প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৩:২০ এএম
দলের কর্তৃত্ব নিয়ে আরও একবার ভাঙ্গনের মুখে প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা)। দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে এবার পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে এমন গুঞ্জন উঠেছে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন বিরোধী দলীয় নেতা ও পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এমন তথ্য জানিয়েছেন জাপার সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও এরশাদ ট্রাস্টির চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা ও পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ দেশে ফিরলে জিএম কাদের বিরোধীদলের উপনেতার পদে থাকবেন কিনা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, এর আগে একবার জিএম কাদেরকে বিরোধীদলের উপনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও পরে আবার স্থগিত করা হয়। তবে এবার পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক দেশে ফিরলে জিএম কাদের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদের তৈরি করা চিঠিতে জাতীয় সংসদের উপনেতা পদে ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদের নাম প্রস্তাব করেছেন।
এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর রওশনকে বাদ দিয়ে জিএম কাদেরকে বিরোধীদলের নেতা করতে স্পিকারের কাছে চিঠি দেন দলের সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা। আগামী ২৬ নভেম্বর পার্টির কাউন্সিল আহ্বানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একত্র হয়ে এ চিঠি দেন তারা।
জাপার একাধিক নেতা জানান, দলীয় সংসদ সদস্যরা রওশন এরশাদকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে চিঠি দিলেও এ ব্যাপারে অনুমোদন দেয়ার এখতিয়ার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণত সেটি অনুমোদন দেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জিএম কাদেরের দ্বন্দ্ব পুরোনো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দুজনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলের কর্তৃত্ব নিয়ে কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেয়া হয়। আর জিএম কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা করা হয়।
অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গত বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। দল পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ ও সিনিয়র অনেক নেতাকে পদ না দেয়ায় রওশনপন্থিরা আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডেকেছেন।
কাউন্সিল ঘোষণার চিঠিতেও স্বাক্ষর করেন এরশাদপত্নী রওশন। এ নিয়ে দলটির মধ্যে বিভাজন আরও তীব্র হয়, ঘটনা ঘটে বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের।
জেডআই/