প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২, ০৭:০৮ এএম
পলাতক বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তার মৃত্যু হয় প্রায় সাড়ে তিনমাস আগে। হারিছ
চৌধুরীর চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে এমনটাই ইঙ্গিত দেন।
গত বছর আগস্টে হারিছ চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি সুস্থও হন।
কিন্ত তার শরীরে করোনা সংক্রমণের প্রভাবে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় আবার তাকে
হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এছাড়াও তিনি আগে থেকেই ব্লাড ক্যান্সারসহ অন্যান্য
জটিলতায় ভুগছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তার মৃত্যু হয়ে গেলেও পরিবারের সদস্যরা
সংবাদটি এত দিন গোপন রেখেছিলেন।
হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী সোমবার (১০ জানুয়ারি) ফেসবুকে
ইঙ্গিতপূর্ণ একটি স্ট্যাটাস দিলে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি অনেকের সন্দেহের
নজরে আসে। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে হারিছের একটি ছবি যুক্ত করে আশিক ক্যাপশনে লিখেন, ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। আশিকের দেয়া হারিছ এর ছবিযুক্ত
ওই স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ‘ইন্না লিল্লাহি ...
রাজিউন’ লিখে মন্তব্য করতে থাকেন।
উল্লেখ্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে
যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট
দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এ ছাড়া
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি
করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০০৭
সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের
কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে আসেন। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল
ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর
অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই
তিনি সরে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯
জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামে করিমগঞ্জ
জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত
করতেন। সূত্র জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যও দেখভাল করতেন ওখানে থেকেই।
হারিছ চৌধুরী স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার।
অর্ণব