প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩, ০৫:৫৭ পিএম
জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি তখনো, ছিলেন রাডারে। আর ঠিক সেসময়ই আইসিসি অ্যান্টি-ডোপিং কোড লঙ্ঘনের দায়ে ১০ মাসের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশি পেসার শহিদুল ইসলাম। ২০২২ সালের ৪ মার্চ ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সিরিজের আগে আইসিসির ডোপিং পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে প্রস্রাবের নমুনা প্রদান করার পর, নিষিদ্ধ ড্রাগ পাওয়া যাওয়ায় ডোপ টেস্টে পজিটিভ হন। অবশ্য পরে জানা যায় অসাবধানতাবশত নিষিদ্ধ পদার্থটি গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
গেল ২৮ মার্চ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে জাতীয় দলের হয়ে একটিমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলা এই ক্রিকেটারের। সে সব দিনকে পেছনে ফেলে শহিদুল মাঠে ফিরেছেন চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) দিয়েই। যদিও টুর্নামেন্টের শুরুতে খেলার কথা ছিল অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে তবে পরবর্তীতে সুপার লিগ পর্বে খেলছেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে। ইতোমধ্যে খেলে ফেলেছেন দুই ম্যাচ। সিটি নিউজ ঢাকা সঙ্গে আলাপকালে নিষেধাজ্ঞার সেই দিনগুলো এবং ডিপিএলে ফেরার কথা শুনিয়েছেন শহিদুল। পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হল-
প্রায় ১ বছর পর মাঠে নেমেছেন কেমন লাগছে?
শহিদুল: ভালোই লাগছে আলহামদুলিল্লাহ। অনেক দিন পরে যেহেতু সবমিলিয়ে ভালো বলব।
এতদিন ক্রিকেটকে কতটা মিস করেছেন?
শহিদুল: কষ্ট তো হচ্ছিলই। সেটা তো আর বলে প্রকাশ করা যাবে না। এখন আবার ফিরতে পেরেছি, তাই ভালো লাগছে।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে পরিবার থেকে কেমন সাপোর্ট পেয়েছেন?
শহিদুল: পরিবারের সবাইকে পাশে পেয়েছি। সবাই বলছিল, একটা দুর্ঘটনা হয়েছে, ইনজুরি হলে দেখা গেছে যে অনেক দিন মাঠের বাইরে থাকতে হতো। সে হিসেবে পরিবার অনেক সাপোর্ট করেছে কাজ করা বা অন্য সবকিছুতে। আমি নিজেও নিজের মনকে এই বুঝ দিচ্ছিলাম আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
ডিপিএলে খেলার কথা ছিল অগ্রণী ব্যাংকের হয়ে খেললেন শেখ জামালের হয়ে..
শহিদুল: আসলে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগে একটা ইনজুরিতে (গ্রোয়েন) পড়েছিলাম। ইনজুরির কারণে পরে আর অগ্রনী ব্যাংকের হয়ে আর খেলা হয়নি। সুপার লিগের আগে আগে ফিট হয়ে যাই এরপরই সুযোগ আসে শেখ জামালের হয়ে খেলার।
সর্বশেষ ম্যাচে শেখ জামালের জয়ের অন্যতম নায়ক আপনি। শেষ ওভারে ১৪ প্রয়োজন ছিল প্রাইম ব্যাংকের, তখন কি মনে হচ্ছিল জেতাতে পারবেন দলকে!
শহিদুল: একটু নার্ভাস লাগছিল। অনেক দিন পরে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি যেহেতু কনফিউশনে ছিলাম কাভার করতে পারব কি না। পরে চিন্তা করলাম যেহেতু আগে অভ্যাস আছে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ, মাথা ঠান্ডা রাখলেই। বাকিটা তো দেখেছেনই।
এতদিন পর খেলছেন সতীর্থদের থেকে কেমন সাপোর্ট পাচ্ছেন?
শহিদুল: না আসলে আগে যে দলে ছিলাম অগ্রনী ব্যাংকে সেখানে সবাই পরিচিত ছিল। এখন শেখ জামালে যেখানে আছি এখানেও সবাই খুবই হেল্পফুল। একেতো অনেকদিন পরে মাঠে ফেরা আরেক হচ্ছে ইনজুরি থেকে আসা সেক্ষত্রে দলের সবাই খুব সাপোর্ট দিয়েছে। ফিজিও, সোহান ভাই, কোচ, বোলিং কোচ থেকে শুরু করে সবাই।
জাতীয় দল থেকে এখন অনেক দূরে, আবার ফিরে আসাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে করেন...
শহিদুল: এটা তো চ্যালেঞ্জিং, নিষেধাজ্ঞার আগে যেমন চ্যালেঞ্জিং ছিল এখনো তেমনই। আসলে জাতীয় দলে খেলতে হলে তো একটু চ্যালেঞ্জ নিয়েই খেলতে হবে। ভালো করলে আবার সুযোগ হবে, না করতে পারলে আর সুযোগ নাই (হাসি)।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের পেসারদের মধ্যে কম্পিটিশনটা নিশ্চয়ই দেখেছেন, আপনি নিজে একজন পেসার হিসেবে কিভাবে দেখেন বিষয়টা...
শহিদুল: এটা আসলে নিজের দিক বিবেচনা করছি না। তবে একটা জিনিস ভালো লাগছে যে বাংলাদেশের পেসারদের যে উন্নতি শুরু হয়েছে এটা ভালো। দলের জন্যই ভালো। কেননা প্রতিযোগিতা থাকলে দলও ভালো করে তারপরে কোয়ালিটিপূর্ণ পেসারও আসে। এটা ভালো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্যও। যে যত উন্নতি করবে তার জন্য সুযোগ তত ভালো।
যখন নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন তখন কি কাজ করে নিজেকে ফিট রেখেছেন?
শহিদুল: হ্যাঁ বোলিং কোচ ডোনাল্ডের সঙ্গে কথা হতো মাঝে মাঝে। অবশ্য নিষেধাজ্ঞার আগে কয়েকজন কোচ কিছু কাজ দিয়েছিলেন আমাকে। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমি কি করতে পারি। উনারা কিছু কাজ দিয়েছিল যেগুলোতে আমার দুর্বলতা ছিল। ওগুলো নিয়েই কাজ করেছি। এরপর শেষ মাস খানেকের বেশি সময় একটা ইনজুরিতে ছিলাম আমি। যখনই সুযোগ হয়েছে তখনই ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো সতীর্থ বা সিনিয়রের সঙ্গে কথা হত কি না?
শহিদুল: হ্যাঁ সিনিয়রদের সঙ্গে কথা হতো। অনেকে অনেক হেল্প করেছে। মুস্তাফিজ ভাই, তাসকিন ভাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করত। মেন্টালি সাপোর্ট দিত আমাকে। আরাফাত সানী ভাই, মার্শাল আয়ুব ভাই যখনই কথা হতো মেন্টালি সাপোর্ট দিত আর কি। সুজন স্যারের সঙ্গে কথা হতো কিছু কাজ দিয়েছিল। বলেছিলেন যেহেতু গ্যাপ পেয়েছ এই কাজগুলো করো। বাবুল স্যারের সাথেও কথা হতো।
আবারো জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন...
শহিদুল: আসলে জাতীয় দলে খেলা তো সবারই আশা থাকে। এখন আমার নিজের প্ল্যান হচ্ছে নিজের জায়গাটাই আগে আসা। অবশ্যই একটা প্লান আছে আগে নিজের সেই জায়গাটাই আসি। আশা তো সবারই থাকে আল্লাহ ভরসা কাজ করতে থাকি। যদি আল্লাহ ভালো জায়গায় নেয় তাহলে আবার হবে ইনশাআল্লাহ।