প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৩, ০৩:৫৪ এএম
ইমার্জিং এশিয়া কাপ ক্রিকেটে শিরোপা অক্ষুন্ন রাখলো পাকিস্তান। ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে হারিয়ে শিরোপা জেতা পাকিস্তান এবার হারিয়েছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে। রোববার শ্রীলঙ্কার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় পাকিস্তান ১২৮ রানে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। একই সঙ্গে গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারের প্রতিশোধও নিয়েছে। টস হেরে ৮ উইকেটে পাকিস্তানের করা ৩৫২ রানের জবাবে ভারত ৪০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান করে।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তান দলের ব্যাটাররা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। তবে ফাইনাল ম্যাচে সেই ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের ব্যাটাররা নিজেদের মেলে ধরলেন। আর তাতেই কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের চারদিকে চার ছয়ের ফুলঝুড়ি ছুটলো। শুধু তাই নয়, টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ দলীয় রানেরও রেকর্ড গড়লো পাকিস্তান। ভারতের বোলারদের তুলোধুনো করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান করেছে পাকিস্তান।
অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। তাদের মধ্যে সবার আগে আসে তায়েব তাহিরের নাম। টুর্নামেন্টে অনেক দলের ব্যাটাররা সেঞ্চুরি পেলেও পাকিস্তানের কোনো ব্যাটারের নামের পাশে তিন অংকের যাদুকরী রান ছিল না। তাহির এ ম্যাচে সেই সেঞ্চুরি করেছেন। ৭১ বলে ১০৮ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে বড় রান সংগ্রহে সহায়তা করেছেন।
তাহিরের আগে অবশ্য প্রথম উইকেট জুটি সায়েম আইয়ুব ও সাহেবদাজা ফারহান নির্ভরতার সঙ্গে ব্যাটিং করে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন। টস জয়ের পর প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানানো যে ভুল হয়েছে তা একটু একটু করে টের পান ভারত অধিনায়ক। প্রথম উইকেট জুটিতে তারা ১২১ রান করেন। ৫১ বলে ৫৯ রান করেন সায়েম। আর সাহেবজাদা ৬২ বলে ৬৫ রান করেন। দুর্ভাগ্য সাহেবজাদার। রান আউট হন তিনি। নিজের ব্যাটিংয়ে রান নিতে গিয়ে আবার ক্রিজে ফিরতে চেষ্টা করেন। কিন্তু পড়ে যাওয়ায় ক্রিজে ফিরতে পারেননি। রান আউটে ফিরে যান তিনি।
ওয়ান ডাউনে উমাইর ইউসুফও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। ৩৫ বলে ৩৫ রান করেন। তবে মাঝে একটা ছোট্ট ঝড় বয়ে যায় পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনে। ১৮৩ থেকে ১৮৭ রান করতে তারা তিনটি উইকেট হারায়। আর তখনই তায়েব তাহিল ও মুবাসির খান ষষ্ঠ উইকেটে দলকে দারুণ এক জুটি এনে দেন। ১২৬ রানের পার্টনারশিপ তাদের। তায়েব ১০৮ রান করেছেন ৭১ বলে। এক ডজন বাউন্ডারির পাশাপাশি চারবার তিনি বাতাসে ভাসিয়ে বলকে সীমানার বাইরে ফেলেছেন। পাকিস্তানের ব্যাটাররা মোট ১৩টি ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন। শেষ দিকে মেহরান মমতাজ ও মোহাম্মদ ওয়াসিমও দলের সংগ্রহে যথেষ্ঠ অবদান রেখেছেন। মমতাজ ১০ বলে ১৩ ও ওয়াসিম ১০ বলে ১৭ রান করেন।
ব্যাটারদের চমৎকার ব্যাটিংয়ের পর বাকি কাজটা সেরেছে পাকিস্তান বোলাররা। তাদের দাপটে ভারতের ওপেনিং জুটি ছাড়া আর কোনো ভালো জুটি গড়ে ওঠেনি। অথচ বিশাল রান তাড়ায় একাধিক ভালো জুটির বিকল্প ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে সাই সুদর্শন ও অভিষেক শর্মা ৬৪ রান করেন। আরশাদ ইকবাল এ জুটি ভাঙ্গেন। তার বলে সুদর্শন উইকেটরক্ষকের হাতে পড়েন। মূলত এ জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তৃতীয় উইকেট জুটি কিছুটা আশা দেখিয়েছিল ভারতকে। এ সময় যশ ধুলের সঙ্গে অভিষেক শর্মার ৫২ রানের জুটি হয়। মূলত এ জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আর কোনো জুটি দাঁড়ায়নি। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। বড় রানে হেরেছে ভারত।
পাকিস্তানের সফল বোলার ছিলেন সুফিয়ান মুকিম। ১০ ওভারে ৬৬ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি।