প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৩, ০৩:১৯ এএম
আগামী নির্বাচন নিয়ে এবার সরকারের কোনো ‘রণকৌশলই’ কাজে লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক কুজ্ঝটিকা এতটা ঘন হয়েছে যে, সরকার তার অপকর্ম আড়াল করতে পারবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন জয়যুক্ত করতে দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রাজ্ঞ ও দুরদর্শী নেতৃত্বে গণতন্ত্রকামী মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে শেখ হাসিনার কোনো রণকৌশলই কাজে লাগবে না। কারণ তিনিই হচ্ছেন বর্তমান দুঃসময়ের সৃষ্টা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব এদেশের পরিচিত একজন রাজনীতিবিদ। এখন দেখি সহসাই তিনি গিরগিটির মতো রং পরিবর্তন করেন। পরশুদিন যা বলেন, আজকে সেটা পরিবর্তন করে ফেলেন। রূপ বদলানো, রং বদলানো আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। কারণ তারা সত্যের ওপর, ন্যায়ের ওপর দেশ পরিচালনা করছে না। মিথ্যার বিভ্রান্তি হচ্ছে তাদের একমাত্র রাজনৈতিক কৌশল।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের ওপর বিদেশিদের কোনো চাপ নেই বলে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রীদের বক্তব্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, বিদেশিরা আগামী নির্বাচন নিয়ে কারা কি বলছেন, এর আগে ঢাকায় যেসমস্ত কূটনীতিক ছিলেন বা এখান থেকে যারা বদলি হয়ে গেছেন তারা কি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, অধিকার সংগঠন এবং রাষ্ট্রীয় যে সমস্ত সংস্থাগুলো আছে তারা কি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট কি বলেছে, এখানকার বিদায়ি জাপানি রাষ্ট্রদূত কি বলেছেন, গণতান্ত্রিক বিশ্ব বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কি মন্তব্য করেছে, কি বিবৃতি দিয়েছেন সেটা নিশ্চয়ই আপনাদের জানা আছে। আপনারা জানেন, দেশবাসী জানে।
এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয় উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কি হতে পারে সেই দৃষ্টান্ত দেশবাসীর কাছে আছে, আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছেও আছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠেছে যে, আপনার ব্যালট পেপার স্টাফিং এটা কোনো একটি জেলা চট্টগ্রামের একটি উপনির্বাচনে কিভাবে ব্যালট বাক্সপূর্ণ করে নিয়ে আসা হচ্ছে সেটার তথ্যচিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিতেও দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের অধীনে আমরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচন দেখলাম। তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছে তাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। কারণ তারা দিনের আলোতে ভোট করতে চান না, আর ভোট করলেও ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেন না। সুতরাং বিএনপি এদের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
তিনি ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বলেন, যদি বুকে সাহস থাকে তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিন। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আপনাদেরই দাবি ছিল। সেই দাবি জনগণের স্বার্থে বিএনপি মেনে নিয়েছিল। তাহলে এখন কেন নয়? জোর করে আপনারা ১৪/১৫ বছর ক্ষমতায় আছেন। লুটপাটের মহাস্বর্গ তৈরি করেছেন জনগণকে ক্ষুধা-অনাহারে রেখে। সেই স্বর্গ থেকে বিদায় নিতে চাচ্ছেন না ওবায়দুল কাদের সাহেবরা- এই কারণে তারা মিথ্যার বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ফজলুল হক মিলন, মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, আসাদুল করীম শাহিন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, উলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, কৃষক দলের ওমর ফারুক শাফিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেকেএস/