• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সংবাদ সম্মেলন

এখনো মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাজ করছে : ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২৪, ০১:২৮ পিএম

এখনো মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাজ করছে : ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, কোনো অবস্থাতেই দেশের মানুষকে নিরাশ করা যাবে না। আমাদের সবাইকে সরকারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রয়োজনে দক্ষ, শিক্ষিত এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে, উপদেষ্টাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করুন এবং নিয়মিত রাজনীতিতে অভিজ্ঞজনের পরামর্শ নিন। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রায় দুই মাস সময় পূর্ণ করেছে। এ সরকারের কাছে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক, তবে এখনো মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাজ করছে। কারণ সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। 

শনিবার সকালে রাজধানীর মগবাজারের এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

কর্নেল অলি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয় যে, তাদের অনেকেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি দুর্বল। অথচ ওই আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকার গণআন্দোলনের সময় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিশেষত গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন ও ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, বিচারব্যবস্থা ও নির্বাচন পদ্ধতি ধ্বংস করেছে। সর্বস্তরে আত্মীয়করণ ও দলীয়করণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম-খুন, জনগণের ওপর নির্যাতন-জুলুম, মেগাপ্রকল্পের আড়ালে ব্যাপক দুর্নীতি, বিশাল ঋণ নিয়ে লুটপাট এবং বিদেশে লক্ষকোটি টাকা পাচার— এসব নজিরবিহীন অপরাধ সংঘটিত করেছে। সুতরাং এই দেশে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, তাদের নিবন্ধন বাতিল-করার জন্য আরও কত মানুষ শহিদ হওয়ার প্রয়োজন ছিল? বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যুক্তিযুক্ত। অন্যথায় শহিদদের রক্ত বৃথা যাবে। সময় সীমিত, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং আবেগের পরিবর্তে বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিন।

অলি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে শেখ মুজিবুর রহমান স্বেচ্ছায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশেও তার স্বেচ্ছাচারী শাসনে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা বারবার নিগৃহীত হয়েছেন। তিনি কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক বা জাতির পিতা হতে পারেন না। তার একনায়কসুলভ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাজারও মানুষ খুন এবং গুম হয়েছেন, কিন্তু তবুও তার প্রতি একটি ব্যক্তিপূজার সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। এখনো বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে শেখ মুজিব এবং তার পরিবারের সদস্যদের নাম বিদ্যমান রয়েছে। এই নামগুলো অবিলম্বে পরিবর্তন করা জরুরি এবং ব্যক্তিপূজার অপসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে। 

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করতে গিয়ে, ছাত্র জনতার যে আন্দোলন হয়, গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ যাবৎ সর্বমোট ১৫৮১ জন শহিদ হয়েছে। সরকারের উচিত, জনসম্মুখে তুলে ধরা— কতজন ছাত্রছাত্রী, কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শহিদ হয়েছে? কোন রাজনৈতিক দলের কতজন শহিদ হয়েছে, এবং সাধারণ মানুষ কতজন শহিদ হয়েছে? এছাড়াও অনুরূপভাবে আহতদের তালিকাও প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এতে করে জনগণ একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাবে। এলডিপির শহিদ হয়েছে ৪ জন, অঙ্গহানী হয়েছে ৪ জন, আহত হয়েছে ১৫ জন। 

আর্কাইভ