• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সেই থেকে ১০ নম্বর জার্সি হলো পেলের

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২, ০৯:২২ পিএম

সেই থেকে ১০ নম্বর জার্সি হলো পেলের

ক্রীড়া ডেস্ক

আধুনিক ফুটবলে সুনির্দিষ্ট কিছু জার্সি নম্বর বিশেষত্ব আর গর্বের প্রতীক। তার মধ্যে একটি ১০ নম্বর জার্সি। অতীতে অবশ্য এটা কেবলই ছিল একটি সংখ্যা, কিন্তু পেলে-মারাদোনা থেকে শুরু করে আজকের মেসি-নেইমার-এমবাপেরা এটাকে করে তুলেছেন শ্রেষ্টত্বের প্রতীক হিসেবে। যার শুরুটা বলা যায় পেলের হাত ধরে।

ঘটনাচক্রে পেলের গায়ে উঠেছিল ১০ নম্বর জার্সি, ১৯৫৮ বিশ্বকাপে। সেদিনের তরুণ, অপরিচিত এক ফুটবলার বল পায়ে এমন জাদুর মুর্ছনায় ছড়িয়েছিলেন যে সাধারণ ১০ নম্বর জার্সিই হয়ে ওঠে ‘বিশেষ ১০।’ সেই থেকে পেলেও প্রেমে পড়ে যান দশের প্রতি, ক্যারিয়ারের বাকি সময়ে এই জার্সি পরেই মাতিয়েছেন তিনি।

তার ওই জার্সি পাওয়ার ঘটনাটাও বেশ মজার।

সুইডেনের ওই বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন ফিফার কাছে খেলোয়াড়দের জার্সি নম্বর ছাড়াই স্কোয়াডের তালিকা জমা দিয়েছিল। কিন্তু ম্যাচে মাঠে নামতে হলে তো জার্সি নম্বর লাগবে। তাই টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ এলোমেলাভাবেই নম্বর ঠিক করে দেয়, সেভাবেই পেলের গায়ে ওঠে ‘১০।’

সেই সময় পেলে ছিলেন ১৭ বছরের টিনেজার। এত বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না। বিশ্বকাপের ওই দলে তার শুরুর একাদশে খেলার সম্ভাবনাও ছিল না। কিন্তু সতীর্থের চোটে ভাগ্যক্রমে মিলে যায় তা।

গ্রুপ পর্বে খেলতে পেরেছিলেন মোটে একটি ম্যাচ। তার সেরা হয়ে ওঠা মূলত কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে। ওয়েলসের বিপক্ষে তার একমাত্র গোলেই জিতে সেমি-ফাইনালে পা রাখে ব্রাজিল।

শেষ চারে তার হ্যাটট্রিকে ফ্রান্সকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। আর ফাইনালে পেলের জোড়া গোলে সুইডেনকেও একই ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব সেরার মুকুট পরে সেলেসাওরা।

চার ম্যাচে ৬ গোল, আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা; পেলের নাম লেখা হয়ে যায় স্বর্ণাক্ষরে। সেই শুরু পেলের বিশ্বজয়ী যাত্রার, একই সঙ্গে ১০ নম্বর জার্সিরও বিখ্যাত হয়ে ওঠার।

পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে পেলে নিজেও শুনিয়েছিলেন, তার ১০ নম্বর জার্সি পাওয়ার ঘটনা।

“১০ নম্বর জার্সি আমাকে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে দেওয়া হয়েছিল। তখন কেউ ভাবেইনি যে, ১০ নম্বর জার্সিটি পরা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু। এমনকি আমি দলের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়ও ছিলাম না, ঘটনাক্রমেই বিশ্বকাপে জার্সিটা আমাকে পরতে হয়েছিল।”

তারপর ব্রাজিল জাতীয় দলে তো বটেই, সান্তোসের হয়েও ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলেছিলেন তিনি। পরেছিলেন নিউ ইয়র্ক কসমসের দুই বছরের অধ্যায়েও।

এই ভুবনের মায়া ছেড়ে বৃহস্পতিবার রাতে ওপারের পথে যাত্রা করেন পেলে। কিংবদন্তির বিদায়ে শোকাহত নেইমারও বলেন পেলের কারণেই ১০ নম্বর জার্সি আজ বিখ্যাত।

“পেলের আগে, ‘১০’ নম্বর ছিল শুধুই একটা সংখ্যা। কোথাও আমি এটা পড়েছিলাম, জীবনের কোনো এক সময়ে। তবে কথাটা সুন্দর, পরিপুর্ণ। আমি বলব, পেলের আগে ফুটবল ছিল কেবলই একটা খেলা। পেলে সবকিছু পাল্টে দিয়েছেন।”

আর্কাইভ