প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৩ সালে মালদ্বীপকে হারিয়ে বাংলাদেশ শিরোপা জেতে। এরপর মালদ্বীপকে সাফে হারাতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিশ বছর। দুই দশকের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশ দলের একমাত্র মেলবন্ধন হাসান আল মামুন। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক এখন জামালদের সহকারী কোচ।
খেলা ছেড়েছেন প্রায় বছর সাতেকের বেশি সময়। ক্লাব কোচিংয়ের পর এখন জাতীয় দলের সহকারী কোচ। সাফে এসে নিজেকে এখনও খেলোয়াড়ই মনে হয় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের,‘জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ হিসেবে আমি বেশ কিছু টুর্নামেন্টে কাজ করেছি। তবে সাফটা ভিন্ন। এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মনে হয়েছে আমি নিজেই যেন খেলছি। সাফ আমার কাছে ভিন্ন কিছু’-ব্যাঙ্গালোর থেকে সকালে বলছিলেন।
গতকাল মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশ তিন বার গোল করেছে। তিন গোলই হাসান আল মামুনের মধ্যে উচ্ছ্বাসটা দেখার মতো ছিল,‘অন্য সময়ের তুলনায় গতকাল আমার মধ্যে উচ্ছ্বাসটা বেশি কাজ করেছে। মনে হয় যেন ২০০৩ সালের সাফ খেলছি।’খেলোয়াড় ও কোচ উভয় ভূমিকায় মালদ্বীপকে হারানোর স্বাদ পেলেন হাসান আল মামুন। দুই জয়ের স্বাদে দুই রকম প্রতিক্রিয়া তার,‘সেই ম্যাচটি ছিল ঢাকায়। হাজার হাজার দর্শকের ফাইনাল ম্যাচ। আর এটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ভিন্ন পরিস্থিতিতে।’
২০০৩ সালের পর সাফে কয়েকবার মালদ্বীপের মুখোমুখি হলেও বাংলাদেশ জিততে পারেনি। বাংলাদেশ লেবাননের বিপক্ষে হেরে চাপেও ছিল। এরপর আবার মালদ্বীপ ম্যাচে লিডও নিয়েছিল। এরপরও খেলোয়াড়দের ওপর বিশ্বাস ছিল সহকারী কোচের, ‘মালদ্বীপ গোল পেলেও ম্যাচ আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আমরা তাদের খেলার সুযোগ দেইনি। শুরুতেই হাই প্রেসিং করেছি। ওদের দুর্বল জায়গা রক্ষণে আঘাত হেনেছি।’
মালদ্বীপ ম্যাচের আগে প্রধান কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার ব্রিফিংয়ের পর সামান্য কিছু সময় নিয়েছিলেন সহকারী কোচ হাসান আল মামুন। বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের ভিডিও দেখিয়ে অনুপ্রাণিত করে জামালদের বলেছিলেন, ‘আমরা জিতেছি, তোমরাও পারবে। তোমাদের মাধ্যমে সেই সক্ষমতা রয়েছে দরকার শুধু চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস।’ অগ্রজের অভয় বাণী পালন করেছেন অনুজরা।
হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার অধীনে প্রায় দেড় বছর বাংলাদেশ দল। সাফের এই দলটিই সেরা বলছেন তার সহকারী, ‘আমাদের এই দলটি বেশ সুসংগঠিত। অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের দারুণ সংমিশ্রণ।’ ২০০৫ সালের পর সাফে আর ফাইনাল খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। আবার ফাইনাল কি সম্ভব? জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক জামালদের নিয়ে এখানেই থামতে চান না, ‘এই দলটির সক্ষমতা রয়েছে। আমরা আশা করতেই পারি। যদিও এখনো আমাদের সেমিফাইনাল পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। ভুটান অন্য সময়ের চেয়ে যথেষ্ট ভয়ঙ্কর। আমরা ভুটানকে নিয়েই ভাবছি।’
হাসান আল মামুনের মতো দুই দশকের ব্যবধানে মালদ্বীপ বধ খুব কাছ থেকে দেখেছেন জাতীয় দলের টিম অ্যাটেনডেন্ট মোঃ মহসিন। খেলোয়াড়-কোচ আসা-যাওয়া করলেও মহসিন জাতীয় দলের নিত্যসঙ্গী। ২০০৩ সালে মালদ্বীপকে হারানোর পর উল্লাস যেমন দেখেছেন আবার মালদ্বীপের বিপক্ষে বিধ্বস্ত বাংলাদেশও দেখেছেন। আবার সাফে মালদ্বীপকে হারাতে পেরে তৃপ্ত মহসিনও, ‘খেলোয়াড়, কোচদের পাশাপাশি আমিও অনেক আনন্দ-বেদনার সাক্ষী। খুব ভালো লাগছে আবার সাফে মালদ্বীপকে হারাতে পেরেছি আমরা।’
বিএস/