ওবায়দুল কাদের (ফাইল ছবি)
সিটি নিউজ ডেস্ক
বিএনপিকে সাম্প্রদায়িকতার বিশ্বস্ত ঠিকানা আখ্যায়িত করে তাদের প্রতিহত করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির পতনযাত্রা শুরু হয়েছে। তারা আন্দোলনের খেলায় হেরে গেছে। আন্দোলনের খেলায় তারা আর পারবে না। নির্বাচনে না এলে তাদের অস্তিত্বই টিকবে না।’
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট তালিমপুর-তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপির আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্দোলন শুরু করেছে। কিসের আন্দোলন! আন্দোলন দেখেছেন? পথ হারিয়ে পথিক এখন দিশেহারা। এখন পদযাত্রায় নেমেছে। গণআন্দোলন থেকে পদযাত্রা। পতনযাত্রা শুরু হয়েছে বিএনপির। তারা শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে পারে না। কারণ, পদ্মা সেতু দেখলে তাদের গায়ে জ্বালা ধরে। মেট্রোরেল, ঘরে ঘরে বিদ্যুত তাদের জ্বালা। বিএনপি অন্তর্জ্বালায় ভুগছে। অন্তর্জ্বালায় শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘খেলা হবে। আন্দোলনে হবে। নির্বাচনে হবে। মোকাবিলা হবে। নৌকা চলবে ভাসিয়া, ভোট দেবেন আসিয়া। আন্দোলনের খেলায় তারা আর পারবে না। তারা হেরে গেছে আন্দোলনের খেলায়।’
সারা দেশে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি চলমান থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাল্টাপাল্টি নয়, নির্বাচন পর্যন্ত সারা দেশে আমাদের কর্মসূচি চলবে, আন্দোলন চলবে। আন্দোলন করতে জনগণ লাগে। বিএনপির সঙ্গে জনগণ নেই। কিন্তু অগ্নিসন্ত্রাসী আছে। পেট্রোল বোমা, ককটেল আছে। অস্ত্র-লাঠি আছে। এই অপশক্তি ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অল্প শক্তি দিয়ে বড় বড় ভয়ংঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা একজনকে সৃষ্টি করেছেন স্বাধীনতার জন্য, একজনকে মুক্তির জন্য। বঙ্গবন্ধু দেশ দিয়েছেন আর শেখ হাসিনা মানুষকে মুক্তি দিচ্ছেন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। তিনি কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াকে শহর বানিয়ে দিয়েছেন।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দোষ নেই কিন্তু আমরা মূল্য দিচ্ছি। বড় বড় দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা করে যে অবস্থার সৃষ্টি করছে– বেশি দামে আমদানি করে আজ কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে সরকারকে।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘কারও কথায় প্রলুব্ধ হবেন না। কারও কথায় নড়চড় হবেন না। তাদের কথা শুনবেন না– যারা গোপালগঞ্জকে বলে গোপালী। এও বলেছে, ক্ষমতায় এলে গোপালগঞ্জের নামও পাল্টে ফেলবে। গোপালগঞ্জ গোপালগঞ্জই আছে। কিন্তু দুর্নীতির দণ্ডে আপনি দণ্ডিত। আপনার ছেলে বিদেশ থেকে রিমোর্ট-কন্ট্রোলে আন্দোলন করছে।’
সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এই অশুভ শক্তি আবার যদি ক্ষমতা পায় তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকর বানাবে। রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানাবে। এ দেশে রাজাকারদের স্বাধীনতা পুরস্কার দেবে। একুশে পদক দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ওরা ক্ষমতায় গেলে নারীদের অবস্থান হবে আফগানিস্তানের মতো। ঘরের কোণে বোরকা পড়ে থাকতে হবে। বাইরে যেতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হবে না। সেকেন্ডারি স্কুলে যাওয়া হবে না। চাকরি হবে না। কারণ বিএনপি যাদের সঙ্গে রাজনীতি করে তারা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়। যেখানে নারীদের কোনও স্বাধীনতা নেই।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে। তারা সাম্প্রদায়িকতার বিশ্বস্ত ঠিকানা। জঙ্গীবাদের বিশ্বস্ত ঠিকানা। তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারে। বাস ও স্কুল পুড়িয়ে ফেলে। বিদ্যুৎ স্টেশন, রেললাইন পুড়িয়ে দেয়। অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা বিএনপিকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না। তারা এ দেশের শত্রু। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের শত্রু। তারা ক্ষমতায় আসতে পারলে আবারও জয় বাংলা, সাতই মার্চ নিষিদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বিজয় দিবস হবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘জনবান্ধব সরকার শেখ হাসিনার সরকার। তিনি মুসলমানদের জন্য উপজেলায় উপজেলায় মডেল মসজিদ করেছেন। এই দৃষ্টান্ত আর কারও নেই। তিনি ফজরের নামাজের পর কুরআন পড়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। গত ৪৮ বছরে তার মতো সৎ নেতা একজনও সৃষ্টি হয়নি।’
আরিয়ানএস/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন