প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০১:০৭ এএম
ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। স্বপ্নের সাথে শঙ্কাও ছিল বটে। কেননা প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। যাদের বিপক্ষে জয় ছিল অধরা। তবে সেই শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ইতহাস গড়েছে কৃষ্ণা-শামসুন্নাহারেরা। মাঠে দেখিয়েছে লাল-সবুজের দ্বৈরাথ্য। প্রথমবারের মত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতলো বাঘিনিরা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সেই ইতহাসের সাক্ষী হলো কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়াম।
রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে মাঠ জুড়ে মেয়েদের উল্লাস। আর সেই উল্লাস ততক্ষণে ছড়িয়ে যায় দেশের মাটিতেও। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অধরা শিরোপা জয় মেয়েদের। একইসঙ্গে সাফের নতুন চ্যম্পিয়নের তালিকা লাল-সবুজের নাম।
এর আগে ২০১৬ সালে ফাইনালে শিলিগুড়িতে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সিনিয়র ফুটবলে কখনো ভারত ও নেপালকে না হারানো বাংলাদেশ এবার তাদের হারিয়েছে। গ্রুপ পর্বে হারিয়েছে ভারতকে আর ফাইনালে নেপালকে।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি গোল করেনছেন কৃষ্ণা রানি সরকার। আর ১টি গোল করেন শামসুন্নাহার। নেপালের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আনিতা বাসেত।
ফাইনালের শুরু থেকেই খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছে বাংলাদেশই। ১৪ মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়র দুর্দান্ত গোল করেন। মনিকা চাকমার ক্রস থেকে শামসুন্নাহার জুনিয়র কোনাকুনি প্লেসিংকে করে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন।
এক গোলে পিছিয়ে পড়ে পুরো দশরথ স্তব্ধ হয়ে পড়ে। উজ্জীবিত নেপাল সমর্থকরা কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চুপ বনে যান। নেপাল ফুটবলাররা ম্যাচে সমতা আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। বিশেষ করে ৩০-৪০ মিনিট তারা বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে। বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা দু’টি দারুণ সেভ করেছেন।
নেপালের জালে বাংলাদেশ দ্বিতীয় গোল জড়ায় ৪২ মিনিটে। মিডফিল্ড থেকে বাড়ানো এক থ্রু পান কৃষ্ণা রাণী সরকার। বক্সের এক প্রান্তে আনমার্কড থাকা কৃষ্ণা আগুয়ান গোলরক্ষককে পরাস্ত করলে বাংলাদেশের ডাগআউট আবার উৎসবে মাতে।
দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক নেপাল অত্যন্ত চাপে রাখে বাংলাদেশকে। সেই চাপের ধারাবাহিকতায় ৭০ মিনিটে আনিতা বেসন্ত নেপালকে গোল করে ম্যাচে ফেরান। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণে বক্সের মধ্যে প্রবেশ করে কোনাকুনি শটে রুপনা চাকমাকে পরাস্ত করেন।
নেপাল আরও এক গোল দিয়ে সমতা আনার চেষ্টা করছিল। সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রাণী সরকার গোল করে বাংলাদেশকে জয়ের সুবাতাস দেন। ৭৭ মিনিটে মিডফিল্ড থেকে পাওয়া থ্রুতে তিনি আগুয়ান গোলরক্ষককে দারুণভাবে পরাস্ত করেন। কৃষ্ণার এই গোলের পর কোচ ছোটনের চিন্তার ভাঁজ কিছুটা কমে।
ম্যাচের বাকি সময় নেপাল গোলের জন্য চেষ্টা করে। বাংলাদেশ রক্ষণে দারুণভাবে সময় কাটায়। এই ম্যাচে কৃষ্ণা জোড়া গোল করেছে এর পাশাপাশি গোলরক্ষক রুপনা চাকমাও দারুণ খেলেছেন। পুরো ম্যাচে তিনি দুর্দান্ত কয়েকটি সেভ করেছেন। না হলে নেপালও আরো একটি গোল পেতেই পারত। তবে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
এআরআই