প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৩, ০৩:০৪ এএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে মিডিয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবগুলোকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। দেশকে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। এখনো সাংবাদিকরাও কিছু লিখতে পারে না। তাদেরও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দেওয়া হচ্ছে।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে বিএনপির সদর উপজেলা দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের খারাপ কাজগুলো নিয়ে সমালোচনা করা তো কোনো রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয়, এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম। এই সরকারের তাদের অন্যায় সর্ম্পকে কেউ কিছু বললেই মামলা দিয়ে দাবিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু গণতন্ত্রের নিয়ম হচ্ছে সরকারের খারাপ কাজ নিয়ে সমালোচনা করতে হবে। তবে এই সরকার সেটা করতে দিতে চায় না। জাতিসংঘ বলছে, সারা দেশের মানুষ এক হয়ে বলছে, ডিজিটাল আইন বাতিল করতে হবে। তখন অইনমন্ত্রী বলছেন- এ আইন বাতিল করা যাবে না ।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন আইন তৈরি করেছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে যেন কেউ কথা বলতে না পারে সেজন্য তারা আইন, মামলা দিয়ে সবাইকে ভয় দেখায়। এই সরকার দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তাও করে না। তারা প্রতি পদে পদে দেশকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ভাগ করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে কারও পরিবার বা বংশে বিএনপির কেউ থাকলে তাদের চাকরি হয়ও না। সরকার সব ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ভাগ করে বিভাজন সৃষ্টি করছে; এ সরকার গণতন্ত্রের সরকার হতে পারে না। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম সারীর দল হলেও ক্ষমতায় আসার পরেই প্রথমবার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিল।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল আজ একমত হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। গায়ের জোরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। এরপরও সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামেও মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে নির্বাসিত করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, জাতি আজ একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে এ দেশে গণতন্ত্র থাকবে কী থাকবে না। স্বাধীনতা থাকবে কী থাকবে না। মানুষের অধিকার থাকবে কী থাকবে না। মানুষ ভোট দিতে পারবে কী পারবে না। সমস্ত শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে সমস্ত মানুষকে নিয়ে ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্রের সরকার ফিরিয়ে আনার আহবান জানান তিনি।
বিকালে মির্জা ফখরুল ঠাকুরগাঁও পৌর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন শেষে আব্দুল হামিদ সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মাহবুব হোসেন তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিস্ট কমিটি গঠন করা হয় ।
নুর করিমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ হক মাসুদ, সুলতানুল ফেরদৌস নূর চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, আনসারুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস প্রমুখ।
জেকেএস/