• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

পুতুল খেলা নিয়ে ইসলামে যা বলা হয়েছে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ১১:০৬ পিএম

পুতুল খেলা নিয়ে ইসলামে যা বলা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

যে সকল বস্তুর প্রাণ আছে, এমন প্রাণীর চোখ,কান, মুখ থাকা অবস্থায় উক্ত প্রাণীর ছবি আঁকা, তা ব্যবহার করা, তার ঘরে রাখা এবং তা দিয়ে খেলাধুলা করা কোনটিই জায়েজ নয়। তাই বাচ্চাদের জন্য প্রাণীর পুতুল দিয়ে খেলা জায়েজ হবে না। চোখ-মুখ না থাকলে তথা প্রাণির অবস্থান পরিস্ফুটিত না হলে ব্যবহার করার সুযোগ আছে। যেমন হযরত আয়শা সিদ্দিকা রা. কাপড়ের পুতুল দিয়ে খেলেছিলেন। এসবের চোখ-কান তথা মুখের অবয়ব ছিল না।

হজরত আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, ঐ ঘরে ফেরেস্তা প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর বা প্রাণীর ছবি থাকে।(সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৯৪৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৭৭২)

 

হজরত আয়শা রা. বর্ণনা করেন। আমাদের একটা পর্দা ছিল। এতে পাখির ছবি ছিল। যখন কেউ ভিতরে আসত তখন এ ছবি তার সামনে পড়ত। রাসূল সা. আমাকে বললেন, এটি উল্টিয়ে দাও, কেননা, যখনই আমি ভিতরে আসি, আর এটা দেখি, দুনিয়ার কথা মনে পড়ে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৩)

হজরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সা. সফর থেকে ফিরে আসলেন। আমি আমার দরজায় ডানাযুক্ত ঘোড়ার ছবি সম্বলিত একটি রেশমি পর্দা টানিয়ে রেখেছিলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিলেন, এবং আমি তা সরিয়ে ফেললাম। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৫)

হজরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমার কাছে আসলেন। আমি তখন ছবিযুক্ত একটি পর্দা টানাতে ব্যস্ত ছিলাম। তা দেখে তাঁর চেহারার রঙ পরিবর্তন হয়ে গেল। অতঃপর পর্দাটা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি তাদের হবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির সাদৃশ্য তৈরী করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৪৭)

আরেক হাদিসে হজরত সাঈদ বিন আবুল হাসান বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রা. এর কাছে এসে বলল, আমি চিত্রকর। এবং চিত্র অংকন করি। এতএব এ সম্পর্কে আমাকে শরীয়তের বিধান বলে দিন। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তাঁর কাছে গেল। তিনি পুনরায় বললেন, আমার কাছে আস। সে ব্যক্তি তার এত কাছে গেল যে, ইবনে আব্বাস রা. তাঁর হাত ঐ ব্যক্তির মাথার উপর রাখলেন, এবং বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে এমন একটি হাদীস শুনাচ্ছি, যা আমি রাসূল সা. এর কাছে শুনেছি। আমি রাসূল সা. কে বলতে শুনেছি যে, “সকল চিত্রকরই দোযখে যাবে। আর প্রত্যেক চিত্রের পরিবর্তে জীবিত এক ব্যক্তিকে বানানো হবে, যা দোযখে তাকে শাস্তি দেবে”। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যদি তোমাকে এরূপ করতেই হয়, তাহলে গাছ-পালা বা এমন বস্তুর ছবি তৈরী কর যা প্রাণী নয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬৬২)

যদি পুতুলের পরিপূর্ণ মাথা না থাকে; অর্থাৎ পুতুলের যদি চোখ, কান, নাক কিংবা মুখ দেওয়া না হয়, তবে ছোট বাচ্চাদের জন্য এ ধরনের পুতুল তৈরি করা এবং তাদেরকে খেলতে দেওয়া জায়েজ আছে।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস এবং আবু হুরায়রাসহ আরো অনেক সাহাবী (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ছবির মাথা নেই সেটি পূর্ণাঙ্গ ছবি নয়; তাই তা জায়েজ আছে।

আর্কাইভ