• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মোবাইলে বিজয় কিবোর্ড বাধ্যতামূলক করা ভয়ংকর দুর্নীতি: ফখরুল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩, ০২:৫৮ এএম

মোবাইলে বিজয় কিবোর্ড বাধ্যতামূলক করা ভয়ংকর দুর্নীতি: ফখরুল

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মোবাইল ফোনে বিজয় কিবোর্ড বাধ্যতামূলক ব্যবহারের নির্দেশনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিজয় কিবোর্ড মোবাইল ফোনে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। কারণ এর মালিক মোস্তাফা জব্বার একজন মন্ত্রী। কোনো মন্ত্রীর কোম্পানি সরকারের লাভজনক প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়া- এটা ভয়ংকর দুর্নীতি।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে এ সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, পত্রিকায় দেখলাম লন্ডনে বেশি বাড়ি কিনেছেন বাংলাদেশিরা। এরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের সুবিধাভোগী, লুটেরা। যাদের চপ্পল ছিল না পায়ে, তারা এখন রোডমাস্টার নিয়ে ঘুরে বেড়ান। আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছেন।

এ সময় ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের বিষয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মায়ের কান্না’- এরা কারা? ১৯৭৭ সালে বিমানবাহিনীতে সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় সামরিক আদালতে বিচার হওয়া ঘটনা এগুলো। ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল এখন, কোথায় ছিলেন এতদিন? সশস্ত্র বাহিনীতে বিদ্রোহ হলে সামরিক আদালতে বিচার হওয়া এটা স্বাভাবিক। জিয়াউর রহমানকে ভিলেন বানানোর জন্য এখন এসব কথা বলে লাভ হবে না।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, যেমন করে হোক আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় যেতে চায়। তবে এখন মানুষ জেগে উঠেছে। আমরা দেখেছি মানুষ এই সরকারের পতন দেখতে চায়। আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোনদের রক্ত-অশ্রু বৃথা যাবে না। জেল-জুলুম উপেক্ষা করে বিজয় অর্জন না করে ঘরে ফিরবো না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের মূল ইতিহাস বিকৃত করছে। গণতন্ত্র, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। আজ দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা। গত ১২ বছরে আমাদের ৬০০ জন গুম করেছে, লক্ষাধিক মামলায় ৩৭ লাখের অধিক নেতাকর্মী আসামি।

তিনি বলেন, আমরা আন্দোলনে আছি। আমরা ১০ দফা দিয়েছি, সেখানে প্রথম দফায় এই সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলা আছে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপির জনস্রোত ঠেকানো যাচ্ছে না। বিএনপির এ জোয়ার থামবে না, থামানো যাবে না। বিএনপির সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে’। আমরা কখনো বলিনি যে আমরা নির্বাচনে যাবো না। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি আওয়ামী লীগের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাবো না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করে তারপর নির্বাচনে যাবো।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র সমালোচনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, গ্যাসের দাম ৩২ টাকা করা হয়েছে। ফলে জিনিসপত্রের দাম আরও বেড়ে যাবে। জনগণের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা কখনো বলিনি যে টোকা দিয়ে, ধাক্কা দিয়ে সরকারের পতন ঘটাবো। আমরা বলেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবো।

জিয়াউর রহমানের নাম শুনলে কিছু লোকের গাত্রদাহ শুরু হয় মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, জিয়াউর রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, এই সরকার জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে।

দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমর প্রমুখ।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ