• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ইতহাসের পুনরাবৃত্তি নাকি ইংল্যান্ডের প্রতিশোধ?

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২২, ০৫:৫১ পিএম

ইতহাসের পুনরাবৃত্তি নাকি ইংল্যান্ডের প্রতিশোধ?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আর মাত্রে কয়েকঘন্টা বাকী। এরপরই পর্দা নামবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অষ্টম আসরের। এবারের আসরে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে নামবে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। আর তাতেই সামনে এসেছে ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা। সেদিন অবশ্য ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। তাই এই ম্যাচে পাকিস্তানের সামনে রয়েছে সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর সুযোগ। তবে ইংল্যান্ডও ছেড়ে কথা বলার মত নয়। তাদের লক্ষ্য পাকিস্তানকে হারিয়ে ৯২-এর প্রতিশোধ নেয়া।

রোববার (১৩ নভেম্বর) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টায় শুরু হবে ম্যাচটি। তবে এদিন রয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা। কিন্তু ভয়ের কিছু নেই। আবহাওয়ার কথা বিবেচনায় রেখে রাখা হয়েছে রিজার্ভ ডে।

এবার ইতিহাস থেকে একটু ঘুরে আসা যাক- ১৯৯২ থেকে ২০২২। ৩০ বছরের ব্যবধান। ক্রিকেটের সুবাদে পাকিস্তান দল ২০২২ সালে এসে ৩০ বছর আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়েছে ভক্তদের।

৯২-এর বিশ্বকাপের শুরুটা হার দিয়ে করেছিল পাকিস্তান। সেবার ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল গ্রুপ পর্বের শেষদিনে। সে আসরে পাকিস্তান জয় পেয়েছিল গ্রুপ পর্বের ৩ ম্যাচে। এরপর সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তারা কেটেছিল ফাইনালের টিকিট। আর ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পেয়েছিল বিশ্বকাপের স্বাদ। সে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি হয়েছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।

এরপর কেটে গেছে ৩০টি বছর। তিন দশক পর ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এসে সেই ১৯৯২ সালের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘোটানোর এক কদম দূরে পাকিস্তান।

শর্টার ফরম্যাটের বিশ্বকাপের শুরুটা এবার বাবর আজমদের হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে হেরে। এরপর গ্রুপ পর্বের শেষ তিন ম্যাচে জয় বাগিয়ে নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে তারা। সেমিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় নিউজিল্যান্ডকে। কিউইদের হারিয়ে টিকিট কাটেন বাবররা ফাইনালের। আর ফাইনালে রোববার তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। খেলা হচ্ছে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।

শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ স্বভাবতই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ইংল্যান্ডের জন্য। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ ওয়াসিমের মতো পেইসাররা কাল হয়ে দাঁড়াতে পারেন জস বাটলার, ডাওয়িড মালান, অ্যালেক্স হেইলসদের জন্য।

অপরদিকে ইংল্যান্ডের উড়তে থাকা ব্যাটাররা যেকোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারেন। দুই দলের দুই শক্তিমত্তার প্রয়োগে জমকালো এক ফাইনালের আশা করতেই পারেন ক্রিকেটভক্তরা।

এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে ২৮ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। এর ভেতর পাকিস্তানের ৯ জয়ের বিপরীতে ইংল্যান্ডের অর্জন ১৮ জয়। একটি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হয়েছে কেবলমাত্র।

হেড-টু-হেড জয় বিবেচনায় শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে পাল্লাটা বেশ ভারী ইংল্যান্ডের।

ফাইনালে একাদশে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই পাকিস্তানের। অপরদিকে মার্ক উড ও ডাওয়িড মালান ইনজুরি থেকে সেরে না ওঠায় তাদের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা কম। যদিও ইংলিশ দলপতি বেশ আশাবাদী এই দুই ক্রিকেটারকে ফাইনালে পাওয়া নিয়ে।

মেলবোর্নের পেইসবান্ধব বাউন্সি উইকেটে পেইসাররা বেশ সহায়তা পাবেন স্বভাবতই। পাওয়ার প্লেতেই অনেকটা ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে এই উইকেটে ম্যাচের। টস জিতে আগে ব্যাট করে ১৬০ রান যদি লক্ষ্য দেয়া যায় তবে সেটি টপকাতে বেশ বেগ পেতে হবে রান তাড়া করতে নামা দলকে। তাই দুই দলই টসে জিতে আগে বোলিং নেয়ার পক্ষপাতী থাকবেন এই ম্যাচে।

সবকিছুই নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির এই ফাইনালে বাগড়া আসতে পারে বেরসিক বৃষ্টির।

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী রোববার মেলবোর্নে ১৫ থেকে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টির ৯৫ শতাংশ সম্ভাবনা আছে। বজ্রপাতের সঙ্গে মুষলধারে বর্ষণ হতে পারে।

ফাইনালের জন্য অবশ্যই রিজার্ভ ডে রাখা হয়েছে। রিজার্ভ ডেতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অফিস। যদি বৃষ্টির কারণে ফাইনাল ম্যাচটি মাঠে না গড়ায়, তবে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হবে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান।

এক বিবৃতিতে শুক্রবার ব্যুরো অব মেটিওরোলজি জানিয়েছে, সোমবার রিজার্ভ ডেতেও ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ৯৫ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে ২০০২-০৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সে আসরে প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী রিজার্ভ ডেতেও খেলা হওয়ার পর ফলাফল হয়নি। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল দুই দিনে শেষ হয়েছিল।

পাকিস্তান সম্ভাব্য একাদশ: বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ হারিস, শান মাসুদ, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ নাওয়াজ, শাদাব খান, মোহাম্মদ ওয়াসিম, নাসিম শাহ, হারিস রউফ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি।

ইংল্যান্ড সম্ভাব্য একাদশ: জশ বাটলার (অধিনায়ক), অ্যালেক্স হেইলস, ফিল সল্ট, বেন স্টোকস, হ্যারি ব্রুকস, লিয়াম লিভিংস্টোন, মঈন আলি, স্যাম ক্যারান, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডান ও আদিল রাশিদ।

 

এআরআই

আর্কাইভ