প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০২২, ০৬:০৮ পিএম
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে বিতর্কিত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন সল্ট বে। ফিফার নিয়ম ভঙ্গ করে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে ছবি তুলেছেন তিনি। তাঁর এমন কাণ্ডে হতবাক হয়েছেন সমর্থকেরা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, বিশ্বকাপ হাতে ধরার তিনি কে?
সমর্থকদের সমালোচনার জেরে এবার মেজর সকার লিগে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সল্টকে। এতে করে ইউএস ওপেন কাপের ফাইনালে থাকতে পারবেন না তিনি। টুর্নামেন্টটি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘতম লিগ।
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামের তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মেতেছিলেন পরিবারসহ লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়ারা। এ সময় ট্রফি হাতে আর্জেন্টিনা ফুটবলারদের সঙ্গে উদযাপনে দেখা যায় সল্টকেও।
লিসান্দ্রো মার্তিনেজের হাত থেকে ট্রফি নিয়ে সল্টকে ছবি ও চুমু দিতে দেখা যায়। এতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্ডারকে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়। শুধু মার্তিনেজ নন, মেসিও সেদিন বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁকে সেলফি তুলতে বারবার অনুরোধ করলে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ক্ষুব্ধ ভঙ্গিতে শেষে ছবি তুলতে বাধ্য হন।
ফিফার নিয়মে আছে বিশ্বকাপ ট্রফি শুধু বাছাইকৃত ব্যক্তিরাই স্পর্শ করতে পারবেন। এই বাছাইকৃত ব্যক্তিরা হচ্ছেন চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের পরিবার এবং আগের চ্যাম্পিয়নরা। এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে ট্রফি হাতে নিতে পারবেন দেশের প্রধানরাও।
বিশ্বব্যাপী সল্ট বে নামে পরিচিত হলেও তাঁর প্রকৃত নাম নুসরেত গোকচে। যিনি পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ধনী বাবুর্চিদের একজন। তবে তুর্কি এ শেফকে আজকের পর্যায়ে আসতে অনেক পরিশ্রম, ধৈর্য ও একাগ্রতার পরিচয় দিতে হয়েছে।
তুরস্কের আনাতোলিয়ার ইরজুরেমের এক অসচ্ছ্বল কুর্দি পরিবারে জন্ম হওয়ায় পড়াশোনা করা সুযোগ হয়নি সল্টের। সংসারে সহায়তার জন্য ১৪ বছর বয়সে ইস্তাম্বুলের এক কসাইখানায় কাজে লাগিয়ে দেন তাঁর বাবা। সেখানে মাংস কাটার কৌশল ভালোভাবে রপ্ত করেন তিনি।
এরপর আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন সল্ট। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল রেস্তোরাঁ পরিচালনার কাজ রপ্ত করা। কাজ শেখার পর ২০১০ সালে দেশে ফিরে ইস্তাম্বুলে খুলেন নিজের রেস্তোরা ‘সল্ট বে’। এরপর আস্তে আস্তে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শাখা বাড়াতে থাকেন তিনি।
তবে ২০১৭ সালে বিশ্ববাসীর নজর কাড়েন সল্ট। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘অটোমান স্টে’ শিরোনামে ৩৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। ভিডিওটিতে তাঁকে দেখা যায় নিজস্ব ভঙ্গিতে মাংস কেটে ও সাপের ভঙ্গিমায় মাংসের ওপর লবণ ছিটিয়ে দিতে। এরপর থেকেই তিনি রাতারাতি জনপ্রিয় হতে থাকেন।