প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২, ০৪:৩৮ পিএম
এক যুগের সাধনায় অবশেষে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছেন সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানি সরকার, মারিয়া মান্দারা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কাঠমণ্ডুর দশরথে রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। লাল সবুজ দলের মেয়েরা এখন সাফের নতুন চ্যাম্পিয়ন।
ট্রফি নিয়ে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশে ফিরছেন সাফজয়ী মেয়েরা। দুপুর ১২টায় কাঠমুন্ডু থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবে সোনার মেয়েরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে মেয়েদের স্বাগত জানাবে।
বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনে যাবেন ফুটবলাররা। ছাদখোলা বাস চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের নিয়ে কাকলি হয়ে, মহাখালি ফ্লাইওভার দিয়ে শহীদ জাহাঙ্গীর গেট যাবে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিজয় সরণী, তেজগাঁও, মৌচাক ফ্লাইওভার দিয়ে কাকরাইল যাবে। এরপর ফকিরেরপুল, আরামবাগ, শাপলা চত্বর দিয়ে পৌঁছাবে মতিঝিলের বাফুফে ভববে।
সেখানে সাফজয়ী ফুটবলারদের বরণ করবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তাদেরকে ফুলের স্টিক দিয়ে তিনি বরণ করে নেবেন। এরপর ফটোসেশন হবে। এখানেও হতে পারে একটি সংবাদ সম্মেলন। এরপর অফিসিয়ালি আপাতত রিসিপশনটা শেষ হবে। বাকি আরও বড় কোনো সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে কি না তা নির্ধারণ করবেন বাফুফে সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটি।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ তারকা কৃষ্ণা রানী ফেসবুকে ছাদখোলা বাসে শিরোপা উদ্যাপনের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘এমন মুহূর্তের অপেক্ষায়।’
ম্যাচের আগের দিন `ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই` বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় সানজিদার ভাইরাল হওয়া স্ট্যাটাসের সবচেয়ে আলোচিত অংশ এটি।
সানজিদার এই স্ট্যাটাসে মন ছুঁয়ে গেছে সবার। সানজিদাদের সেই আক্ষেপ মেটাতে ও বাংলার ক্রীড়াপ্রেমীদের দাবিতে সাড়া দিয়ে ছাদখোলা বাসের ব্যবস্থা করছে সরকার।
সাবিনাদের বিমানবন্দর থেকে বাফুফ ভবন পর্যন্ত ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন যে সানজিদা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, তারা বিজয়ী হলে হয়তো ছাদখোলা কোনো বাসে তাদের ট্রফি নিয়ে আসা হবে না। তার সে আক্ষেপ দেখে আমাদের অন্তরে ব্যথা লেগেছে। আমাদের দেশে যদিও ছাদখোলা কোনো বাস নেই। তারপরও আমরা তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করেছি। তাদেরকে ছাদখোলা বাসে বিমানবন্দর থেকেই সংবর্ধনা আমরা দেব। হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবন পর্যন্ত তাদের আমরা নিয়ে যাব। তাদের মনের আশা পূরণ করব।’
এদিকে মঙ্গলবারই (২০ সেপ্টেম্বর) সাফজয়ী মেয়েদের জন্য ছাদখোলা বাস প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। এ বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, `নারী ফুটবলের এই অর্জনে আমরা গর্বিত। তাদের সংবর্ধনা দিতে বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাসের ছাদ খুলে ফেলা হয়েছে। আশা করছি, এই প্রচেষ্টা নারী ফুটবল দল ও ফুটবলপ্রেমীদের জন্য কিছুটা হলেও আনন্দ দেবে।`
জেডআই/