প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ০৮:১০ পিএম
যে যেই রাজনীতিতেই বিশ্বাস করুক না কেন, একটি জায়গায় এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে না পারলে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া যাবে না। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো কিছু সম্ভব না। ভোট যাতে হয়, সেই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। ষড়যন্ত্র রুখতে হলে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবো না, ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো কিছু করতে পারবো না।
শনিবার বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভা থেকে ১০ নভেম্বর থেকে আগামী তিনমাস প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তারেক রহমান বলেন, দেশে জনগণ ও জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেকে নেই। প্রতিনিয়তই পত্র-পত্রিকার নিউজ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে, টেলিফোন আলাপের মাধ্যমে সবাই এই ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারছেন। ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই একই কথাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি বলেন, যে যেই রাজনীতিতেই বিশ্বাস করুক না কেন, একটি জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে। যে যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে, কিন্তু ভোট যাতে হয় এই ব্যবস্থাটা যেকোনো মূল্যে করতে হবে। ভোট হতে হবে। সকাল থেকে বিকাল যাকে ইচ্ছা তাকে নিশ্চিন্তে, নিরাপদে ভোট দেব। এটার সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ (আপস) নাই। তারপর জনগণ যাকে ভালো মনে করে ভোট দেবে, যাকে ভালো মনে করবে না তাকে ভোট দেবে না। কিন্তু ডামি নির্বাচন, নিশিরাতে ভোট হতে পারবে না। দিনের আলোতে ভোট হতে হবে। যাকে খুশি তাকে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। নিরাপদে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। ভোট দেওয়ার সময় কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করতে পারবে না। যাবে (ভোটকেন্দ্রে), লাইন ধরবে, ভোট দেবে, চলে যাবে। তার (ভোটার) মত সে প্রকাশ করবে, কোনো ভয়ভীতি থাকবে না।
তারেক রহমান আরও বলেন, নিরপেক্ষভাবে ভোট হতে হবে। এটার সঙ্গে কোনো সমঝোতা নাই। যদি এটি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে ধীরে ধীরে আমরা দেশের সমস্য সমাধান, মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারবো।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শহিদ জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি শুরু করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক জায়গা আছে যেখানে দেশের কৃষক প্রয়োজনীয় পানি পায় না। ফসল উৎপাদনে বাধাগ্রস্ত হয়। খাল খননের মাধ্যমে শহিদ জিয়া পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যেখানে একটি ফসল হতো সেখানে পানির কারণে দুইটি হয়েছিল, দুইটি ফসলের জায়গায় তিনটি ফসল হয়েছিল।
তারেক রহমান বলেন, কৃষক দলকে কৃষকনির্ভর করে গড়ে তুলতে হবে। কৃষক সমাবেশে কৃষকদের সমস্যা শুনতে হবে। তারপর সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশের নারীদের বড় একটা অংশ কৃষির সঙ্গে জড়িত। তাই কৃষির প্রতি নজর দিতে হবে। আমরা প্রতিবার চেষ্টা করেছি কৃষি সমস্যার প্রতি নজর দিতে। খালেদা জিয়ার সময় ৫ হাজার পর্যন্ত কৃষি ঋণ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছিল। ফসলের মৌসুমে বিদ্যুৎ বিল সরকার বহন করতো। যার মধ্য দিয়ে কৃষকদের কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে।
কৃষকের বীজের সমস্যার সমাধান করা যায়নি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় ফসল নষ্ট হয়, সেজন্য আমরা কৃষি বিমার কথা চিন্তা করেছি। অনেক সময় মহাজন থেকে ঋণ নেয়, যা কৃষকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সেখান থেকে আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে এই সমস্যাটা আর হবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মতে, ২০ কোটি মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন করতে হলে কৃষির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এত মানুষের জন্য খাদ্য আমদানি সম্ভব না। তাই যেগুলো মৌলিক খাদ্য সেগুলো দেশেই উৎপাদন করতে হবে। তাই কিভাবে কৃষি জমি বাড়ানো যায় সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। কিছু পদক্ষেপ আছে যেগুলো করলে কৃষি জমি বাড়ানো যায়, এটা একমাত্র সম্ভব ক্ষমতায় গেলে।