প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম
লিওনেল মেসির দলবদল নিয়ে চলা রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের সমাপ্তি ঘটল অবশেষে। নিজের পরবর্তী গন্তব্য নিজের মুখেই জানিয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ইউরোপের শীর্ষ লিগ ছাড়ছেন মেসি। তবে সৌদি আরবের আল হিলাল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মিয়ামিতে দেখা যাবে তাকে।
শেষ হয়ে গেল বার্সেলোনার জার্সিতে মেসির প্রত্যাবর্তনের সকল সম্ভাবনা। সম্ভাবনা নেই সৌদি লিগে মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ দেখারও। বাংলাদেশ সময় বুধবার (৭ জুন) রাতেই জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এমএলএসের দল ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দেয়ার খবর জানিয়েছেন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম `এল মুন্দো` ও `মুন্দো দেপোর্তিভো`কে দেয়া সাক্ষাৎকারে। অথচ গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে যোগ দেয়াটা শুধু সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু সৌদির চোখ কপালে ওঠার মতো প্রস্তাব মেসির মনে ধরেনি। ইউরোপেও লোভনীয় প্রস্তাব থাকলেও বার্সায় ছাড়া আর কোথাও খেলার কথা মনে আসেনি। তাই ক্যারিয়ারের শেষবেলায় পরিবারকে আরও বেশি সময় দিতে ও চাপমুক্ত ফুটবল খেলতে যুক্তরাষ্ট্রকেই বেছে নিলেন তিনি।
ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে চুক্তির সব কাজ এখনো শেষ হয়নি। তাতে অবশ্য মেসির এই চুক্তি নিয়ে জল্পনাকল্পনা থেমে থাকছে না। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম `টিওয়াইসি স্পোর্টস` জানিয়েছে ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে তার চুক্তিটা তিন মৌসুমের। প্রথম দুই মৌসুম শেষে মেসি চাইলে চলে যেতে পারবেন, এই শর্তও থাকছে চুক্তিতে। মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টিও হবে দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে।
তবে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম `স্পোর্ত` দাবি করেছে, মেসিকে চার বছরের চুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। রেলেভোর দাবি অবশ্য দুই বছরের।
ইন্টার মিয়ামিতে মেসির বেতনের অংকটাও ঠিক জানা যায়নি। তবে স্পেনের গণমাধ্যমের দাবি, মৌসুমপ্রতি ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার পারিশ্রমিক পাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য খাত থেকেও আয়ের সুযোগ পাবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে এই চুক্তিতে থাকছে অ্যাপল ও অ্যাডিডাসও। এই দুই বিশ্বখ্যাত ব্রান্ড থেকেও আয় করবেন মেসি। এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমএলএস চুক্তিবদ্ধ। এই লিগের ম্যাচগুলো দেখা যায় অ্যাপল প্লাসে। নতুন যে সাবস্ক্রাইবাররা ম্যাচ দেখবে, সেখান থেকে আয়ের একটা অংশ মেসিকে দেয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে অ্যাপল ও এমএলএস। প্রায় ১০ বছরের জন্য আড়াই বিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে অ্যাপল ও এমএলএসের। গত মঙ্গলবার অ্যাপল জানায়, মেসির বিশ্বকাপজয় নিয়ে চার পর্বের একটি ডকুমেন্টরি সিরিজ দেখানো হবে অ্যাপল টিভি প্লাসে, যা সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে দেখা যাবে।
এদিকে জার্মানির ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস এমএলএসের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট স্পন্সর। এমএলএসের সঙ্গে জড়িত থেকে প্রতিষ্ঠানটি যে আয় করবে তার একটা অংশ মেসির সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চায় তারা। ১৯৯৬ সালে এমএলএসের যাত্রা শুরুর পর থেকেই টুর্নামেন্টটির সঙ্গে আছে অ্যাডিডাস। এ বছরের শুরুতে এমএলএসের সঙ্গে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৮৩ কোটি ডলারের চুক্তিও করেছে অ্যাডিডাস।
অ্যাথলেটিক আরও জানিয়েছে, খেলোয়াড়ি জীবন শেষে মেসি যেন এমএলএসের কোনো ক্লাবের অংশীদার হতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখা হবে চুক্তিতে। ইন্টার মিয়ামির অন্যতম মালিক হতে এই সুযোগই কাজে লাগিয়েছিলেন লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে খেলে যাওয়া ডেভিড বেকহ্যাম।
তবে মেসির সঙ্গে মিয়ামির চুক্তি যেহেতু এখনো সম্পন্ন হয়নি, তাই কোন খাত থেকে তিনি ঠিক কত আয় করবেন, তা এখনও নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়।
জেকেএস/