• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১

দ্রুত নির্বাচন না হলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে: ফখরুল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

দ্রুত নির্বাচন না হলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে: ফখরুল

সিটি নিউজ ডেস্ক

দ্রুত নির্বাচন না হলে অন্যান্য শক্তির উত্থান হতে পারে- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে বঞ্চিত জনগণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করার একটা সুযোগ পাবে। জোর করে এ বিষয়টাকে যদি বিতর্কিত করে ফেলা হয় তাহলে তো জনগণ আবার সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে শহিদ আসাদ দিবসের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যে অভিজ্ঞতা তা থেকে দেখেছি, এই ধরনের নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, সময়ক্ষেপণ করা হয়, তাহলে অন্যান্য শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। তখন জনগণের যে চাহিদা তা থেকে তারা পুরোপুরিভাবেই বঞ্চিত হয়।

তিনি বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষতা পালন করতে পারছে না। আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সেই নিরপেক্ষতা পালন করবে। যে সংকট আছে তা থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তারা কাজ করবে।

ন্যূনতম বিষয়ে ঐকমত্য জরুরি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ন্যূনতম বিষয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। যারা একসঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন করেছিলাম, আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। এখন যদি কোনো পরিবর্তন করতে হয়, পরিবর্ধন করতে হয় সেটাও সামনে আসতে পারে। ওটাকে সামনে রেখেই আমাদের এগোতে হবে।  নির্বাচন কেন্দ্রিক ন্যূনতম যে সংস্কার তা শেষ করে অতি দ্রুত নির্বাচনের পথে যাওয়া উচিত। এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার বেরিয়ে আসবে তাদের দায়িত্ব হবে পুরোপুরিভাবে সেই সংস্কারের যে কমিটমেন্ট তা বাস্তবায়িত করা, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা। আসাদের রক্তকে, আবু সাঈদের রক্তকে আমরা বৃথা যেতে দিতে পারে না। সেজন্য ঐক্য গড়ে তুলে তাদের (শহিদদের) স্বপ্নকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।

শহিদ আসাদ পরিষদের উদ্যোগে এই ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের নায়ক শহিদ আসাদের ৫৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একথাটা বারবার বলতে চাই, নির্বাচনে কে আসবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তার জন্য আমরা লড়াই করেছি দীর্ঘ ১৫ বছর। সেই কারণে বলেছি, সত্যিকার অর্থেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। স্বাভাবিকভাবে একটা ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের পরেই জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এখন পর্যন্ত সমাজের যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সেই অবস্থায় কিন্তু আমরা সেই ধরনের একটা ব্যবস্থা দেখে এখনো নিশ্চিত হতে পারছি না যে দেশের মানুষের প্রত্যাশাগুলো পূরণ হবে।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, আমলাতন্ত্র আগের যে ব্যবস্থা ছিল সেই ব্যবস্থায় তারা এখনো সচিবালয় থেকে শুরু করে সব প্রশাসনে একইভাবে তাদের ভূমিকা পালন করছে। কোনো রদবদল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল-কলেজগুলোতে সেই ধরনের লেখাপড়া হয় না, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এটা অতীত থেকেই আসছে। এবং সেই পরিবর্তন এতো অল্প সময়ের সম্ভবও নয়। কিন্তু আমরা সেই পরিবর্তনগুলো চাই। সেই কারণে বলেছি, নির্বাচনটা দ্রুত হওয়া দরকার। নির্বাচন দ্রুত হলে যে দল ক্ষমতায় আসবে তার যে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট টু পিপলস থাকবে, সেই কমিটমেন্টগুলো পালন করার জন্য অবশ্যই তারা দায়বদ্ধ থাকবে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জহিরউদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণসংহতি আন্দোনের জোনায়েদ সাকি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) একাংশের খন্দকার লুৎফুর রহমান, অপর অংশের আসাদুর রহমান খান আসাদ, শহিদ আসাদের ছোট ভাই আজিজুল্লাহ এম নুরুজ্জামান নূর প্রমুখ।

রাজনীতি সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ