প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৩, ০৫:৪৮ পিএম
আগামীকাল থেকে মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর নবম আসরের খেলা। এর আগে এই টুর্নামেন্টের আটটি আসর হয়ে গেলেও এখনো মানসম্মত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি। প্রতিবারই বিপিএল শুরু হলেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বিভিন্ন প্রযুক্তি না থাকার বিষয়টি। এবারও ঘটেনি তার ব্যতিক্রম। বিপিএল শুরু হওয়ার আগেই ডিআরএস, এলইডি স্ট্যাম্প, রিভিউ সিস্টেম স্ট্যান্ডার্ড মানের ব্রডকাস্টিংসহ নানা আলোচনা চলছে। এছাড়া প্রতি বছর ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর নাম পরিবর্তনের বিভ্রান্তি তো রয়েছেই। এর মধ্যেই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলে বসলেন, দায়িত্ব পেলে বিপিএলের সব সমস্যা ঠিক করে ফেলতেন।
গতকাল বুধবার গালফ অয়েল বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দেন সাকিব আল হাসান। এ দিন বেলা ১১টায় তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে এসে সিইওর দায়িত্ব নেন। তবে সাকিব এ দায়িত্ব পান শুধুমাত্র এক দিনের জন্য। সেখানেই বিপিএল নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
সাকিব বলেন, ‘আমাকে যদি (বিপিএলের) প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয়, বেশি দিন লাগবে না। আমার ধারণা এক থেকে দুই মাস লাগবে সর্বোচ্চ; সবকিছু ঠিক করতে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি।’ এসময় ভারতের অনিল কাপুর অভিনীত ‘নায়ক’ সিনেমার উদাহরণ টেনে সাকিব বলেন, ‘নায়ক সিনেমা দেখেছেন না? এক দিনেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যে করতে পারে সে সব করতে পারে।’
প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পেলে যেসব বিষয়ে পরিবর্তন আনবেন সেই বিষয়েও ধারণা দিয়েছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘এই পুরো সবকিছু বাদ দিয়ে আবার ড্রাফট হবে, অকশন হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে, সব আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’
বিপিএল নিয়ে বিসিবি সবসময়ই স্পন্সরের সংকটের কথা বলে। সাকিব অবশ্য বিশ্বাস করেন না টাকার অভাব। সাকিব বলেন, ‘আমার ধারণা এটা মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে বড় একটি ব্যর্থতা। যে কারণে আমরা সেই রকম একটা বাজার তৈরি করতে পারিনি। (ডিআরএস নেই) বাজে সংকট সম্ভবত। সদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছু থেমে থাকার কারণ দেখি না। আমি তো কোনো কারণই দেখি না ডিআরএস না থাকার, তিন মাস আগে ড্রাফট বা অকশন না হওয়ার এবং দলগুলো এক মাস আগে ঠিক হবে না।’
সাকিব আরো বলেন, ‘খেলোয়াড়রা এভেইলেবল থাকবে। এখন এক প্লেয়ার এক দিন আসবে, দুই দিন পর চলে যাবে। কে কখন আসবে কখন যাবে কেউ জানে না। জার্সি পায়নি প্লেয়াররা। আমি আপনাদের নিউজেই দেখেছি। একটা যা-তা অবস্থা। এর থেকে আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) আরো ভালোভাবে হয়। কারণ তারা আগে থেকেই টিমটা গোছাতে পারে। আরো আগে থেকে জানে যে টিমটা কী হচ্ছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।’
এসময় বিপিএলে পারফরম করা খেলোয়াড়দের বাইরে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না উল্লেখ করে সাকিব বরেন, ‘আইপিএলকে হিসাবের বাইরে রাখলাম। বিগ ব্যাশ, পিএসএল বা সিপিএলে যখন কেউ ভালো করে জাতীয় দলে সুযোগ দিয়ে দেয়। বিপিএল তো বাইরের দেশের কেউ ও রকম দেখে না, যে একটা প্যারামিটার (মানদণ্ড) ঠিক করবে, বিপিএলের খেলা এরকম, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট, এখানে যারা ভালো খেলছে তাদের যোগ্যতা আছে। এমন কেউ চিন্তাই করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। এখনো এ পর্যায়ে রয়ে যাওয়াটা খুবই হতাশাজনক।’
এত বছরেও কেন বিপিএল উল্লেখযোগ্য কোনো জায়গায় যেতে পারেনি? এই প্রশ্ন শুনে পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘পারেনি নাকি চায়নি? জানি না বলাটা কঠিন। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না, বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা। আমার ধারণা, আমরা সৎ মনে কখনো চাইনি, ওরকম কিছু করতে। এ কারণেই হয়নি এখনো পর্যন্ত।’
এবারের বিপিএলে সাকিব আল হাসান খেলছেন ফরচুন বরিশালের হয়ে। আগামী ৭ জানুয়ারি মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে তার দল বরিশাল।