প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩, ০৪:৩৩ এএম
সমীকরণ ছাড়াই এশিয়া কাপে সুপার ফোরে পা রেখেছিল বাংলাদেশ। সুপার ফোরের শুরুটা অবশ্য রাঙাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে বিবর্ণ টিম টাইগার্স। হেরেছে ৭ উইকেটে।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নেয় টিম টাইগার্স। টপঅর্ডারদের ব্যর্থতার পর দলকে লড়াইয়ে ফেরান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। পরে ১৯৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। জবাবে নেমে ৩৯.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে পাকিস্তান।
১৯৪ রানের লক্ষ্যে নেমে পাকিস্তানের দুই ওপেনার দেখেশুনে মোকাবেলা করছিলেন টাইগার বোলারদের। রান তুলছিলেন চাপমুক্ত থেকে। ৯.১ ওভারে ৩৫ রানে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনআপে প্রথম আঘাত হানেন শরীফুল ইসলাম। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ফেরান ফখর জামানকে। ৩১ বলে ২০ রান করে যান এ ওপেনার।
ইমাম উল হকের সঙ্গে জুটি গড়েন বাবর আজম। দুবার দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে ইমামকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন হাসান মাহমুদ। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। বল আউট সাইড লেগে ড্রপ করায় রিভিউ হারায় সাকিব আল হাসানের দল।
১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফের ইমামকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তাসকিন। আম্পায়ার এবারও সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। আগেরবারের মতো বল আউট সাইড লেগে ড্রপ করায় দুটি রিভিউ হারায় টিম টাইগার্স।
১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে সাফল্যের দেখা পান তাসকিন। বোল্ড করে ফেরান বাবর আজমকে। ২২ বলে ১৭ রান করেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
১৯তম ওভারে বলে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসে নিজের প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ইমাম উল হককে। আম্পায়ার এবার সাড়া দেন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান পাকিস্তান ওপেনার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে দেড়শো পার করেন ইমাম ও রিজওয়ান। ৩২.৫ ওভারে ইমামকে বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। ৮৪ বলে ৭৮ রান করেন পাকিস্তান ওপেনার।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে আগা সালমানকে নিয়ে দলকে জয়ের নোঙরে পৌঁছান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৭৯ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান, আগা সালমান ২১ বলে ১২ রান।
বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, শরীফুল ও মিরাজ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটে নেমে শুরুতে ১০ ওভারের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। একে একে সাজঘরে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ (০), লিটন দাস (১৬), নাঈম শেখ (২০), তাওহিদ হৃদয় (২)।
আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা মিরাজ মুখোমুখি প্রথম বলে আউট হন। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার ইঙ্গিত ছিল লিটন দাসের ব্যাটে। নাসিম শাহকে তিন বাউন্ডারি মেরে বাংলাদেশের দর্শকের উচ্ছ্বাসে ভাসান এশিয়া কাপে নিজের প্রথম ম্যাচে।
শুরুতে মিরাজের উইকেট হারানোর ক্ষতিও পোষাতে থাকেন। বাড়তে থাকে রানরেট। শাহীন শাহ আফ্রিদির করা অফস্টাম্পের বাইরের একটি বল সুইং করে আরও বেরিয়ে যাওয়ার মুখে খোঁচা মেরে লিটন আউট হন কিপারের হাতে ক্যাচে।
ইনিংসের অষ্টম ওভার ও নিজের প্রথম ওভারে সফলতা পান হারিস রউফ। তুলে নেন নাঈমের উইকেট। বাঁহাতি ওপেনার ২৫ বলে চারটি চারে করেন ২০ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে পান আরেকটি সফলতা। বোল্ড করেন তাওহিদ হৃদয়কে। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
২৮তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৪তম ফিফটির দেখা পান সাকিব। ২৯তম ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে মুশফিকের সঙ্গে শতরানের জুটি পূর্ণ করেন। একদিনের ক্রিকেটে সাকিব-মুশফিকের সপ্তমবারের মতো শতরানের জুটি এটি।
পরের ওভারে বলে আসেন ফাহিম আশরাফ। শর্ট লেন্থের বলে ডিপ স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ফখর জামানের হাতে। ভেঙে যায় ১২০ বলে ১০০ রানে সাকিব-মুশির জুটি। ৫৭ বলে সাত চারের মারে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন সাকিব।
সাকিব ফেরার দুই বল পর ক্যারিয়ারের ৪৬তম ফিফটির দেখা পান মুশফিক। ৭১ বলে চারটি চারের মারে ফিফটি পূর্ণ করেন টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
সাতে নেমে আশার আলো ফোটাচ্ছিলেন শামীম। ৩৪.৪ ওভারে ইফতিখারের ফাঁদে পা দেন টাইগার অলরাউন্ডার। উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা দেন ইমাম-উল-হকের হাতে। ২৩ বলে ১৬ রান করে যান শামীম।
৩৭.২ ওভারে দলীয় ১৯০ রানে হারিস রউফের বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ হয়ে ফেরেন মুশফিক। ৮৭ বলে ৬৪ রান করে। পরে ১৯৩ রানে তাসকিন, আফিফ ও শরীফুলের উইকেট হারিয়ে ৩৮.৪ ওভারে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
পাকিস্তানের হয়ে ৬ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন হারিস রউফ। ৫.৪ ওভারে ৩৪ রান খরচায় শাহিন শাহ আফ্রিদি নেন ৩ উইকেট।