• ঢাকা শনিবার
    ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১

পাতানো ম্যাচের অভিযোগে আজীবন নিষিদ্ধ আরামবাগের ৪ জন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২১, ০১:৪২ এএম

পাতানো ম্যাচের অভিযোগে আজীবন নিষিদ্ধ আরামবাগের ৪ জন

ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের একটি পুরাতন ইস্যু ম্যাচ পাতানো। তবে চলতি মৌসুমে নতুনত্ব ছিল বেটিং ও স্পট ফিক্সিংয়ে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বিষয়টির অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন। অনেক তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাথে সংশ্লিষ্ট চারজনকে আজীবন নিষিদ্ধ এবং আরামবাগ ক্লাবকে প্রথম বিভাগ ফুটবলে অবনমনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।

সংশ্লিষ্ট চারজন হলেন, মিনহাজুল ইসলাম, গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, মাইদুল ইসলাম শেখ (ভারতীয়), আরিফ হোসেন।

রোববার (২৯ আগষ্ট) এই শাস্তি প্রসঙ্গে বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটির চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি অনেকগুলো সভা করে। আমাদের কাছে তারা একটি রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্ট এবং আমাদের ডিসিপ্লিনারি কোডের ভিত্তিতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ 

বাংলাদেশের ফুটবলে পাতানো ম্যাচের জন্য আগে শাস্তি হলেও বেটিং কিংবা ফিক্সিংয়ের জন্য এ রকম শাস্তি এবারই প্রথম। এএফসি’র তদারকির জন্য বাফুফে গুরুত্ব সহকারেই এই তদন্ত করেছে এবার। 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ইতোমধ্যে রেলিগেশনে পড়েছে আরামবাগ। রেলিগেটেড হয়ে প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় স্তর বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলার কথা আরামবাগের। বেটিং শাস্তির জন্য তাদেরকে আরো এক ধাপ নিচে নামিয়েছে বাফুফের ডিসিপ্লিনারি কমিটি। এতে সিনিয়র ডিভিশন লিগে (প্রথম বিভাগ) খেলতে হবে দুই বছর আরামবাগকে। সিনিয়র ডিভিশন লিগে আরামবাগ চ্যাম্পিয়ন হলেও তাদেরকে দুই বছর কাটাতে হবে সিনিয়র ডিভিশনে। শাস্তির প্রথম বছর সিনিয়র ডিভিশন লিগ থেকে অবনমিত হলে অবশ্য দ্বিতীয় বিভাগে চলে যাবে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।

গত বছর আর্থিক সমস্যায় ছিল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য পৃষ্ঠপোষকদের হাতে ক্লাব পরিচালনার দায়িত্বও তুলে দেন ক্লাবটির পুরনো সংগঠকরা। তারা বিদেশি কোচিং স্টাফ, খেলোয়াড় এনেছিলেন। এদের মাধ্যমেই মূলত বেটিংয়ের যাত্রা শুরু হয়। এতে এম স্পোর্টসের স্বত্বাধিকারী মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ (সাবেক বসুন্ধরা কিংসের ম্যানেজার), সাবেক টিম ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশো, সাবেক ফিটনেস ট্রেনার ভারতীয় নাগরিক মাইদুল ইসলাম শেখ এবং সাবেক টিম সহকারি ম্যানেজার আরিফ হোসেনকে ফুটবল থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

দশ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে আরো দুই ভারতীয় কোচিং স্টাফকে। ফিজিও সঞ্জয় বোস এবং সহকারী আজিজুল শেখ দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক খেলোয়াড় আপেল মাহমুদ নিষিদ্ধ হয়েছেন পাঁচ বছরের জন্য। 

তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন আরামবাগের সাবেক খেলোয়াড় আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, রকি, জাহিদ হোসেন, রাহাদ মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, শামীম রেজা, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান । দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সাবেক নাইজেরিয়ান খেলোয়াড় চিজোবা। ওমর ফারুক, রকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ ও মেরাজ মোল্লাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

অবনমন ও নিষিদ্ধের পাশাপাশি ক্লাবকে পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। সেই জরিমানার অর্থ আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

বাফুফে আরামবাগের চারটি ম্যাচ ও ব্রাদার্সের কয়েকটি ম্যাচে স্পট ফিক্সিংয়ের সন্দেহ করেছিল। পাতানো খেলা শনাক্তকরণ কমিটি অবশ্য ব্রাদার্সের ম্যাচগুলোতে সেভাবে সম্পৃক্ততা পায়নি। আরামবাগের ম্যাচগুলো নিয়ে তদন্ত শেষে রিপোর্টের ভিত্তিতে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি। 

ইফাত

ক্রীড়া জগৎ সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ