। ৬৩ রানের জুটি গড়ে দলীয় ১৬২ রানে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ধনাঞ্জয়া ডে সিলভা। ৬৬ বলে ৪১ রান করেন।
৪১তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৭১ রানে অষ্টম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হয়ে ফেরেন মাহেশ থিকসানা। ১৪ বলে ২ রান করেন। পরের ওভারে কাসুন রাজিথা ও পাথিরানাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ইনিংসে ইতি টানেন কূলদ্বীপ। দুনিথ ওয়েল্লাগে অপরাজিত ছিলেন ৪৬ বলে ৪২ রান করে।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন কূলদ্বীপ যাদব। জাসপ্রীত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ ও হার্দিক পান্ডিয়া নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাটে নেমে শুভমন গিল ও রোহিত শর্মা দুর্দান্ত শুরু করেন। ১১.১ ওভারে দলীয় ৮০ ভাঙে প্রথম উইকেট জুটি। দুনিথ ওয়েল্লাগের বলে ফেরেন গিল। ২৫ বলে ১৯ রান করেন গিল। ১৩.৫ ওভারে দলীয় ৯০ রানে বিরাট কোহলিকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান ওয়েল্লাগে। বিরাট ফেরেন ১২ বলে ৩ রান করে। ১৫.১ ওভারে তৃতীয় আঘাত হানেন লঙ্কান স্পিনার। ফিফটি করা রোহিতকে ফেরান দলীয় ৯১ রানে। ৪৮ বলে ৫৩ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে হাল ধরেন লোকেশ রাহুল ও ঈশান কিষাণ। ৬৩ রানের জুটি গড়ে ৩০তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৫৪ রানে ওয়েল্লাগের চতুর্থ শিকার হন লোকেশ রাহুল। ৪৪ বলে ৩৯ রান করেন পাকিস্তান ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ব্যাটার। ৩৪.২ ওভারে দলীয় ১৭০ রানে চারিথ আশালঙ্কার বলে ওয়েল্লাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কিষাণ। ৬১ বলে ৩৩ রান করেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
পরের ওভারেই ওয়েল্লাগের পঞ্চম শিকার হন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৮ বলে ৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার। ৩৮.৫ ওভারে দলীয় ১৭৮ রানে রবীন্দ্র জাদেজাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান আশালঙ্কা। জাদেজা ফেরেন ১৯ বলে ৪ রান করে। ৪৩তম ওভারে দলীয় ১৮৬ রানে পরপর দুই বলে জাসপ্রীত বুমরাহ ও কূলদ্বীপ যাদবকে ফেরান আশালঙ্কা। ১২ বলে ৫ রান করেছিলেন বুমরাহ, রানের খাতা খুলতে পারেননি কূলদ্বীপ।
শেষ উইকেট জুটিতে ৪৭তম ওভার ব্যাট করার পর বৃষ্টি হানা দেয় মাঠে। আর তাতেই থেমে যায় লড়াই। বৃষ্টি নামার আগে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৯ উইকেটে ১৯৭ রান। এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর খেলা শুরু হয়। ব্যাটে নেমে মোহাম্মদ সিরাজকে নিয়ে ২০০ রান পার করেন অক্ষর প্যাটেল।
৪৯.১ ওভারে লং-অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাদিরা সামারাবিক্রমার হাতে ক্যাচ দিয়ে মাহেশ থিকসানার শিকার হন অক্ষর। ৩৬ বলে ২৬ রান করেন তিনি।
লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন দুনিথ ওয়েল্লাগে। চারিথ আশালঙ্কা নিয়েছেন চারটি। এছাড়া মাহেশ থিকসানা নেন এক উইকেট।