• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

হয়নি পুনরাবৃত্তি, স্টোকস-মইন ঝড়েই শিরোপা ইংল্যান্ডের

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২২, ১১:৩৬ পিএম

হয়নি পুনরাবৃত্তি, স্টোকস-মইন ঝড়েই শিরোপা ইংল্যান্ডের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু তা হতে দেয়নি বেন স্টোকস ও মইন আলী। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ফলে দ্বিতীয়বারের টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে নিলো ইংলিশরা। 

মেলবোর্নের ৩০ বছর আগের ইতিহাসের আর পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। বৃষ্টি ও নানা শঙ্কার মাঝে ভাগ্যটা ছিলো বাটলারদের সঙ্গেই। পাকিস্তানের দেয়া ১৩৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে সহজেই জয় পায়নি ইংল্যান্ড। বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও বেগ পোহাতে হয়েছে তাদের। খেলার ফলাফলটা ভিন্ন হবার পথেও যাচ্ছিল। অনেকটা ম্যাচে ফিরেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভাগ্য যখন ইংলিশদের পাশে তখন তো সফলতা আসবেই। পাকিস্তানের টার্ম কার্ড শাহীন শাহ আফ্রিদি যদি এই ম্যাচ চলা অবস্থায় ইঞ্জুরিতে না পড়তেন তাহলে হয়তো শিরোপা উঠতে পারতো পাকিস্তানের হাতে। তবে শাহীনের অভাব পাকিস্তানকে ধুঁকিয়েছে ভালোভাবেই। কেননা শাহীনের বদলি বোলার হিসেবে বল করা ইফতেখারের ওভারেই ম্যাচ বের করে নেয় স্টোকস। ৫ বলে ১৩ রান খরচ করেন তিনি। ফলে পরাজয়কেই মেনে নিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। 

রোববার (১৩ নভেম্বর) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ম্যাচটি শুরু হয়। টস হেরে আগে ব্যাট করে পাকিস্তান ৮ উইকেটে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ইংল্যান্ড ৬ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে ১৩৮ রান করে ম্যাচে জয় তুলে নেয়। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে দুইবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে ইংলিশরা।

পাকিস্তানের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৭ রানেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালে ভারতীয় বোলারদের পাড়া মহল্লার বোলার বানিয়ে ফেলা ব্যাটার অ্যালেক্স হেলসকে দুর্দান্ত বোল্ড করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। দলীয় ৩২ রানে ফিল সল্টকে ইফতিখারের ক্যাচ বানিয়ে ইংলিশ শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন হারিস রউফ। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক বাটলার অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে নিয়ে ১৩ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৪৫ রানে বাটলারকে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান হারিস রউফ।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ারপ্লের সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। তাই রান বাড়াতে ইংলিশ বোলারদের ওপর আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন দুই ওপেনার। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ওকসকে ছক্কা মারেন রিজওয়ান। পরের ওভারে তাকে ফেরত পাঠান কুরান। কুরানের ওয়াইড লাইনের বল তার ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। ১৪ বলে ১ ছয়ে ১৫ রান করে আউট হন রিজওয়ান। তখন পাকিস্তানের দলীয় রান মাত্র ২৯।

দলীয় ৪৫ রানে ১২ বল খেলে ৮ রান করে বিদায় নেন মোহাম্মদ হারিস। আদিল রশিদের বলে স্টোকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে বাবর ও শান মাসুদ ইনিংস মেরামতের চেষ্টা চালান। কিন্তু দলীয় ৮৪ রানে বাবর আদিল রশিদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। বাবরের বিদায়ের পর রানের খাতা খোলার আগেই ইফতিখারকে বিদায় করেন স্টোকস। ইফতিখার ৬ বল থেকে ০ রান করেন।

পঞ্চম উইকেটে শান মাসুদ ও শাদাব খান স্কোরবোর্ড সচল রাখার চেষ্টা চালান। দলীয় ১২১ রানে ২৮ বলে ৩৮ রান করা শান মাসুদকে আউট করে ৩৬ রানের জুটি ভাঙেন কুরান। শানের বিদায়ের ২ রান পর শাদাবকে নিজের শিকার বানান ক্রিস জর্ডান। তখন দলীয় রান ১২৩। মোহাম্মদ নওয়াজও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। ৭ বলে ৫ রান করে দলীয় ১২৯ করে কুরানের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন নওয়াজ। বিশ্বকাপে ১৩ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিতে পরিণত হন কুরান। দলীয় ১৩১ রানে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে বিদায় করে ম্যাচে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন জর্ডান। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান সংগ্রহ করে। জিততে হলে ইংল্যান্ডকে করতে হবে ১৩৮ রান।

ইংল্যান্ডের হয়ে স্যাম কুরান ৩টি, ক্রিস জর্ডান ও আদিল রশিদ ২টি এবং বেন স্টোকস একটি উইকেট লাভ করেন।

পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড-দুই দলই এর আগে একবার করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলেছে। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত তার ঠিক পরের আসরে (২০১০) শিরোপা ঘরে তোলে ইংল্যান্ড। ফলে এবার শিরোপা জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে নাম লেখালো ইংল্যান্ড। 

এআরআই

 

আর্কাইভ