• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

খলনায়ক থেকে নায়ক, তিনিই বেন স্টোকস

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২, ০১:২২ এএম

খলনায়ক থেকে নায়ক, তিনিই বেন স্টোকস

আবু রায়হান ইফাত

ক্যামেরার ফোকাসটা তখন একজনকে ঘিরেই। যিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। তাকে ঘিরে সতীর্থদের সান্তনা। এভাবে ভেঙ্গে পড়ার কথা ছিল না তার। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না বলে সেদিন হতাশ হতে হয়েছিল। ছাড়তে হয়েছিল মাঠ মলিন বদনে। কেননা সেদিনকার খলনায়ক তো তিনি। তবে তিনি ফিরেছেন। নায়ক বনেই ফিরেছেন। তিনি বেন স্টোকস। ইংলিশ অলরাউন্ডার। ইংল্যান্ডের এক অনন্য কীংবদন্তী তিনি। 

সেই ২০১৬ সাল। কলকতার ইডেন গার্ডেনে কার্লোস ব্রেথওয়েটের ব্যাটে নাস্তানাবুদ। টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ইংল্যান্ডের দেয়া ১৫৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিলো ১৯ রান। বল করতে আসেন বেন স্টোকস। আর প্রথম চার বলেই চার ছক্কা। আর ইংলিশদের কাছ থেকে শিরোপা কেড়ে নেয় ক্যারিবিয়ানরা। তাতে খলনায়ক বনে যান তিনি।

 

সেখানেই হারাতো পারতো স্টোকস। কিন্তু সেই ব্যর্থতাকে অনুশোচনা না বানিয়ে সেখান থেকে খুঁজে নিয়েছেন অনুপ্রেরণা। শিখেছেন কীভাবে বড় মঞ্চে করতে হয় লড়াই। কিভাবে ফিরতে হয় নায়ক রূপে।  আর তা তো তিনি দেখিয়েছেন তিন বছর পর ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল ইংল্যান্ড। তবে সেখান থেকে নিজ দলকে উদ্ধার করেছেন বেন স্টোকস। 

লর্ডসে সেদিন এক অনন্যে ইতিহাসের সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। এক প্রান্ত দিয়ে ব্যাটারদের যাওয়া-আসার মিছিল, অন্য প্রান্ত একাই আগলে রেখেছিলেন তিনি। ৯৮ বলে ৮৪ রান করে শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ২৪১ রান সংগ্রহ করে সমতায় ফেরান দলকে। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে করেন তিন বলে ৮ রান । আর সুপার ওভারে পনেরো রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। অপরদিকে নিউজিল্যান্ড জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫ রান করলেও হারায় একটি উইকেট। আর তাতেই শিরোপা আসে স্টোকসদের হাতে।

২০১৯ থেকে ২০২২ মাঝে এবারও তিনবছর। আবারও নায়ক রূপে তার আবির্ভাব। টি-২০ বিশ্বকাপ আসরের ফাইনালে ইংল্যান্ড। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। এবার ইংলিশ বোলাররা ভালো করলেও ১৩৮ রানের মামুলি লক্ষ্যে পৌঁছাতে বেগ পোহাতে হয় তাদের। দলের টপ অর্ডার ব্যাটাররা চলে যাবার পর পাকিস্তানি বোলারদের তোপে অনেকেটা বেরিয়েও গেছিল ম্যাচ। তবে বড় ম্যাচ মানেই স্টোকস নৈপুণ্যতা। এক ব্যর্থতার ৬ বছর পর আবারও এসেছে সুযোগ তা মোচন করার। তা কী আর ছাড়া যায়? ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন দলকে শিরোপা জিতিয়ে।

যিনি একদিন খলনায়ক হয়েছিলেন ইংল্যান্ড সমর্থকদের কাছে। তিনি ফিরেছেন, তবে দারুণ ভাবে। একবার নয়. দুই দুই বার বিশ্বমঞ্চে নিজ দেশকে শিরোপা জিতিয়ে। তিনি বেন স্টোকস। যিনি অমর হয়ে থাকবেন ক্রিকেট প্রেমীদের মাঝে, যতদিন পৃথিবী থাকে। তিনি শিখিয়েছেন হতাশ না হয়ে যেভাবে ফিরে আসা যায়। তিনি থাকবেন মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে যে, এভাবেও নায়ক হওয়া যায়।

এআরআই

ক্রীড়া জগৎ সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ