প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২২, ০২:২৭ এএম
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে সামনে রেখে ফরিদপুরের ৪ থানায় পুলিশের করা ৪ মামলায় বিএনপির ৩৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফরিদপুরের কোতোয়ালি, বোয়ালমারী, সালথা ও সদরপুর থানায় মামলাগুলো দায়ের করে পুলিশ। ৪ মামলায় মোট ৩২৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ২২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার দেখাল পুলিশ
গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিয়া (৫৩), নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান (৫১) ও সহসভাপতি আলীমুজ্জামান (৫৪), বোয়ালমারী পৌর বিএনপির সহসভাপতি আতাউর রহমান খান (৫২), বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সদস্য ফরিদুল ইসলাম (৪৫), দাঁদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক (৫৫) এবং জেলা যুবদলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সিরাজ মৃধা (৫৪)।
সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ জনকে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৬ জন ও অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বোয়ালমারীতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৬০ থেকে ৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৭ জন এবং ১ জন অজ্ঞাতনামা আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সালথা থানায় করা মামলায় এজাহারনামীয় ২৩ জন ও ৪০ থেকে ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এজাহারনামীয় ৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সদরপুরের মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ২১ জনকে। আর অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ জনকে। সেখানে এজাহারনামীয় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সমাবেশ নস্যাৎ করতেই তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে: আফরোজা আব্বাস
চারটি মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতিটি মামলায় বিএনপির জেলা পর্যায়ের আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, যুগ্ম আহ্বায়ক, উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সক্রিয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বোয়ালমারী, সালথা ও সদরপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা করেছে, প্রতিটি মামলার এজাহার একই ধরনের। প্রতিটি এজাহারে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়কে অবরোধ, ককটেল বিস্ফোরণ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে।
পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পুলিশের গুলি ছোড়ার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বিএনপির বিবাদমান দুই পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ গুলি চালায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে ঢাবিতে ছাত্রলীগের অবস্থান–মহড়া
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরিদপুরে মোট চারটি মামলা হয়েছে। নতুন করে আর কোনো মামলা হয়নি। এসব মামলার এজাহারনামীয় ২০ জন ও অজ্ঞাতনামা ১৪ আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল হক বলেন, এগুলো অমানবিক কাজ। ফরিদপুরে চারটি মামলায় শত শত নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপি নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে প্রতি রাতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে এমনটি করত না।
সাজেদ/