প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২, ০৫:৪৩ এএম
ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজেদের পরখ করার ম্যাচে দারুন এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুন্যে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৭ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।
জয়ের জন্য ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এসে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। শরিফুল ইসলামের গুড লেংথের ডেলিভারিতে স্ট্রেইট ড্রাইভ করতে গেলে বল শরিফুলের হাতে লেগে নন স্ট্রাইক প্রান্তের উইকেটে আঘাত হানে। বল উইকেটে আঘাত হানার সময় পপিং ক্রিজের বাইরে ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ফলে রান আউটে কাটা পড়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ১৫ বলে ১৫ রান করা এই ব্যাটারকে।
ওয়াসিমকে হারালেও পাওয়ার প্লেটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগায় আরব আমিরাত। ১ উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৪৩ রান। আরিয়ান লাকরাকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রান বাড়ানোর সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন চিরাগ সুরি। তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বল বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন সুরি। ডানহাতি এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ২৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে লাকরাকে ফেরান মিরাজ। এরপর আরব আমিরাত শিবিরে আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম দুই ওভারে রান দিলেও তৃতীয় ওভারে সিপি রিজওয়ানকে আউট করেন বাঁহাতি এই পেসার। দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন মিরাজ। এরপর বোলিংয়ে এসে বাসিল হামিদকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন শরিফুল।
ভালো শুরু করলেও বৃত্তিয়া অরবিন্দকে ইনিংস বড় করতে দেননি মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬ রানে ফেরেন অরবিন্দ। পরের ওভারে জাওয়ার ফরিদকে রান আউট করেন আফিফ। ১৭তম ওভারের শেষ বলে মেয়াপানকে সাজঘরে ফেরত পাঠান মোস্তাফিজুর রহমান।
দলীয় ১২৪ রানে ৮ উইকেট হারালেও দলকে জয়ের পথে রাখেন আফজাল খান ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। তবে ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে শরীফুলের শিকার হন আফজাল। পরের বলে জুনায়েদকে বিদায় করে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৫১ রানে গুটিয়ে দেন এই পেসার। তাতেই ৭ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।
মিরাজ ও শরীফুল ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। মোস্তাফিজ নেন ২টি উইকেট।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ওভারে ব্যাটিং করতে গিয়ে খানিকটা অস্বস্তিতে দেখা যায় মেহেদি হাসান মিরাজকে। যদিও ওভারের শেষ বলে চার মেরে নিজের অস্বস্তি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে এসে উইকেট হারাতে হয় বাংলাদেশকে। নিজের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে চিকি শট খেলার চেষ্টা করেছিলেন সাব্বির রহমান।
ব্যাটে-বলে না হলেও অতিরিক্ত খাত থেকে চার রান পায় বাংলাদেশ। পরের বলেই অবশ্য উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে বোলারের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সাব্বির। তবে কাজে আসেনি। সাবির আলির পরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন ডানহাতি এই ব্যাটার। সাব্বির আউট হয়েছেন শূন্য রানে। বিশ্বকাপে চারে খেলতে পারেন লিট দাস। এমন গুঞ্জন থাকলেও আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিনে নেমেছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
সাবিরের ওভারে একটি এবং আয়ান আফজাল খানের ওভারে দুটি চার মেরে ভালো শুরুও করেছিলেন লিটন। তবে উড়িয়ে মারতে গিয়ে জুনায়েদ সিদ্দিকীর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ৮ বলে ১৩ রান করা এই ব্যাটার। লিটনের পর আউট হয়েছেন ভুগতে থাকা মিরাজ। জাওয়ার ফরিদের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ১২ রান এই ব্যাটার।
মিরাজ ফেরার পরের ওভারে জীবন পান আফিফ হোসেন। সাবিরের বলে লেগ সাইডে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফরিদের হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে ক্যাচ লুফে নিতে না পারায় ২ রানে জীবন পান আফিফ। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরলেও ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি ইয়াসির আলি রাব্বি। কার্তিক মেয়াপানের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৭ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটার।
ইয়াসির ফেরার পর বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ। তবে তাদের দুজনের জুটি বড় হতে দেননি মেয়াপান। ডানহাতি এই লেগস্পিনারের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন মোসাদ্দেক। ডানহাতি এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ৩ রানে। এরপর অবশ্য নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন আফিফ। টপ অর্ডার ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও সাবলীল ছিলেন তরুণ এই ব্যাটার।
ফরিদের বলে এক রান নিয়ে ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আফিফ। যা তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এরপরই আরব আমিরাতের বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩ ছক্কা ও ৭ চারে ৫৫ বলে ৭৭ রানে অপরাজিত ছিলেন আফিফ। তাকে সঙ্গ দেয়া সোহান অপরাজিত ছিলেন ৩৫ রানে। আরব আমিরাতের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন মেয়াপান।
জেডআই/