বিশেষ প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে, এটাই বিএনপির গাত্রদাহ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার (২০ জুন) ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১২ বছর আগের ঋণগ্রস্ত বাংলাদেশ আজ ঋণদাতা বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা ও সুদানকে আমরা ঋণ দিয়েছি। বিএনপি এসব দেখতে পায় না। বিশ্ব আজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের দিকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ এক প্রত্যয়ী ও সম্ভাবনাময় দীপ্যমান দেশ। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আজ মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরও বাড়বে, বাড়বে সমৃদ্ধি।’
আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেন ওবায়দুল কাদের। কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই, মাত্র দুই বছর বাকি আছে। দলকে দ্বন্দ্ব-কোন্দলমুক্ত করে সামনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে। পার্টিকে শক্তিশালী করতে হলে প্রয়োজন ইস্পাত কঠিন ঐক্য।
দলের শৃঙ্খলার ব্যাপারে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে সম্মেলন করে নতুন কমিটি দিতে হবে। এরপর জেলা সম্মেলন করতে হবে। পকেট কমিটি করা যাবে না। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ চলছে। প্রয়োজনে ঘরোয়াভাবে সম্মেলন করে কমিটি দিতে হবে।’
পকেট কমিটি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য পকেট কমিটি করা যাবে না। কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে গেলে আওয়ামী লীগ কোণঠাসা হয়ে যাবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, সাম্প্রদায়িক, মাদক ব্যবসায়ী এদেরকে দলে ও কমিটিতে নেয়া যাবে না। দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। এসব ব্যাপারে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশে লুটপাটতন্ত্র চালু করেছিল বিএনপি। হাওয়া ভবনের নামে খাওয়া ভবন চালু করে লুটপাটতন্ত্র চালু করেছিল। কোনো দুর্নীতির বিচার হতো না। কোনো নেতা, কোনো কর্মীকে শাস্তির আওতায় আনা হতো না। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছেন। আমাদের দলের অনেকের সাজা হয়েছে, অনেকে জেলে আছে, দুদক তদন্ত করছে। বিএনপির সময় এটা ভাবাই যেত না।
জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা হচ্ছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বস্তুতপক্ষে আওয়ামী লীগ না, জিয়াউর রহমান তার কর্মেই ইতিহাসের খলনায়ক। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বেনিফিসিয়ারি জিয়াউর রহমান। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশার প্রচলন করেছিল বিএনপি।’
করোনা ভাইরাসের ব্যপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের আবারও বিস্তার ঘটছে। সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। অনেকে থুতনির কাছে মাস্ক পরে থাকেন। এভাবে মাস্ক পরে লাভ কী। লাভ নেই। ভালোভাবে মাস্ক পরতে হবে। করোনা কবে যাবে, সেটা আমরা কেউই বলতে পারছি না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে ভালো থাকা যায় সেটাই সবাইকে করতে হবে।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মান্নান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ।
নির্ঝর/এম. জামান
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন