প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম
শীর্ষ দুই দলের লড়াই। পিএসজির সামনে সুযোগ ছিল ব্যবধান বাড়িয়ে ১০ পয়েন্টে নেওয়ার। সেটা পারেনি তারা। লঁস কাজে লাগাল তাদের সুযোগ। মৌসুমে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের প্রথম হারের তেতো স্বাদ দিয়ে জমিয়ে দিল লিগ ওয়ানের লড়াই।
লিওনেল মেসি ও নেইমারকে ছাড়া খেলতে নেমে হার দিয়ে নতুন বছর শুরু করেছে ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল। ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে জিতে পিএসজির সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছে দুই নম্বরে থাকা লঁস।
বিশ্বকাপজয়ী মেসি এখনও পিএসজির হয়ে মাঠে ফেরেননি। আগের ম্যাচে দুই মিনিটের মধ্যে দুটি হলুদ কার্ড দেখায় এই ম্যাচে নেই নেইমার। ভয়ঙ্কর ত্রিফলা আক্রমণভাগের আরেকজন কিলিয়ান এমবাপে দুয়েকবার ঝলক দেখালেও খুব একটা কার্যকর ছিলেন না।
শেমেসোয়াফ ফ্রাঙ্কোভস্কি চমৎকার গোলে লঁসকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা ফেরান উগো একিতিকে। লোইস ওপেন্দা আবার স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ান ক্লদ-মরিস।
পেলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জন্য এক মিনিট ধরে হাততালি দিয়ে শুরু হয় মাঠের লড়াই। প্রথম মিনিটেই সুযোগ তৈরি করে করে লঁস। তবে পিএসজির রক্ষণ ভালোভাবেই সামাল দেয় প্রথম আক্রমণ।
তবে একটু পরেই বেরিয়ে পড়ে তাদের সমন্বয়হীনতা। দ্রুত পাল্টা আক্রমণে যাওয়া লঁসের কয়েকজন খেলোয়াড় ছিলেন পুরোপুরি অরক্ষিত। তাদের একজন, মাসাদিয়ো হায়দারার বাইলাইনের কাছাকাছি জায়গা থেকে নেওয়া বুলেট গতির ভলি কোনোমতে ব্যর্থ করে দেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
তবে পুরোপুরি বিপদ মুক্ত করতে পারেননি পিএসজির ইতালিয়ান গোলরক্ষক। বাকিটা অনায়াসে সারেন অরক্ষিত পোলিশ মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কোভস্কি। খেলার বয়স তখন মোটে পাঁচ মিনিট!
পিছিয়ে পড়ার পর যেন জেগে ওঠে পিএসজি। তিনি মিনিট পরেই সমতা ফেরায় ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। নর্দি মুকিয়েলের বাড়ানো বলে হাত ছুঁয়ে ফেলেছিলেন লঁস গোলরক্ষক ব্রাইস সাম্বা। ছুটে গিয়ে সেই সময়েই বল জালে পাঠান একিতিকে! তীব্র প্রতিবাদ জানায় স্বাগতিকরা। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের বাঁশিই বাজান রেফারি।
ষোড়শ মিনিটে এমবাপের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন সাম্বা। ফিরতি বলে একিতিকের শট কাঁপায় প্বার্শজাল। ১০ মিনিট পর ওপেন্দার শট ঠেকিয়ে লঁসকে এগিয়ে যেতে দেননি দোন্নারুম্মা।
২৮তম মিনিটে আর পারেননি তিনি। প্রতি আক্রমণে নিজেদের অর্ধ থেকে বল বাড়ান সেকো ফোফানা। মাঝপথে দারুণ চেষ্টার পরও বলের নাগাল পাননি সের্হিও রামোস। ডি বক্সে বল পেয়ে যান ওপেন্দা। ছুটে গিয়ে স্লাইড করা মার্কিনিয়োনকে দারুণ দক্ষতায় এড়িয়ে যান বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। এগিয়ে এসে শট ঠেকানোর চেষ্টায় ব্যর্থ পিএসজি গোলরক্ষকও। তার শরীরের নিচ দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেয় ওপেন্দার শট।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দলই। যোগ করা সময়ে এমবাপেকে করা একটি ফাউলকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মাঠ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে স্কোর লাইন ৩-১ করে ফেলে লঁস। দানিলো পেরেইরার বাজে পাসে ডি বক্সের মাথায় বল হারান মার্কো ভেরাত্তি। দুই জনের পা ঘুরে পেয়ে যান ক্লদ-মরিস। ঝাঁপিয়েও তার জোরাল শটের নাগাল পাননি পিএসজি গোলরক্ষক।
৫৪তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির দূর পাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন লঁস গোলরক্ষক সাম্বা। সাত মিনিট পর তিনি ব্যর্থ করে দেন এমবাপের শট।
৭৫তম মিনিটে ব্যবধান প্রায় কমিয়েই ফেলেছিলেন পাবলো সারাবিয়া। গোললাইন থেকে কোনোমতে তার হেড ফিরিয়ে দেন লঁস গোলরক্ষক। বাকি সময়ে চাপ ধরে রাখলেও গোলের নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি পিএসজি।
মৌসুমে প্রথম হারের পরও শীর্ষেই পিএসজি। ১৭ ম্যাাচে তাদের পয়েন্ট ৪৪। সমান ম্যাচে ১২ জয় ও চার ড্রয়ে লঁসের পয়েন্ট ৪০।