প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ১১:৪০ পিএম
রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জের বামনশূলে কিংস্টার হাউজিংয়ে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা। এ উপলক্ষে সেখানে তাবলীগ জামাতের তিন চিল্লা ও এক চিল্লার মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। ঠিক যেমন ঢল নামে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায়।
দেশের ৬৪টি জেলার তাবলীগের সাথীদের উপস্থিতিতে সোমবার সকাল থেকেই বামনশূলের কিংস্টার হাউজিংয়ের সুবিশাল মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আশা করা হচ্ছে এই জোড়ে দেড় লাখ মুসল্লির সমাগম হবে।
জানা যায়, গত ৫৬ বছর ধরে টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমার স্বাগতিক দেশ ও প্রস্তুতি হিসাবে এই জোড় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই জোড়ে তাবলীগের পুরো বছরের সারাদেশের কাজের রিপোর্ট পেশ করা হয়। আবার আগামী এক বছরের কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
জোড় থেকে দেশি-বিদেশি জামাত বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াতের জন্য পাঠানো হয়। বিশ্ব ইজতেমার মতোই এ জোড়েও তাবলীগ জামাতের মূলধারা কেন্দ্রীয় বিশ্ব মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরুব্বিগণ গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন।
কেরানীগঞ্জের পাঁচ দিনের জোড়ে মঙ্গলবার বাদ ফজর সূচনা বয়ান করেন দিল্লির মাওলানা জামশেদ। সেই বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন কাকরাইল মসজিদের মাওলানা মুনির বিন ইউছুফ। সকাল ১০টায় বয়ান করেন দিল্লির মাওলানা আব্দুস সাত্তার, সেটি বাংলা তরজমা করেন মাওলানা জিয়া বিন কাসেম।
মঙ্গলবার জোহরের পর বয়ান করবেন কাকরাইলের মুরব্বি খান শাহাবুদ্দিন নাসিম। আসরের পর থেকে বিভিন্ন জেলার তাবলীগের কাজের কারগুজারী (রিপোর্ট) শোনা হবে।
এ বিষয়ে কাকরাইল মসজিদের শীর্ষ মুরব্বি ও তাবলীগ জামাতের আহলে শূরা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম জানান, পাঁচ দিনের জোড় তাবলীগের একটি ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ দ্বীনী জামাত। এর সফলতার ওপরই টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি ও আগামী এক বছরের কাজের অগ্রগতি নির্ভর করে।
তাবলীগের সাথী মো. সায়েম জানান, আগামী ১৩ জানুয়ারি ও ২০ জানুয়ারি দুই পর্বে টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা হবে। দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের তাবলীগের মুরব্বিদের তত্বাবধানে ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
টঙ্গীর ময়দানে গত দুই বছর বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই ইজতেমার ময়দানে প্রচুর সংস্কার কাজ বাকি থাকায় সরকারের পরামর্শে কেরানীগঞ্জে এই জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জামিয়া কাশিফুল উলুম ঢাকার মুহতামিম বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও লেখক মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ জানান, এই পাঁচ দিনের জোড়ে ১৯টি দেশের প্রায় ৬০০ বিদেশি মেহমান উপস্থিত হয়েছেন। পাঁচ দিনের ভেতর এই জোড় ইজতেমায় ১৫০০ বিদেশি মেহমান উপস্থিত হবেন বলে আশা কর যাচ্ছে।
বিদেশি মেহমানরা বিশ্ব ইজতেমা পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় দাওয়াতি কাজ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ ২ লাখের মতো ৩ চিল্লার সাথী আছেন। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ এই জোড় ইজতেমায় দেড় লক্ষাধিক ৩ চিল্লার সাথী উপস্থিত হবেন।
মঙ্গলবার থেকে ৩ ডিসেম্বর শনিবার পাঁচ দিনব্যাপী এই জোড় ইজতেমায় অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার ১০টা থেকে হেদায়েতের বয়ানের পর এই জোড় ইজতেমার আখেরি মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
আইএ/