• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

রাজশাহীতে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩, ১১:৫২ পিএম

রাজশাহীতে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী ব্যুরো

দেশের জয়যাত্রা ধরে রাখতে রাজশাহীর জনসভায় নৌকায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ের মাদ্রাসা মাঠে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভোট চান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এ বাংলার মানুষের কথা ভেবেই দেশে এসেছি, পালাতে নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ কিছু পায়। আর বিএনপি তো লুটপাট চালায়। আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। আমরা চাই, আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। দেশকে আমরা উন্নত করতে চাই, তাই দেশের জয়যাত্রা ধরে রাখতে আপনাদের কাছে নৌকায় ভোট চাই।

বিএনপির চরিত্র ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা মানুষ চেনে না। তারা মানুষের জন্য কিছু করতে পারে নাই, তাদের কাজ কী? নিজেরা লুটেপুটে খাওয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বলছে, আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছে। পালায় আপনাদের (বিএনপি) নেতারাই।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জাতির পিতার গড়ে তোলা সংগঠন। এ সংগঠন কখনও পিছুপা হয় না। আমরা বীরদর্পে এগিয়ে যাই। আমরা পালাব না। প্রয়োজনে ঠাকুরগাঁওয়ে ফখরুল সাহেবের বাড়িতে গিয়ে তার ঘাড়ের ওপর বসব। আওয়ামী লীগ সরকার থাকতে দেশের কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবেন না। জনগণের পাশে আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় থাকবে। জনগণও আওয়ামী লীগের পাশে আছে।

৩ ঘণ্টা আগেই আ.লীগের জনসভা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ

বিএনপি-জামায়াত জোট যারা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাস করি, পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না, পিছু হটে না। জিয়াউর রহমান আমাকে বাধা দিয়েছিলেন দেশে আসতে। আমি বাধা অতিক্রম করে দেশে ফিরেছিলাম। আবার ২০০৭ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে, তখনও আমি বিদেশে গিয়েছিলাম, আমার ছেলের বউ অসুস্থ ছিল, তার বাচ্চা হয়েছিল, তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমাকে দেশে ফিরতে দেবে না। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেয়া হয়েছিল। আমি বলেছিলাম যাব, এ কেস মোকাবিলা করব। দেশে ফিরে এসেছি শুধুমাত্র বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই। বিএনপির নেতারা কে? তারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান?। যেই নেতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে ভেগে গিয়েছিল, সেই দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত নেতা আজ বড় বড় কথা বলে। বিএনপি-জামায়াতের পাচার হওয়া ৪০ কোটি টাকা দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানানো হয়। আমি আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি এমন একটি দেশে ফিরে আসি, যেখানে আমার কোনো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। জাতির পিতার খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সে অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তারপর চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশকে উন্নত করতে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়নি। চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে রাজশাহীতে মানুষের ঢল

তিনি আরও বলেন, এ রাজশাহীতে জাতির পিতা স্বাধীনতার পর কলকারখানা করে দেন। এরপর সব বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করতে কাজ করে। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ বাঁধ করে দিয়ে সেই ভাঙন আমরা রোধ করে দেই। এই রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই। এরইমধ্যে রাজশাহীর মানুষের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।

রাজশাহীর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত ১৪ বছরে ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন অবকাঠামো তৈরি করেছি। একটু আগেই আমরা প্রায় ১ হাজার ৩১৬ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। এর মধ্যে ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৬টির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন।’

এর আগে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ।

এর আগে রাজশাহীর সারদায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ ও প্যারেড পরিদর্শন করেন। একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পদক বিতরণ করে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

পরে তিনি সেখান থেকে হেলিকপ্টারে দুপুর আড়াইটায় রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিস মোড়ের মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় উপস্থিত হন। বেলা ৩টা ১০ মিনিটে তিনি জনসভা মঞ্চে ওঠেন। এরপরই তিনি রাজশাহীর ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৬টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

 

সাজেদ/

রাজনীতি সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ