প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০২:৫২ এএম
‘জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু। মিলবে ভালো। আওয়ামী লীগ জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করে না। তাহলে কি বলব, ওনাদের পরকীয়া চলছে!’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জামায়াতের সহাকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও কুরুচিপূর্ণ।
নিবন্ধন বাতিল হলেও কেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না সরকার- এ প্রশ্ন তুলে সোমবার হাজারীবাগে বিএনপির সমাবেশে ইকবাল মাহমুদ টুকু বলেন, `আওয়ামী লীগের মুখে প্রায়ই শুনি, বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। সময় এসেছে আওয়ামী-জামায়াত বলার। জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু। মিলবে ভালো। আওয়ামী লীগ জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করে না। তাহলে কি বলব, ওনাদের পরকীয়া চলছে!`
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বক্তব্য স্বৈরাচারী শাসনকে প্রলম্বিত করার ক্ষেত্র তৈরি করবে। যে মুহূর্তে দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বদ্ধপরিকর, সে সময় তাঁর এ বক্তব্য জাতিকে হতাশ করেছে।
১৯৯৯ সাল থেকে বিএনপি-জামায়াত জোটসঙ্গী। সম্প্রতি জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তার দল আর জোটে নেই। গত মাসে এ বক্তব্যের ভিডিও ফাঁস হয়। যদিও বিএনপি ও জামায়াত নেতারা জোট ভাঙ্গার খবর অস্বীকার করে শফিকুর রহমানের বক্তব্যকে অনানুষ্ঠানিক বলেছেন। জামায়াত আমির বিএনপির সঙ্গে জোট নয়, যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলেছিলেন। বিএনপির মহাসচিবও যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলেছেন।
তবে ইকবাল হাসান টুকুর ইঙ্গিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত হয়েছে জামায়াতের। তা নাকচ করে আবদুল হালিম বলেছেন, জামায়াত আপস, গোপন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। গত এক যুগে জামায়াতের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি সরকারি জুলম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যে দলের আমিরসহ পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে; আরও ছয়জন শীর্ষ নেতাকে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেই দলের সম্পর্কে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। তার বক্তব্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করার ইঙ্গিত রয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও বেআইনি ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে তার মর্মবেদনায় প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কার স্বার্থে এবং কাকে সন্তুষ্ট করতে এ বক্তব্য দিয়েছেন।
জেডআই/