প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪, ১২:৩৫ এএম
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ অন্তর্বর্তী সরকার ও ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কোনো বিশেষ দলকে ক্ষমতায় বসানোর উদ্দেশ্যে নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণ করলে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণের কোনও সুযোগ নেই। কোনো দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য যদি বর্তমান সরকার পরিকল্পিত বিলম্ব করে, তাহলে ১৭ মিনিটেই সরকারের পতন ঘটবে।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর বনানীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে এক র্যালিতে অংশ নিয়ে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) উদ্যোগে র্যালিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজয় র্যালিটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনানী মাঠে হয়ে গুলশান ডিসিসি মার্কেটে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দলটি।
আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, ‘ভাইয়েরা, তোমাদের মনে রাখতে হবে—তোমরা হয়তো ১০ বলে ২০ রান করেছো। কিন্তু ১৮০ রান বাংলাদেশের মানুষেরা করেছেন গত ১৭ বছরে। তোমাদের এই অশ্রদ্ধা, তোমাদের এই কথা বলার ধরন দেখে আমাদের মনে হয়, তোমাদের মধ্যে ইচ্ছা আশা-আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, তোমরা নির্বাচন করে এই সরকারে থাকবা। আমার কোনও অসুবিধা নাই। তোমরা দল করো, তোমরা নির্বাচন করো, কিন্তু কোনও দলকে ক্ষমতায় আনতে নির্বাচনকে কোনোভাবে বিলম্বিত করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দেয় নাই। আমরা জনগণের কথা বলি। তোমরা যদি কোনোভাবে সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করো নির্বাচন বিলম্বিত করার জন্য, তাহলে মনে রাখতে হবে—তোমরা সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান করছো। আর সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান করলে আমার ভাইয়েরা একটা জিনিস পরিষ্কার, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের ১৭ বছর লেগেছে, তোমাদের মাথা খারাপ হতে ১৭ মিনিটও লাগবে না। আমরা তোমাদের সহযোগিতা করতে চাই। আমরা উন্নয়নমুখী, আমরা সংস্কারমুখী আর তাই নির্বাচন চাই। নির্বাচনমুখী একটা সংস্কার চাই।`
ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে প্রতীয়মান এই সরকার হয়তো আর এক বছর থাকবে। সরকারকে আমরা অনুরোধ করবো—সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেন। ইউনূস সাহেব, অর্থনীতি আর রাজনীতি এক না। অর্থনীতিতে দুই আর দুই মিলে চার হয়, রাজনীতিতে দুই আর দুই মিলে ২২ হয়।’
পার্থ বলেন, ‘আপনি বা আপনারা উপদেষ্টারা বাজারে গিয়ে দেখেন, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। আমি বলেছিলাম জনসম্পৃক্ত কিছু উপদেষ্টা রাখুন। আজকে যিনি বাণিজ্য উপদেষ্টা অনেকে তার নামও বলতে পারে না। এভাবে করে আপনি হয়তো থাকতে পারেন, কিন্তু আপনার প্রতি মানুষের ক্ষোভ বেড়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জিত হলেও দেশের মানুষ এখনো মুক্তির স্বাদ পায়নি। ভালো মানুষ এবং সৎ নেতৃত্ব ছাড়া রাজনীতিতে কোনও সংস্কার সম্ভব নয়।
এ সময় তরুণ প্রজন্ম এবং শিক্ষিত মানুষদের রাজনীতিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পার্থ বলেন, `১৭ বছর পর এবার স্বাধীনভাবে বিজয় দিবস পালনের সুযোগ এসেছে। এ সুযোগ আর নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’
‘পলিথিন বন্ধ, হর্ন রোধ—এগুলো এই সরকারের কাজ না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা ঠিক করেন কী কাজ করবেন। আমরা কথা দিচ্ছি সব ধরনের সহযোগিতা করবো।’
পার্থ আরো বলেন, ‘এখনো আমরা দেখি আওয়ামী লীগ আমলের দুর্নীতিবাজরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। দরবেশ সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতার করেছেন এজন্য সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সামিটের আজিজ খানকে এখনো ধরতে পারেননি। আপনি এস আলমের মতো মানুষকে এখনো ধরতে পারেননি। আমরা শুনি তারা বীরদর্পে বিদেশে ঘুরে বেড়ায়। আপনি এখানে আসছেন, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে আপনার প্রোফাইল সবচেয়ে বড়, আপনি সেটা ব্যবহার করুন। তাদেরকে দেশে নিয়ে আসুন। বাংলাদেশের মানুষ দেখতে চায় এই অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহিতা যাদের তাদের বাংলাদেশের মাটিতে ফাঁসি হচ্ছে। যারা বাংলাদেশের লক্ষ কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে তাদের বিচার করতে হবে।’