প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩, ১০:২৫ পিএম
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। শের-ই-বাংলা হলের একটি কক্ষে ঢুকে হেলমেট ও মুখোশ পরা দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটায়। এ সময় মহিউদ্দীন আহমেদ ওরফে সিফাত নামের ওই নেতার কক্ষে থাকা তার দু`সঙ্গীকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা।
আজ ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। মহিউদ্দীন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলাকারীরা সংখ্যায় ১৫ থেকে ২০ জন ছিল। তাদের মাথায় হেলমেট এবং মুখে মুখোশ ছিল। সবার হাতে ছিল রড় ও অস্ত্র।
বরিশাল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হামলার পর তারা হলটি পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শের-ই-বাংলা হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ভোর পাঁচটার পরে হলের চারতলায় চিৎকার শুনতে পাই। সেই চিৎকারে আমাদের ঘুম ভাঙে। দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায়,অনেক রুমে বাইরে থেকে ছিটকিনি আটকে দেয়া । এ অবস্থা অন্য সহপাঠীদের জানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তারাও একই কথা বলে। পরে অন্য হলের সহপাঠীদের ফোন করে ডেকে এনে দরজা খুলে নেয়া হয়। সবাই ছুটে গিয়ে চারতলার ৪০১৬ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখি আহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দীন আহমেদ, তাঁর অনুসারী ফাহাদ হোসেন ও জিহাদ আহমেদ পড়ে আছেন। কক্ষের দেয়ালও মেঝেতে রক্তের দাগ। এরপর তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তারা আরো জানান, দুর্বৃত্তরা সংখ্যায় ১৫ থেকে ২০ জন ছিল। সবার মাথায় হেলমেট ও মুখে মুখোশ ছিল। হাতে ছিল রড ও অস্ত্র। এই হামলার পেছনে কারা জড়িত সে ব্যাপারে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
শিক্ষার্থীরা জানান, মহিউদ্দীন আহমেদ ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের অনুসারী কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় রয়েছে। তবে তারা ক্যাম্পাসে নেই।এ পক্ষের নেতৃত্বে আছেন অমিত হাসান ওরফে রক্তিম ও ময়িদুর রহমান ওরফে বাকি। অন্যদিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল গত বছরের ৫ জুলাই । ওই দিন রাত একটার দিকে ক্যাম্পাসে দু`পক্ষের হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় উভয় পক্ষের সাতজন আহত হয়েছিল।
শিক্ষার্থীরা জানান , মহিউদ্দীন আহম্মেদ শের-ই-বাংলা হলের চারতলার ৪০১৬ নম্বর কক্ষটি তার দখলে রেখেছন । তিনি এই হলের নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. খোরশেদ আলম বলেন, বিষয়টি তাঁরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। পুলিশকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করার প্রক্রিয়া চলছে।
কিউ/এসএই