প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২, ০৪:২৯ এএম
বিএনপি
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা
হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন
গঠন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের
সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি তেলের
মূল্যবৃদ্ধি ও ভোলায় পুলিশের গুলিতে দুই নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর
উত্তর-দক্ষিণ শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে
ব্যাপক জমায়েত হয়। নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগমের কারণে কার্যালয়ের সামনের সড়ক বন্ধ
হয়ে যায়। ফলে আশপাশের সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সংগ্রাম শুরু
হয়েছে, লড়াই শুরু হয়েছে, যুদ্ধ শুরু
হয়েছে। এ লড়াই বেঁচে থাকার লড়াই, বাংলাদেশকে রক্ষা করার লড়াই। লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজপথ দখল করতে
হবে। এই লড়াইয়ে অবশ্যই আমাদের শরিক হতে হবে, আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, রাজপথ আমাদের দখল
করতে হবে। ’
সমাবেশে যোগদানের
উদ্দেশ্যে নয়াপল্টনে আসার সময় বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বাধা দেওয়া
হয়েছে অভিযোগ করে আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের
মনিটরিংয়ের জন্য কেনা ড্রোন বিএনপির সমাবেশে ওড়াচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল
বলেন, কয়েকদিন আগে
খবরে দেখলাম সরকার ইরান থেকে ২১টি ড্রোন আমদানি করেছে। তারা বলেছে, ভাসানচর
মনিটরিংয়ের জন্য ড্রোন কেনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন, ড্রোন চালানোও
দেখেছেন। কিন্তু সেই ড্রোন এখন বিএনপির সমাবেশের ওপর ওড়ানো হচ্ছে। যারা গণতন্ত্র
চান, তাদের মনিটর করা
হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ড্রোনের নাম
শুনলে আমরা খুব ভয় পাই। কেন ভয় পাই, আমরা দেখি ড্রোন দিয়ে কীভাবে অন্য দেশে গিয়ে
বিভিন্ন নেতাকে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা দেখি, গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করছেন, তাদের ড্রোন দিয়ে
কৌশলে হত্যা করা হচ্ছে।’
দলীয় কর্মসূচিতে ড্রোন
উড়িয়ে মনিটর করার তীব্র সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যখন ড্রোনের দিকে
আমাদের কর্মীরা তাকাচ্ছিলেন, তখন ড্রোন ওড়ানোর সঙ্গে জড়িতদের আমি বলেছি, এটা তো বেআইনি।
তারা আমাকে জানালেন, পাঁচ পাউন্ডের
নিচে ড্রোন চালাতে অনুমতি লাগে না।’
আওয়ামী লীগ অত্যন্ত
সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমি
একমত যারা আওয়ামী লীগকে ফোর টোয়েন্টি পার্টি বলেন। আমি শুধু তাদের সঙ্গে এতটুকু
যোগ করতে চাই, আওয়ামী লীগ
প্রতারকের দল, এ সরকারও
প্রতারকদের সরকার।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত
সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার
মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার সুইস
ব্যাংকের কাছে তথ্য চায়নি। কারণ, যারা টাকা পাচার করেছে তারা আওয়ামী লীগ নেতা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,
‘আমাদের কোনো কথা নেই আমাদের দাবি একটাই- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনাকে
পদত্যাগ করতে হবে, এই সংসদ বাতিল
করতে হবে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ
সরকার দিতে হবে, এই নির্বাচন কমিশন
বাতিল করতে হবে। আমরা যখন রাস্তায় নেমেই গেছি, আমরা দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরে যাব না। ’
ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল
আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ
লুণ্ঠিত। এই দুর্নীতিবাজ সরকারের লুণ্ঠন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা এখন সর্ববৃহৎ
রাজনৈতিক বিএনপির ওপর একটা ঈমানি দায়িত্ব। ’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের
আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হকের
পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান
মাহমুদ টুকু, কেন্দ্রীয় নেতা
আবদুল্লাহ আল নোমান, এ জেড এম জাহিদ
হোসেন, শামসুজ্জামান
দুদু, আহমেদ আজম খান, জয়নাল আবেদীন, আমান উল্লাহ আমান, আফরোজা খান রিতা, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম
হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন
চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
জেডআই/