প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২১, ০৯:০০ পিএম
এবারের টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপে যাত্রাটা শুভ হয়নি
বাংলাদেশের। স্কটল্যান্ডের সঙ্গে হেরে সুপার টুয়েলভ অনিশ্চিত করে তুলেছিল
টাইগাররা। এমন অবস্থায় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের এক হাত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট
বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এতে কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছিলেন
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে মাহমুদউল্লাহর ক্ষোভকে ছেলেমানুষি হিসেবে দেখছেন পাপন।
গ্রুপে পরের দুই ম্যাচে স্বাগতিক ওমান এবং পাপুয়া নিউ গিনিকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে হারিয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করে লাল-সবুজ দল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি প্রধানকে উদ্দেশ্য করে নিজের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান টাইগার অধিনায়ক।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার নিয়ে সমালোচনা হবে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যখন আমাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, বলা হয় সিনিয়রদের স্ট্রাইকরেট কম থাকার কারণে বাংলাদেশ হেরেছে, তখন খারাপ লাগে। সমালোচনা করতে গিয়ে যখন আমাদেরকে ছোট করা হয়, তখন খারাপ লাগে।’
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) তার পাল্টা জবাব দিলেন নাজমুল হাসান পাপনও। বিসিবি সভাপতির মতে, রিয়াদের কথাবার্তা আবেগের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। বিশ্বকাপের মূল পর্বের খেলা শুরুর আগে বোর্ড প্রধান ও অধিনায়কের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ক্রিকেট মহলের অনেকেই।
বেসরকারি টেলিভিশনকে পাপন বলেন, 'দুইটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। যেটা ও বলল, তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলায় খারাপ লেগেছে। আমার মনে হয় না কেউ তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে... আমি একবারের জন্যও তাদের কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি। দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে সে বলেছে আমি তাদের অপমান করেছি। আমার মনে হয় এটা শুধু আবেগী কথা। আমি এখনও বলছি, প্রথম ম্যাচে তাদের পরিকল্পনা, দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভাব নিয়ে আমি খুশি ছিলাম না। '
তিনি আরও বলেন, ‘সে (মাহমুদউল্লাহ) বলল, তারা মানুষ কিন্তু একই সঙ্গে দলের সমর্থকদের সবাইও কিন্তু মানুষ আর বিসিবিতে যারা আছে তারাও। এখানে ব্যক্তিগতভাবে নেওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা যাই বলি না কেন দল ও দেশের জন্য বলেছি। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে না।'
এর আগে স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর পাপন তিন সিনিয়র খেলোয়াড় অর্থাৎ সাকিব-মুশফিক ও রিয়াদকে খোঁচা মেরে বলেছিলেন, 'কাউকে তিনে খেলাতেই হবে, কাউকে চারে খেলাতেই হবে- এটা তো ম্যাচের কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। তাই এটিও আরেকটি কারণ। ...ওরা কী ভেবেছিল জানি না। ওদের মাথায় কী চলছিল জানি না। তবে আমার বিশ্বাস, আমাদের ক্রিকেটাররা আরও বড় দলের বিপক্ষে ভালো খেলতে পারে।'
পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে বিশাল জয়ে সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করার পর মাহমুদউল্লাহ বলেন, 'অনেক প্রশ্ন এসেছে আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এ রকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি। আমরাও মানুষ। আমাদেরও অনুভূতি কাজ করে।'
জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি মনে করি, সে (মাহমুদউল্লাহ) এবং অন্য ক্রিকেটারদের একটি বিষয় বোঝা উচিত। যেমন সে বলেছে, আমরাও তো মানুষ। কিন্তু একইভাবে আমিও বলতে চাই, এ দেশে যারা তাদের সমর্থক তারাও মানুষ। বিসিবিতেও আমরা যারা আছি তারাও সবাই মানুষ। সুতরাং, এখানে ব্যক্তিগতভাবে নেওয়ার কিছুই নেই। কারণ, আমরা যাই বলি, সে সব কিছুই দলের জন্য, দেশের জন্য। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়।’
এ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে বিসিবি সভাপতির অনেক দিন থেকেই মন কষাকষি চলছে। যে কারণে দেখা গেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট চলাকালেই হঠাৎ করেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেন রিয়াদ। যদিও সেই ঘোষণাটা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দেননি তিনি। এখন দেখার বিষয় টি-টোয়েন্টিতে তার অধিনায়কত্ব বহাল থাকে না পরিবর্তন ঘটে?
জেডআই/এম. জামান