প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৪:৫০ এএম
যুবলীগ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড। তাই বিএনপিকে মোকাবিলা করতে আওয়ামী লীগ লাগবে না, যুবলীগই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
হাছান মাহমুদ বলেন, যুবলীগ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড। আওয়ামী লীগ লাগবে না, যুবলীগ একাই বিএনপিকে মোকাবিলা করতে যথেষ্ট। আমরা এখনও মোকাবিলার ঘোষণা দেইনি। আমরা যদি মোকাবিলার ঘোষণা দিয়ে নামি তাহলে তারা পালানোর পথ পাবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুবলীগের নেতাকর্মীদের বলবো—সতর্ক দৃষ্টি রাখেবেন, যখন নির্দেশ আসবে তখনই জনগনকে নিয়ে এই সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, `বিএনপি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। ২০১৩-১৪-১৫ সালে এমন বিশৃঙ্খলা করেছিল যে, গাছও তারা উপড়ে ফেলেছিল। মানুষের ওপর তো বটেই, গাড়ি, গবাদিপশু এমন কি মুরগির ওপরও তারা হামলা চালিয়েছিল। তাতে সরকার পতন হয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেই আন্দোলন, নৈরাজ্য মোকাবিলা করেছে। আমরা জানি কীভাবে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হবে, যখন মোকাবিলা করার প্রয়োজন হবে আমরা থাকবো।`
ড. হাছান তার বক্তৃতার শুরুতেই বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, `আজ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট যখন শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। যখন ৩২ নম্বরে একে একে সবাইকে হত্যা করা হচ্ছিল তখন শেখ রাসেল ৩২ নম্বরের কর্মচারি রমা—যিনি এখনও বেঁচে আছেন, তার হাত ধরে দাঁড়িয়েছিল। শেখ রাসেল যখন বলছে- আমি মায়ের কাছে যাবো, তখন তাকে ছিনিয়ে নিয়ে মায়ের কাছে নেওয়ার কথা বলে ঘাতকরা হত্যা করেছিল।`
তিনি বলেন, `যুবলীগ প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তার সহধর্মিণী বেগম আরজু মনির লাশ যখন মেঝেতে পড়েছিল, ফজলে শামস পরশের বয়স তখন ৫ বছর এবং তাপসের বয়স সাড়ে তিন বছর। পরশ মা-বাবা হারানোর বিষয়টা কিছুটা বুঝতে পারলেও তাপস—যিনি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, মায়ের লাশ ধরে ধরে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে বলছিল- মা, ওঠো ওঠো। মা-বাবা যে তার চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে তা সে বুঝতে পারেনি। সেদিন মানবতার বিরুদ্ধে এত নির্মম অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। আর সেই অপরাধের প্রধান কুশীলব ছিল খন্দকার মুশতাক, আর তার প্রধান সহযোগী ছিল খুনি জিয়াউর রহমান।`
‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিদের বিচার বন্ধ করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হলো যখন—জিয়াউর রহমান প্রধান সেনাপ্রতি, আর জিয়া ক্ষমতা দখল করার পর পার্লামেন্টে প্রথম অধিবেশনে তার নির্দেশে খুনিদের বাঁচাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হলো` বর্ণনা করেন ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, `একজন ডাকাতও যদি খুন হয়, একজন খুনিকেও যদি কেউ খুন করে তারপরও সেটার বিচার হয়। কিন্তু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, যিনি জাতিকে স্লোগান শিখিয়েছেন- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো`, `তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা`, `তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’—যে নেতা হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো বাঙালিকে সেই স্লোগান শিখিয়ে এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে পাঁচ হাজার বছরের বাঙালি জাতির ইতিহাসে বাঙালির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, তার হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না! শেখ রাসেলের হত্যার বিচার হবে না, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের হত্যার বিচার হবে না, শেখ কামাল, শেখ জামালের, তার নববধূ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না! এভাবে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল জিয়াউর রহমান আর আজকে তার তৈরি দল বিএনপি মানবাধিকারের কথা বলে!`
যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি, অতিথি শেখ রাসেলের চাচাতো ভাই শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
জেডআই/