প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৩, ০৭:১১ পিএম
ঈদ বরাবরই সবার জীবনে বাড়তি আনন্দ আর প্রশান্তি নিয়ে আসে। এর ব্যাতিক্রম নন আম্পায়াররাও। তবে এখানে ছোট একটা `কিন্তু` আছে। কারণ অনেক সময়ই পেশাগত কারণে ঈদের সময়টা পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট বা সিরিজ কভার করতে গিয়ে অনেক সময়ই দেশের বাইরে ঈদ করতে হয়েছে মাসুদুর রহমান মুকুলকে। এই আম্পায়ারের এমনসব ব্যাতিক্রমী ঈদের গল্প থাকছে সাকিব শাওনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে।
ঈদে স্মরণীয় মুহূর্ত নিয়ে মুকুল বলেন, `আসলে ছোট বেলার সব ঈদই স্মরণীয়। নতুন জামা লুকিয়ে রাখা, পরিবারে সবার সাথে বাবা ভাইকে নিয়ে নামায পড়তে যাওয়া ঈদগাহ মাঠে। তারপর সেই সালামি সংগ্রহ করা। রিক্সাভাড়া করে তারপর পেপসি বা ফান্টার বোতল নিয়ে ঘুরে বেড়ানো। সে এক অন্যতম মুহূর্ত।`
দেশের বাইরে যখন পেশাগত কারণে ঈদ করতে হয় পরিবার ছাড়া তখন আসলে কেমন মনে হয় এমন প্রশ্নে মুকুলের উত্তর, `অবশ্যই অনেক মিস করি। পরিবারকে মিস করি, বন্ধু-বান্ধবকে মিস করি। কারণ দেখেন খেলোয়াড়রা যখন বাইরে খেলতে যায় তখন ২০-২২ জনের একটা টিম থাকে তারা একসাথে ঈদ করতে পারে। মজা করতে পারে, ঘুরতে পারে। আমরা যখন যাই তখন দেখা যায় একেক দেশের একেক জন আম্পায়ার আসছে, হিন্দু মুসলিম কেউবা ক্রিশ্চান। সো আমাদের ঈদটা আসলে খুবই একাকীত্ব ভাবে কাটাতে হয়। সেখানে ঈদের নামাজটা পড়ে তারপর পরিবারের সাথে ফোনেই ভিডিও কলের মাধ্যমে সময় কাটাই। যারা আমাদের এই প্রফেশনে আছে তাদের জন্য বাইরে ঈদ করাটা খুবই কষ্টকর।`
দেশের বাইরে করা ঈদ এবং দেশে করা ঈদের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে মুকুল বলছিলেন, `আগেই বললাম, আমরা বাইরে যখন ঈদ করি একাই কাটাতে হয়। আমাদের তখন স্মার্ট ফোনই একমাত্র ভরসা। পরিবারের সাথে ফোনেই সময় কাটাই। আর যখন দেশে ঈদ করি তখন দায়িত্বটা বেশি থাকে। সবাইকে সময় দিই, এবার যেমন সবাইকে নিয়ে কাটাচ্ছি। সকালে নামায পড়ে এসে কুরবানি করা। এরপর আম্মাকে সালাম করে কবরস্থানে যাওয়া ভাই বোনের কবর জিয়ারত করি। তারপর বাসায় এসে সন্ধ্যার পর বের হয়। এভাবেই সময় কাটায়, সবাই যখন নতুন কাপড় পরে, তখন একটু স্মৃতিকাতর হয়ে যায়। ৩০ বছর আগের কথা চিন্তা করি তখন, এভাবেই ঈদ কাটাতাম।`
মানুষ যত বড় হয় ঈদের আনন্দ নাকি ততই হারিয়ে যেতে থাকে, আপনার কাছেও কি তাই? এমন প্রশ্নে মুকুলের জবাব, `আসলে ঈদটা হারিয়ে যায় না। একটা সময় যখন ছোট ছিলাম তখন ঈদের আনন্দ ছিল একরকম, এখন এই বয়সে এসে ঈদের আনন্দটা অন্যরকম। একটা সময় নিজে আনন্দ করেছি, এখন সবার আনন্দ দেখি। যেহেতু দায়িত্ব বেড়ে গেছে পরিবারকে নিয়ে। ঈদের আনন্দ আসলে কখনো কমে যায় না, তবে এটা ঠিক ছোটবেলায় ফরিদপুরে ঈদ করেছি। মফস্বলে যে মজাটা সেটা গেলে এখনো পাই। তবে ঢাকার ঈদে সেই আমেজটা পায় না আমি। যার জন্য চেষ্টা করি প্রতি ঈদেই নিজ শহরে ফিরে যেতে, সবার সাথে সময় কাটাতে। তবে ঈদের আনন্দ শেষ হবে না কখনো।`
বিএস/