প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২২, ০৭:৪৩ পিএম
দীর্ঘ দিন সাদা পোশাকে
খেলেন না। চট্টগ্রাম টেস্টে মাঠে নামার আগে অনুশীলন ক্যাম্পেও যোগ দেননি। ঢাকা
প্রিমিয়ার লিগ খেলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে সময় কাটিয়ে দেশে ফিরে
করোনায় আক্রান্ত হন। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে করোনা মুক্ত হয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে
নামেন এ অলরাউন্ডার। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে কীভাবে বোলিং
করতে হয় তা শেখালেন সাকিব।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে সাকিব আক্রমণে আসেন লাঞ্চ বিরতিরও বেশ খানিক পরে। ততক্ষণে হয়তো ধারণা পেয়ে যান কীভাবে বোলিং করতে হবে সাগরিকার উইকেটে। টার্ন কিংবা বাউন্স কখনও সাকিবের শক্তির জায়গা ছিল না। লাইন-লেংথের ওপর ভরসা আর ব্যাটারকে পড়ে নিয়ে বুদ্ধির চাল।
এ দিন লাইন-লেংথ তো পারফেক্ট ছিল, গতিও কমিয়ে আনেন সাকিব। বেশির ভাগ বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের আশপাশে। বলের গতি কমিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে একনাগাড়ে বল করে গেছেন এ বাঁহাতি স্পিনার। বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়ার ফলে কিছু বাউন্সও আদায় করে নেন উইকেট থেকে। সাগরিকার মতো ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেটে ব্যাটারকে বেধে রাখতে একজন স্পিনারের যেটা আদর্শ বোলিং।
যে কাজটা চট্টগ্রাম টেস্টে স্পিনে সাকিবের দুই সঙ্গী নাঈম হাসান আর তাইজুল ইসলাম করতে পারেননি। তাইজুল তাও রান আটকে রাখেন। ওভারপ্রতি ৪.৪৩ রান দিয়ে সে হিসেবে বেশ খরুচে ছিলেন নাঈম। যদিও এই টেস্টে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সেরা বোলার নাঈমই। সোমবার আরও দুই উইকেট নিয়েছেন দীর্ঘদেহী এ স্পিনার। প্রথম দিন ১৬ ওভারে ৭১ রান দেন নাঈম। আজ সেজন্য কি না বেশ দেরিতে তাকে আক্রমণে আনা হয়। ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কার দুই উইকেটের দুটিই নিয়েছেন এ অফ স্পিনার।
উইকেটের জন্য অপেক্ষার প্রহর বাড়তে থাকা বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে স্বস্তি ফিরিয়েছেন নাঈম। তবে এক প্রান্ত থেকে চাপ তৈরি করার কাজটা করে গেছেন সাকিব। আগের দিন বেশ দেরিতে আক্রমণে আসলেও আজ দিনের ষষ্ঠ ওভারে সাকিবের হাতে বল তুলে দেন মুমিনুল হক। প্রথম স্পেলে ৭ ওভারে ১৪ রান দিয়ে উইকেটের দেখা না পেলেও উইকেটে হাঁসফাঁস করিয়েছেন দুই শ্রীলঙ্কান ব্যাটার দিনেশ চান্দিমাল আর সেঞ্চুরিয়ান অ্যাঞ্জলো ম্যাথুস। আজও গতি কমিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়ার পন্থায় হাঁটেন সাকিব। নিজে উইকেট না পেলেও অন্য প্রান্তে থেকে উইকেট নেওয়ার কাজটা সেরে রাখেন।
তবে লাঞ্চ বিরতির পর প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন সাকিব। দ্বিতীয় বলে বোল্ড করে ফেরান এক রান করা রামেশ মেন্ডিসকে। পরের বলে সাকিবের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া। জোরের ওপরে সাকিবের ভেতরে ঢোকা বলটা ব্যাটে ফাঁকি দিয়ে এম্বুলদেনিয়ার প্যাডে লাগে। আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো আউট দিলে রিভিউ নেন লঙ্কান ব্যাটার। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
বাংলাদেশ স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ বলেন, ‘সে (সাকিব) খুব ভালো বল করেছে আজ। সবচেয়ে ইকোনমিক্যালও ছিল।’ বোলার সাকিবের বুদ্ধিমত্তা হেরাথের পরের কথায় পরিষ্কার, ‘আমি তার ব্যাপারে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এমনকি প্রস্তুতি ছাড়াও সে ভালো কিছু করতে পারে।’
জেডআই/এএল