ক্রীড়া ডেস্ক
করোনাভাইরাস নিয়ে বিতর্কের জেরে ম্যাচ শুরুর ৭ মিনিটের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের মধ্যেকার ম্যাচটি। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বসচার পর শেষ পর্যন্ত ম্যাচ না খেলেই দেশে ফেরে আর্জেন্টাইনরা।
ঘটনার মূলে থাকা সেই চার খেলোয়াড়- সার্জিও রোমেরো, জিওভানি লো সেলসো, এমি বুয়েনদিয়া এবং এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে আপাতত দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ঝুঁকি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। সেখানেও যদি একই সমস্যা হয়? আর্জেন্টিনা আর ঝুঁকি নিতে চাইছে না। চাইছে না দেখেই সেই চার খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকে আপাতত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরকে বলা হয়েছে নিজ নিজ ক্লাবে ফিরে যাওয়ার জন্য। ফলে গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ও মিডফিল্ডার বুয়েন্দিয়া অ্যাস্টন ভিলার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন, ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরো ও মিডফিল্ডার জোভান্নি লো সেলসো পাড়ি জমিয়েছেন টটেনহামে। এর মধ্যেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টাইন ফুটবল সংস্থা।
ফলে বলিভিয়ার বিপক্ষে এই চারজনকে ছাড়াই পরিকল্পনা সাজাতে হবে কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। তবে এই চারজনের বিকল্প হিসেবে কাকে কাকে ডাকা হবে, সেটা এখনও নিশ্চিত করেনি আর্জেন্টিনা।
চারজনই আর্জেন্টিনা থেকে মাদ্রিদ হয়ে ইংল্যান্ডে না গিয়ে ক্রোয়েশিয়ায় যাবেন। সরাসরি ইংল্যান্ডে গেলে দুই সপ্তাহের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন কাটাতে হবে তাঁদের, ফলে দুটি ম্যাচে খেলতে পারবেন না। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ায় গিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সঙ্গনিরোধ করলে দশ দিনের মাথায় ছাড়া পাবেন, তখন দুই ম্যাচের জায়গায় এক ম্যাচ খেলতে পারবেন না তাঁরা। অ্যাস্টন ভিলার আগামী ম্যাচ চেলসির বিপক্ষে, ক্রোয়েশিয়া হয়ে ইংল্যান্ডে পা রাখলে শুধু ওই ম্যাচটায় খেলতে পারবেন না মার্তিনেজ-বুয়েন্দিয়া। এভারটনের বিপক্ষে পরের ম্যাচটায় ঠিকই খেলতে পারবেন।
একই কথা প্রযোজ্য টটেনহামের হয়ে খেলা রোমেরো-লো সেলসোদের জন্যেও। ১৪ দিন নয়, বরং ক্রোয়েশিয়ায় গিয়ে দশদিনের কোয়ারেন্টিন করলে শুধু ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ম্যাচটায় দেখা যাবে না তাঁদের। চেলসির বিপক্ষে পরের ম্যাচে ঠিকই ফিরবেন তাঁরা।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ঘটনাটা ফিফার দ্বার পর্যন্ত গড়িয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল জানিয়েছে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব যেহেতু ফিফার টুর্নামেন্ট, এ ম্যাচের রিপোর্ট ফিফার দরবারে জমা পড়বে, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফিফাই নেবে। যদিও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থগিত ম্যাচ থেকে আর্জেন্টিনার পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
কনমেবল শৃঙ্খলাবিধির ৭৪ নম্বর ধারায় বেশ স্পষ্টভাবে বলা আছে, ম্যাচ শুরু হয়ে গেলে খেলা থামিয়ে খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যাবে না। খেলতে বাধা দেওয়া যাবে না। খেলোয়াড়–সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে সেটা মেটাতে হবে ম্যাচ শুরুর আগে বা পরে, ম্যাচ চলাকালীন নয়। এমনটি হলে যে দলের কারণে ম্যাচ থেমে যাবে, সে দল তিন পয়েন্ট হারাবে। প্রতিপক্ষ দল পাবে সেই তিন পয়েন্ট। সে ক্ষেত্রে ব্রাজিলের কপালে দুঃখই আছে!
জেডআই/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন