• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

মাঠের বাইরে কিংবদন্তি পেলের যত অর্জন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২২, ০২:১৬ এএম

মাঠের বাইরে কিংবদন্তি পেলের যত অর্জন

ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে

ক্রীড়া ডেস্ক

কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে। এই ফুটবল সম্রাট দুনিয়াকে শুধু তার শৈল্পিক ফুটবলে মোহিত করে রাখেননি। পেলের প্রতিভার ছটা বিচ্ছুরিত হয়েছে অন্যান্য মঞ্চেও।
পেলের জনপ্রিয়তা ছিল গগনচুম্বী। ব্রাজিল সরকার, পেলেকে নিয়ে একটা সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগত। যদি দেশের সম্পদ অন্য কোথাও চলে যায়। সেই কারণে ১৯৬১ সালে ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জানিও কোয়াদ্রস পেলেকে ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাকে ‘রফতানি করা যাবে না’ বলে একটি ডিক্রি জারি করেছিলেন।

পেলের যে ৭টি রেকর্ড ভাঙতে পারেনি কেউ

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফুটবলের রাজা। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তার অর্জনগুলো ফুটবল বিশ্বে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফুটবল জগতে পেলের অবদান অনস্বীকার্য। তবে ফুটবল মঞ্চের বাইরেও কতশত আলো ছড়িয়েছেন ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি।

ফুটবলের বাইরে পেলের জীবনের উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র ছিল তার রাষ্ট্রদূতের কাজ। ১৯৯২ সালে তিনি বাস্তুসংস্থান এবং পরিবেশের জন্য জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন দাতব্য কাজে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। যেমন অ্যাকশন ফর ব্রাজিল চিলড্রেন, গোল পেলা ভিদা, এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ, দ্য লিটলেস্ট ল্যাম্ব, প্রিন্সের রেইনফরেস্ট প্রকল্পসহ আরও অনেক কিছু। ২০১৮ সালে পেলে তার দাতব্য সংস্থা পেলে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি আশপাশের দরিদ্র এবং অধিকার বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে।

পেলের উক্তি, পেলেকে নিয়ে উক্তি

পেলে ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত নিযুক্ত হয়েছিলেন। পরের বছর রাজনীতিতে যুক্ত হোন পেলে। ১৯৯৫ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এই তিন বছর তিনি ব্রাজিলের ক্রীড়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তার নেতৃত্বে কিছু আইন তৈরি হয়েছিল। সেখানে পেশাদার ফুটবলারদের ক্লাবের সঙ্গে দর কষাকষির ব্যাপারে কিছু ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল, যা তার নিজের প্রজন্মের ফুটবলারদের ছিল না।

পেলের মতো খেলা মানে ঈশ্বরের মতো খেলা‍‍` | প্রথম আলো

যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে সম্মানজনক উপাধি পেয়েছিলেন পেলে। ১৯৯৭ সালে বাকিংহ্যাম প্যালেসে তাকে ব্রিটিশ নাইটহুড উপাধি দিয়েছিলেন রানি।

ব্রাজিলের অন্যান্য অখ্যাত ও বিখ্যাত ফুটবলাররা বিদেশি ক্লাবে খেললেও পেলের ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে তাকে বাইরে খেলতে যেতে বাধা দেয়া হয়। সে সময় ফুটবলাররা কোন ক্লাবে খেলবেন সেই বিষয়ে তাদের কথা বলার সুযোগ ছিল খুব কম।

ভালো আছেন পেলে, জানালেন নিজেই (ভিডিও)

ব্রাজিলের এই ফুটবলার একটি বিদেশি ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। ১৯৭৫ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল ক্লাব নিউইয়র্ক কসমসে। পরে ২০১০ সালে পেলেকে একটি পুনরুজ্জীবিত নিউইয়র্ক কসমসের সম্মানিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, যার লক্ষ্য ছিল মেজর লিগ সকারে একটি দল তৈরি করা।

১৯৮১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এসকেপ টু ভিক্টরি’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পেলে। এই সিনেমায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের নাৎসি একাদশ ও বন্দিদের মধ্যে একটি কাল্পনিক ফুটবল ম্যাচের গল্প তুলে ধরা হয়। তার সঙ্গে ছিলেন ববি মুরের মতো আরও কয়েকজন পেশাদার ও সাবেক ফুটবলারও। ওই খেলায় গোলরক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেন চলচ্চিত্রাঙ্গনে খ্যাতির তুঙ্গে থাকা সিলভেস্টার স্ট্যালোন। সিনেমার একটি দৃশ্যে পেলে অ্যাক্রোবেটিক বাইসাইকেল কিক নিয়েছিলেন। প্রথম শটেই তিনি এই কিকটি নিতে সফল হয়েছিলেন।

Pele died | Argentina star Lionel Messi wished Pele to rest in peace after  his death dgtl - Anandabazar

পেলেকে ১৯৯৩ সালে ন্যাশনাল সকার হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯৯ সালে তাকে শতাব্দির সেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে বেছে নিয়েছিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।

এ ছাড়াও তিনি ১৯৯৫ সালে খেলাধুলায় অসামান্য সেবার জন্য ব্রাজিলের স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০১২ সালে পেলেকে মানবিক ও পরিবেশগত কারণে উল্লেখযোগ্য অবদানের পাশাপাশি তার ক্রীড়া সাফল্যের জন্য এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেয়া হয়।

 

সাজেদ/

ক্রীড়া জগৎ সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ