প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২২, ০৩:০১ এএম
অঘটনের সাক্ষী হয়ে থাকবে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২। শ্রীলঙ্কার হার নামিবিয়ার বিপক্ষে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে, একই কাতারে রয়েছে ইংল্যান্ডও। এবার শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ রানে হারলো পাকিস্তান।
আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৩০ রানের সাদামাটা সংগ্রহ পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ধারণা করা হয়েছিল, পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি না পারলেও মিডল অর্ডার পর্যন্ত যাবে এই ম্যাচ। কিন্তু কীসের কী! স্বল্প সংগ্রহের এই ম্যাচটা সাদামাটা হবে বলে যাঁরা ভেবেছিলেন, তাঁদের চোখের সামনেই ম্যাচটা রঙিন হয়ে উঠল জিম্বাবুয়ের বোলারদের লড়াই আর পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের ভুলের কারণে। ১০ ওভার শেষেও ৩ উইকেটে ৫৪ রান তুলেছিল পাকিস্তান। জয় থেকে তখন ৬০ বলে ৭৭ রানের দূরত্ব। উইকেটে শান মাসুদ থাকায় তখনও দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেনি পাকিস্তানের সমর্থকদের।
তবে মনে মনে একটা ভয় তো ছিল। আসিফ আলীকে বসিয়ে এই ম্যাচে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে খেলিয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে খেলছেন বাবর–রিজওয়ানরা। তাই পাঁচে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে লেগ স্পিনার শাদাব খানকে। ১৪তম ওভারে ভয়টা আরও জেঁকে বসে সিকান্দার রাজা হঠাৎ করেই অজন্তা মেন্ডিস কিংবা সুনীল নারাইন হয়ে ওঠায়! তাঁর টানা দুটি ‘নাকল বলে’ আউট শাদাব ও হায়দার আলী! জিম্বাবুয়ে অলরাউন্ডার হ্যাটট্রিক করতে না পারলেও তাঁর সেই ওভারের পর জমে ওঠে ম্যাচ। ৩৬ বলে দরকার ৪৩, উইকেটে শান মাসুদ ও নেওয়াজ। তাঁদের পর আর কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান নেই!
১৬তম ওভারে সিকান্দারের দ্বিতীয় বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন ৩৮ বলে ৪৪ রান করে ম্যাচটা পাকিস্তানকে জেতানোর পথে থাকা মাসুদ। তখন সত্যি সত্যিই হারের চোখ রাঙানি দেখছিল পাকিস্তান। ১৪ বলে ৩২ থেকে ১৮ বলে ২৯ এবং তারপর শেষ দুই ওভারে (১২) সমীকরণটা ২২ রানে নামিয়ে আনেন নেওয়াজ–ওয়াসিম। এখান থেকেও বিপদ হতে পারত। ১৯তম ওভারটি করেন জিম্বাবুয়ে পেসার রিচার্ড এনগারাভা। প্রথম ৩ বলে ৪ রান দেওয়ার পর চতুর্থ বলে নেওয়াজের পায়ের ওপর ফুল টস করে বসেন এনগারাভা। ছক্কা মেরে ম্যাচটা সহজ করে ফেলেন নেওয়াজ। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ১১ রান।
শেষ ওভারটি করেন জিম্বাবুয়ে পেসার ব্রাড ইভানস। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ম্যাচ দিয়ে অভিষিক্ত ইভানস চাপ সামলাতে পারেননি। প্রথম বলটি হাফ ভলি করায় ৩ রান নেন নেওয়াজ। পরের বলটি ছিল স্লোয়ার, ওয়াসিম বোকা হননি। স্ট্রেট দিয়ে চার মারেন ওয়াসিম। জয়ের জন্য শেষ ৩ বলে দরকার ছিল ৩ রান। চতুর্থ বলটি ‘ডট’ হওয়ায় আবারও চাপে পড়ে পাকিস্তান। এরপর আউট! পঞ্চম বলে নেওয়াজ (১৮ বলে ২২) তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড অফে।
শেষ বলে শাহিন আফ্রিদি ২ রান নিতে গিয়ে পেরেছেন ১ রান নিতে। ১ রানের দুর্দান্ত জয়ে সুপার টুয়েলভের এই ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখল জিম্বাবুয়ে।
এসএএস