প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৩, ১২:১৮ এএম
কলাবাগান বাস স্টপেজের পাশেই দাঁড়িয়ে ল্যাব এইড আইকনিক ভবন। এই ভবনের চতুর্থ তলা বছরখানেক আগেও ছিল কর্পোরেট অফিসের কর্মকর্তাদের ব্যস্ততায় মুখর। কিন্তু সেই অফিসকেই চমৎকার একটি টেবিল টেনিস ক্লাব তৈরি করেছে ল্যাব এইড গ্রুপ। এলাকার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রদের জন্য নির্বিঘ্নে টেবিল টেনিস খেলার সুযোগ করে দেওয়াই প্রধান উদ্দেশ্য। এছাড়া চাকরীজীবি ও ব্যবসায়ীরাও নিয়মিত এই টেবিল টেনিস ক্লাবে খেলতে আসেন। ক্লাবের সদস্যদের অংশগ্রহণে প্রতি মাসে আয়োজন করা হয় টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টের। ফিউচারস স্পোর্টিং নামের এই ক্লাবটি এবার সবচেয়ে বড় পরিসরে আয়োজন করেছে দুই দিন ব্যাপী টেবিল টেনিস টুর্নামেন্ট।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে হয়ে গেল শাওন স্ম্যাশ আপ টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধন। প্রতিযোগিতা শেষ হবে কাল শনিবার। প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে-শাওন স্ট্রোম, ধানমন্ডি টিটি ক্লাব, ফিউচারস স্পোর্টিং ক্লাব, উত্তরা টিটি একাডেমি, মিরপুর টিটি একাডেমি, শাওন এভারগ্রিন, মোহাম্মদ আলী ফাইটার্স, এলিটস টিটি ক্লাব, ব্রেইনক্রাফট টিটি ক্লাব, আসাদ টিটি দল, টিম ডার্ক হর্স, লালবাগ লিওপার্ডস। টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন শাওন গ্রুপের পরিচালক ফরহাদ শরীফ।
এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় ও পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মানস চৌধুরী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় রিফাত মাহমুদ সাব্বির, মাসুদ রানা পরাগ, ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন মুফরাদুল খায়ের হামজা, সাবেক জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন ফয়সাল হিমেল খান, জাতীয় দলের সাবেক সিনিয়র খেলোয়াড় রিপন খান, জাতীয় জুনিয়র দলের খেলোয়াড় যুবায়ের আহমেদসহ অনেকে।
খেলা হবে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে দলগুলো। প্রতি গ্রুপের সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া চারটি দল উঠবে সেমিফাইনালে। টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি ১ লাখ টাকা। ট্রফির পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৫০ হাজার টাকা। রানার্স আপ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া সেমিফাইনালিস্ট দুই দলকে দেওয়া হবে ১০ হাজার করে টাকা।
এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ উল হক কাজল, ব্যারিস্টার খালেদ সিদ্দিকী, ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মইনুজ্জামান পিলা, পাঁচ বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সোনাম সুলতানা সোমা।
জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন জাভেদ আহমেদ এই টুর্নামেন্টের সমন্বয়ক। ফেডারেশনের বাইরে ব্যক্তিপর্যায়ে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করতে পেরে উচ্ছ্বসিত জাভেদ। বর্তমানে ফিউচারস স্পোর্টিং ক্লাবের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। জাভেদ বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টের প্রথম ও একমাত্র লক্ষ্য হলো সব জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে এক ছাদের নিচে একত্রিত করা। দ্বিতীয়ত, টেবিল টেনিসকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যক্তি উদ্যোগে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি আমরা। আমাদের এই ক্লাবের ৩০ জন খেলোয়াড় বর্তমানে অনুশীলন করছে। এরা ভবিষ্যতের তারকা খেলোয়াড় হবে। এরই মধ্যে স্কুল টুর্নামেন্টে ভালো ফল করেছে অনেকে। এমন টুর্নামেন্ট নিয়মিত আয়োজন করলে এখান থেকে অনেক ভালো খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে বলে আশা রয়েছে আমাদের।
টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান শাওন গ্রুপের পরিচালক ফরহাদ শরীফের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সব সময়ই আমরা তাকে টেবিল টেনিসের প্রয়োজনে পাশে পেয়ে থাকি। তাকে অনেক ধন্যবাদ। টেবিল টেনিসকে আরও উঁচু পর্যায়ে তুলে ধরতে তিনি আমাদের নিয়মিত নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন।’
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে মানস চৌধুরী বলেন, ‘বিগত এত বছরে বেসরকারি উদ্যোগে এমন বড় টুর্নামেন্টে আমি কখনোই অংশগ্রহণ করিনি। সেই হিসেবে এটা আমাদের জন্য অনেক বড় মাপের টুর্নামেন্ট। জাতীয় দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় এখানে অংশ নিচ্ছে। আমি নিজেও উৎসাহিত হয়েছি এখানে খেলতে। এমন উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাই ফিউচারস স্পোর্টিং ক্লাবকে।’